এই প্রথমেও রোমাঞ্চ হচ্ছে না তামিমের

এভাবেই সতীর্থদের পথ দেখিয়ে নিয়ে যেতে চান তামিম। ছবি: এএফপি
এভাবেই সতীর্থদের পথ দেখিয়ে নিয়ে যেতে চান তামিম। ছবি: এএফপি
>বাংলাদেশের ১৪তম ওয়ানডে অধিনায়ক হিসেবে তামিম ইকবালের অভিষেক হচ্ছে কাল। হঠাৎই অধিনায়কত্বের ভার এসেছে পড়ে কাঁধে। কতটা কঠিন এই দায়িত্ব, এসব নিয়ে অবশ্য ভাবতে চান না তামিম

১২ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে একটা ‘অভিষেক’ হতে যাচ্ছে তামিম ইকবালের। কাল বাংলাদেশ দলের ১৪তম ওয়ানডে অধিনায়ক হিসেবে অভিষেক হচ্ছে বাঁহাতি ওপেনারের। যদিও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এটিই তাঁর প্রথম অধিনায়কত্ব করা নয়। মুশফিকুর রহিম চোটে পড়ায় ২০১৭ ক্রাইস্টচার্চ টেস্টে বাংলাদেশ দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তামিম। তবে এবার প্রেক্ষাপট ভিন্ন।

২০১৭ সালের জানুয়ারিতে টেস্ট অধিনায়কত্ব করেছিলেন আকস্মিকভাবে, সফরের শেষ দিকে এসে। আর এবার সফরের আগেই জানলেন, তিনি হচ্ছেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক। দায়িত্বটা অবশ্য আপৎকালীন। সাময়িক কিংবা লম্বা সময় যেটিই হোক, অধিনায়কত্ব নিয়ে খুব বেশি ভাবতে চান না তামিম, ‘আসলে সেভাবে চিন্তা করছি না যে অধিনায়ক হিসেবে অভিষেক হবে। এখন শুনে ভালো লাগছে যে অধিনায়ক (ওয়ানডে) হিসেবে অভিষেক হবে। আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো শুরুটা কীভাবে করি।’

জয় দিয়ে শুরু করতে পারলেই কেবল এ নিয়ে আলাদা ভালো লাগা কাজ করবে বলে জানিয়েছেন তামিম, ‘এ বিষয়গুলো তখনই ভালো লাগে যখন দল ভালো খেলে। যদি কাল জিততে পারি বা দল ভালো খেলে তখন অধিনায়ক হিসেবে বিশেষ কিছু মনে হবে। আমি বিশ্বাস করি যে দলের বাকি ১০ জনকেও ভালো খেলতে হবে। একজন অধিনায়ক কেমন, সেটাই প্রমাণ হবে তখন। কী হবে না হবে এতে কিছু যায় আসে না। এই করছি, সেই করছি, অভিষেক হচ্ছে কি না, এগুলো নিয়ে আসলে খুব বেশি রোমাঞ্চিত হই না। এর চেয়ে বরং আমার যেটি কাজ, যে দায়িত্ব সেটি যেন পুরোপুরিভাবে করতে পারি। ক্রিকেট বোর্ড আমাকে একটি দায়িত্ব দিয়েছে। তবে নিশ্চিত যারা খেলবে একাদশে তাদের যথাসাধ্য সাহায্য করব।’

আকস্মিকভাবে পাওয়া অধিনায়কত্ব পেয়ে সেটিতে সফল হওয়া সব সময়ই কঠিন। একেক অধিনায়কের দর্শন-ভাবনা যে একেক রকম। স্বল্প সময়ে হুট করে নিজের ভাবনা বাস্তবায়ন করা সহজ কোনো কাজ নয়। এই স্বল্প সময়ে অধিনায়ক হিসেবে সফল হতে হলে কী করতে হবে, সেটির অনুশীলন তামিম অবশ্য এরই মধ্যে শুরু করে দিয়েছেন।

এই একটা জায়গায় পরিবর্তনটা লক্ষণীয়। এমনিতে তামিম অধিনায়কত্ব উপভোগ করেন না। এমনকি ঘরোয়া ক্রিকেটেও নেতৃত্বভার নিতে চান না। বিপিএলেও নেতৃত্ব দিতে আগ্রহী মনে হয়নি তাঁকে। বিশ্বকাপে প্রত্যাশার প্রতিদান দিতে না পেরে তামিম যখন চাপের মুখে, সেই সময়ই নিজে থেকে এগিয়ে এসে দলের নেতৃত্ব নিয়েছেন। এমন এক দলের ভার সামলাচ্ছেন, যে দলে সাকিব আল হাসান কিংবা মাশরাফি বিন মুর্তজা নেই।

এ কদিনে সতীর্থদের মধ্যে কী বার্তা ছড়িয়ে দিয়েছেন, আজ কলম্বোয় সিরিজ-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে বললেন বাংলাদেশ দলের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক, ‘সিদ্ধান্ত শেষ মুহূর্তে নেওয়া হয়েছে। নিয়মিত অধিনায়ক চোটে পড়েছে সফরের আগের রাতে। গত তিন-চার দিন সুযোগগুলোর সদ্ব্যবহার করতে চেষ্টা করেছি। খেলোয়াড়দের সঙ্গে তাদের ভূমিকা নিয়ে কথা বলেছি এবং দল তাদের কাছ থেকে কী আশা করে বলেছি। একটি ব্যাপার বেশ ভালো, বাংলাদেশ দলে যারা আছে তাদের প্রায় প্রত্যেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অন্তত দুই বছর ধরে খেলছে। এমনকি তরুণেরাও। যারাই দলে থাকবে তারা জানে কেমন ক্রিকেট খেলতে হবে। এটি একটি ইতিবাচক দিক। দিন শেষে তারা সবাই জানে তাদের দায়িত্ব সম্পর্কে। আমরা যখন খেলতে নামব তখন নিশ্চিত করতে হবে যেন সব পরিকল্পনা এবং আমাদের যে স্কিল আছে তা কাজে লাগাতে পারি। একই সঙ্গে আরও ভালো দল হিসেবে আগামীকাল নিজেদের মেলে ধরতে হবে।’