একের পর এক ইঙ্গিত দিয়েই যাচ্ছেন নেইমার

নেইমার এখনো ব্যস্ত ব্রাজিলে, নিজের ব্যক্তিগত কাজে। ছবি: রয়টার্স
নেইমার এখনো ব্যস্ত ব্রাজিলে, নিজের ব্যক্তিগত কাজে। ছবি: রয়টার্স
>নেইমার সত্যিই কি বার্সেলোনায় ফিরতে চান? সম্প্রতি তাঁর দুটি কাজ সেই গুঞ্জনকে আরও বাড়িয়েছে। যেখানে বার্সেলোনার সঙ্গে নিজের সম্পর্কের শেকড় এখনো গোপনে লালন করছেন বলেই মনে হয়েছে

এর চেয়ে আর স্পষ্ট করে বলার কিছু থাকে না। নেইমার বার্সেলোনায় ফিরতে চান কি না, এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছুই এখনো বলেননি। তা বলার মতো অবস্থায় তিনি নেইও। তবে চলমান গুঞ্জনকে আরও উসকে দেওয়ার মতো কাজ করেই চলেছেন নেইমার।

কাল নিজের ইনস্টাগ্রামে এক ভিডিও পোস্ট করেছেন। সম্ভবত কোনো বিমানবন্দরে চলতি পথে দেয়ালে নিজের ছবি দেখে নেইমার নিজেই তা মুঠোফোনে ধারণ করেছিলেন। সেই ধারণ করা ভিডিও ক্লিপে দেখা যায় নেইমারের পরনে বার্সেলোনার জার্সি। বিশাল সেই ব্যানারের এক কোণে বাইবেলের কিছু লাইনের পর্তুগিজ অনুবাদ। সময় বিবেচনায় যে লাইনগুলো খুবই তাৎপর্যপূর্ণ।

ক্যারিয়ারের খুবই কঠিন এক সময় পার করছেন নেইমার। ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে মাঠের বাইরে। মাঠে উঠেছে শৃঙ্খলা আর ক্লাবের প্রতি আনুগত্যের অভাবের অভিযোগ। এর মধ্যেই নেইমার পিএসজি ছাড়তে মরিয়া। বাইরে তাঁর সম্পর্কে নানা কানকথা। এই সময়ে নেইমারের পোস্ট করা ভিডিওতে বাইবেলের উদ্ধৃত অংশটুকুর সারমর্ম: ‘এমন কোনো অস্ত্র নেই যা তোমাকে নিরস্ত করবে, আর তোমার বিরুদ্ধে কুৎসা রটাচ্ছে যারা, তাদের তুমি ভুল প্রমাণ করবে।’

নেইমার কি শুধু বাইবেলের উদ্ধৃতির জন্যই ভিডিওটি করেছেন? তা হলে তার পরনের বার্সেলোনার জার্সিটাও বিশেষভাবে তুলে ধরবেন কেন?

ঠিক কার উদ্দেশে এই বার্তা, তা নেইমারের বলেননি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, সমালোচক কিংবা পিএসজির নীতিনির্ধারকদের উদ্দেশে এই তিরটা ছুড়েছেন। পিএসজির অভিযোগ, নেইমার নিজের মাঠের চেয়ে মাঠের বাইরে মনোযোগী ছিলেন বেশি। ‘তারকার দরকার নেই, দরকার ক্লাবের জার্সির জন্য নিজেকে উজাড় করে দেবে এমন খেলোয়াড় দরকার’, পিএসজির মালিক নাসের আল খেলাইফি সরাসরিই বলেছেন কথাটা।

নেইমারের এমন ভিডিও বার্তার পর পিএসজির সঙ্গে সম্পর্ক আরও অবনতি হতে পারে। এমনিতেই নেইমার নির্দিষ্ট সময়ে পিএসজির প্রাক-মৌসুম অনুশীলনে যোগ দেননি বলে খেপে আছে ক্লাবটি। প্রাক-মৌসুম অনুশীলনের বদলে নেইমার এখন ব্যস্ত নিজের দাতব্য সংস্থার কাজে। সেখানে গিয়ে আবার এমন কথা বলেছেন, যেটি পিএসজি শিবিরকে আরও খেপিয়ে দেবে।

নিজের ফুটবল ক্যারিয়ারের সেরা দুটি মুহূর্ত বেছে নিতে গিয়ে জাতীয় দলের হয়ে নেইমার বেছে নিয়েছেন অলিম্পিকে সোনা জেতার মুহূর্তটি। আর ক্লাব ক্যারিয়ারের সেরা মুহূর্ত হিসেবে বেছে নিয়েছেন পিএসজির বিপক্ষে বার্সেলোনার সেই ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তনের ম্যাচের মুহূর্তটি। এমন এক মুহূর্ত বেছেছেন, যেটি তাঁর বর্তমান ক্লাবের জন্য চির হতাশার, চির লজ্জার। এখানেই শেষ হয়। সেই ম্যাচের স্মৃতিচারণ করতে দিয়ে নেইমার এমনভাবে কথা বলেছেন, যেন তিনি বার্সেলোনার কেউ, পিএসজির নন!

নেইমার বলেছেন, ‘যখন আমরা বার্সেলোনার হয়ে পিএসজির বিপক্ষে জিতলাম, এটা ছিল....কী বলব, ম্যাচের পরে সবকিছু যেন পাগলামিতে পেয়ে বসল। আমার মনে হয় এটা আমাদের সবার জন্যই জীবনের সেরা অনুভূতির মুহূর্ত ছিল। প্যারিসের বিপক্ষে আমরা ছয়টা গোল করেছিলাম...সেদিন যে অনুভূতি হয়েছিল সেটা কখনোই হয়নি। এটা ছিল অবিশ্বাস্য।’

নেইমারকে ফেরাতে বার্সেলোনাও সক্রিয় হয়েছে বলে খবর। আর যে প্রক্রিয়ায় বার্সেলোনা এই দলবদলটি করাতে চাইছে, সেটি আবার পছন্দ নয় নেইমারেরই ব্রাজিলিয়ান সতীর্থ ফিলিপে কুতিনহোর। নেইমারকে পেতে বার্সেলোনা যে কুতিনহোকে উৎসর্গ করতে চায়। যে তিন খেলোয়াড়কে পিএসজিকে দিয়ে দিতে চাইছে বার্সা, তার একজন কুতিনহো। কিন্তু কুতিনহোকে এত দ্রুত বিদায় করে দেওয়া হবে না—এমন আশ্বাসই নাকি দেওয়া হয়েছিল। কুতিনহোর এজেন্ট কিয়া জুরাবকিয়ান এ নিয়ে বার্সেলোনাকে বেশ ধুয়েই দিয়েছেন।