নিজেদের ক্রিকেট জাতি বললে, ক্রিকেট শিখতে হবে

শ্রীলঙ্কা সফরের আগে দলের শক্তি দুর্বলতাতেই শুধু আলোচনা থেমে থাকেনি, কথা হয়েছে দেশের ক্রিকেট সংস্কৃতি নিয়েও। ছবি: প্রথম আলো
শ্রীলঙ্কা সফরের আগে দলের শক্তি দুর্বলতাতেই শুধু আলোচনা থেমে থাকেনি, কথা হয়েছে দেশের ক্রিকেট সংস্কৃতি নিয়েও। ছবি: প্রথম আলো

বিশ্বকাপে বাংলাদেশ কেমন করেছে, সেটা নিয়ে অনেক আলোচনাই হয়েছে। যেকোনো বড় টুর্নামেন্ট শেষ হতেই যা হয়, সেটাই হয়েছে। দেশের ক্রিকেটের নানা খুঁত বের হতে শুরু হয়েছে। শ্রীলঙ্কায় ওয়ানডে সিরিজ খেলতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। আপৎকালীন কোচ হয়ে দলের সঙ্গে যাচ্ছেন খালেদ মাহমুদ। খুঁত স্বীকার করে নিতে কোনো আপত্তি নেই দলের ম্যানেজার হয়ে বিশ্বকাপে যাওয়া খালেদ মাহমুদের। তবে তাঁর আশা দেশের ক্রিকেট সংস্কৃতির দোষটাও সবার নজরে আসবে এবার।

বিশ্বকাপে দলের চারজন খেলোয়াড়ই শুধু সমালোচনার ঊর্ধ্ব ছিলেন। বাকি সবার পারফরম্যান্স নিয়ে কাটাছেঁড়া চলছেই। সেই সঙ্গে দল থেকে বাদ পড়ার তালিকায় কাদের থাকা উচিত, সেটা নিয়েও আলোচনা চলছে অনেক। খালেদ মাহমুদ এ ধরনের চিন্তাভাবনা থেকে সবাইকে সরে আসতে বলছেন। অস্ট্রেলিয়ার মতো দলগুলোর সংস্কৃতি টেনে এনেছেন, ‘কেউ ভালো না করলেই তাকে বাদ দেওয়া হয় না। অনেক দিন ধরে পারফর্ম করেই তারা এ পর্যায়ে আসে। অস্ট্রেলিয়া দলেও অনেক পরিবর্তনের পর (২০১৫ বিশ্বকাপ জেতার পর) ভালো করেনি। অনেক কষ্ট করে চার বছর পরে ভালো করেছে। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ায় পুরো দেশ এ নিয়ে ধৈর্য ধরেছে। কিন্তু বাংলাদেশে এক ম্যাচে হেরে গেলেই বা এক সিরিজ হেরে গেলেই সবাই অস্থির হয়ে যায়। কেন বাদ দেওয়া হলো তাকে, কেন আরেকজনকে নেওয়া হলো!’

বিশ্বকাপে গ্যালারি ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব উপস্থিতি ছিল বাংলাদেশের দর্শকদের। খেলা নিয়ে এমন উন্মাদনা দেখানোয় তৃপ্ত মাহমুদ, এখন খেলাটা সম্পর্কে ভালো ধারণাও নেওয়ার পক্ষে সাবেক অধিনায়কের। ক্রিকেটে উন্নতির জন্য সবার কাছ থেকে ধৈর্য আশা করেন মাহমুদ, ‘বিশ্বকাপে দর্শক দেখলে ভারত ম্যাচ ছাড়া আমাদের দর্শকেরই প্রাধান্য ছিল। ওভাবে যদি আমরা নিজেদের ক্রিকেট জাতি বলি, তবে আমাদের ক্রিকেটটাও শেখা উচিত। আমাদের এই ধৈর্য দেখাতে হবে। নতুন কেউ সুযোগ পেলে, তারা ভালো না করলে আলোচনা হয়, তখন নির্বাচকেরা বিপদে পড়ে যান। যেমন এই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেই আফিফ, জাকির সুযোগ পেয়েছিল। একটা ছেলেকে দলে টেনে আবার ছেড়ে দিলে তার জন্য খুব ক্ষতিকর। তাদের দলে আনতে হবে ধৈর্য নিয়ে, তাকে সুযোগও দিতে হবে অনেক। আমরা বলি একরকম, কিন্তু সে রকম করি না।’

বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পারফরম্যান্সের কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন মাহমুদ। তাঁর মতে পয়েন্ট টেবিল যেমনটা বলছে, বাংলাদেশ এর চেয়ে ভালোই করেছে, ‘পাকিস্তানের সঙ্গে ভালো করিনি একদম। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বোলিং ঠিক পরিকল্পনামাফিক হয়নি। ভারতের বিপক্ষে বড় একটা জুটি হলেই হয়ে যেত। ফল বলছে আমরা ৮ নম্বর দল। আবার পাকিস্তান ম্যাচ জিতলেই আমরা ৫ নম্বর দল। আমাদের ছোটখাটো ভুল হয়তো কিছু ছিল। কিন্তু এখান থেকেই আমাদের শিখতে হবে। ক্রিকেট ধৈর্যের খেলা। জাতি হিসেবে আমাদের সেটা দেখাতে হবে।’