হার না-মানা মুশফিক

দুর্দান্ত ইনিংস খেলেছেন, সেঞ্চুরি থেকে ২ রান দূরে থেকে ফিরেছেন মুশফিক। ছবি: এএফপি
দুর্দান্ত ইনিংস খেলেছেন, সেঞ্চুরি থেকে ২ রান দূরে থেকে ফিরেছেন মুশফিক। ছবি: এএফপি
>সিরিজ বাঁচানোর ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ২৩৯ রানের লক্ষ্য দিয়েছে বাংলাদেশ। মুশফিক অপরাজিত ছিলেন ৯৮ রান।

আজ ম্যাচের ফল কী হবে, ইনিংস বিরতিতে বলার উপায় নেই। তবে ম্যাচটা বড় আফসোস হয়ে থাকবে মুশফিকুর রহিমের জন্য। ব্যাটিং বিপর্যয়ে কী দুর্দান্ত লড়াইটা না করলেন! ইনিংসের শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকলেন। আফসোস তাঁর একটাই, মাত্র ২ রানের জন্য করা হলো না সেঞ্চুরি।

সে একই দৃশ্য, একই সমস্যা। ভালো শুরু এনে দিতে পারেননি দুই ওপেনার। এ ম্যাচেও ব্যর্থ তামিম ইকবাল, ব্যর্থ সৌম্য সরকার। তিনে নামা মোহাম্মদ মিঠুনও পাস করতে পারেননি অগ্নিপরীক্ষায়। নিষ্প্রভ মিডল অর্ডার। প্রেমেদাসায় সিরিজ বাঁচানোর ম্যাচে বাংলাদেশ ভালো স্কোর পাবে কী করে? কিছুই না হওয়ার দিনে আবারও দেখ মিলল সেই লড়াকু মুশফিকের। তাঁর অপরাজিত ৯৮ রানে ভর করেই ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ২৩৮ রান করেছে বাংলাদেশ! ভূমিকা আছে মেহেদী মিরাজের ৪৩ রানের ইনিংসটিরও। সপ্তম উইকেটে দুজন ৮৪ রানের জুটিটা না হলে বাংলাদেশ ২০০ করতে পারত না হয়তো।

উইকেটে দুই বাঁ হাতি ব্যাটসম্যান দেখে শুরুটা অফ স্পিনার ধনঞ্জয়া ডি সিলভাকে দিয়ে করিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কা অধিনায়ক দিমুথ করুণারত্নে। কিন্তু এ স্পিনারকে তাঁর প্রথম স্পেলে হতাশ করেছে বাংলাদেশ। খুশি করেছে পেসারদের। ৩১ রান তুলতেই ফিরেছেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার। দুটি উইকেটই দুই লঙ্কান পেসারের। দলের ৩১ রানের মধ্যে তামিম-সৌম্য ফিরে যাওয়ার পর একে একে ফিরেছেন মোহাম্মদ মিঠুন, মাহমুদউল্লাহ ও সাব্বির রহমান। আউটের মিছিলে যোগ দিয়েছেন মোসাদ্দেক হোসেনও। ১১৭ রান তুলতেই ৬ উইকেট নেই!

বাংলাদেশের ২০০ করা যখন টানাটানি, সপ্তম উইকেটে মুশফিক-মিরাজের পাল্টা লড়াই। ওই জুটি রানও এনে দিয়েছে ওভারে ছয়ের কিছু ওপরে। স্কোরটা আরও বড় হতো যদি প্রদীপের বলে ভুল শট না খেলে মিরাজ আউট হতেন। তবুও মিরাজ ৪৩ রান করে গেছেন, যেটি দলের বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যানরাও পারেননি।

আগের ম্যাচে ৬৭ রান করা মুশফিক এ ম্যাচেও দলের বিপর্যয়ে বুক চিতিয়ে লড়েছেন। তিন অঙ্ক ছুঁতে শেষ ওভারে মুশফিকের দরকার ছিল ৫ রান। মুশফিক করতে পারলেন ৩। অপরাজিত রইলেন ৯৮ রানে। গত বছর এশিয়া কাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৯৯ রানে আউট হয়েছিলেন। ৯৮ রানে আউট হওয়া আরেকটা ইনিংসও আছে। নব্বইয়ের ঘরে এই তিনবার আউট না হলে সেঞ্চুরি সংখ্যা দুই অঙ্কে চলে যেতেই পারত। আজ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সেঞ্চুরির খুব কাছে গিয়েও হলো না! ওয়ানডেতে ৬ হাজার রানের মাইলফলক ছোঁয়ার দিনে সেঞ্চুরিটা হলে আরও দারুণ কিছু হতো।

নবম ওভারেই ব্যাট হাতে নামতে হয়েছিল। উইকেটে দাঁড়িয়ে দেখেছেন, টপ অর্ডারের পর মিডল অর্ডারও কীভাবে ধসে পড়ল। সেখান থেকেই তাঁর ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই। এই লড়াকু ইনিংসে মুশফিক হার মানলেন না। অপরাজিত রইল। এখন তাঁর দলেরও এখান থেকে প্রেরণা নিয়ে বল হাতে লড়াই করার পালা।