যেখানে কোহলির চেয়ে স্মিথ বেশি ভালো

স্টিভ স্মিথ: সৃস্টিসুখের উল্লাসে! ফাইল ছবি
স্টিভ স্মিথ: সৃস্টিসুখের উল্লাসে! ফাইল ছবি

বিরাট কোহলিকে শচীন টেন্ডুলকারের ওপরেও জায়গা দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু মত বদলে ফেলেছেন জাস্টিন ল্যাঙ্গার। বলছেন, তাঁর দেখা সেরা ব্যাটসম্যানের নাম স্টিভ স্মিথ। টেস্ট ক্রিকেট নির্বাসন থেকে ফিরে অ্যাশেজে জোড়া সেঞ্চুরি করেছেন স্মিথ। খাদের কিনারায় চলে যাওয়া দলকে শেষ দুই ব্যাটসম্যান নিয়ে এমন পাল্টা লড়াই করেছেন, সেই ম্যাজিকেই এজবাস্টনে জিতে গেছে অস্ট্রেলিয়া। এত কাছ থেকে স্মিথের এই জোড়া সেঞ্চুরি দেখার পর অস্ট্রেলীয় কোচ মত তো বদলাবেনই।

শুধু রানের পর রান করার জন্যই স্মিথকে বেছে নেননি ল্যাঙ্গার। অস্ট্রেলিয়ার সাবেক এই ওপেনার স্মিথের মানসিক দৃঢ়তা, প্রতিকূল পরিস্থিতি সামলানোর অবিশ্বাস্য দক্ষতা দেখে বলছেন, স্মিথ অন্য ধাতুর, ‘এই গ্রীষ্মেই বলেছিলাম কোহলি আমার দেখা সেরা ব্যাটসম্যান। কিন্তু এটা (স্মিথের দুটি ইনিংস) আসলে অন্য মাত্রার। আসলে এক সময়ে আপনার একেক রকম মনে হবে। যখন উদীয়মান খেলোয়াড় ছিলাম, কত দিন যে স্টিভ ওয়াহর খেলা দেখেছি। উনি রান মেশিন ছিলেন। আমি স্টিভ ওয়াহর মতো হতে চাইতাম। এর পর পান্টারের (রিকি পন্টিং) সঙ্গে যখন খেললাম, তখন ওর মতো হতে চাইতাম। সেও ছিল রান মেশিন। অ্যালান বোর্ডারের সঙ্গে খেলেছি যখন, বোর্ডার হতে চেয়েছি। ভিন্ন ভিন্ন দল, ভিন্ন যুগে একেক রকম গ্রেট আসে। কিন্তু স্মাজ (স্মিথ) ৬০-এর বেশি গড়ে শুধু রান করছে না; এই ইনিংসেই ও কতটা চাপ, কত প্রতিকূলতা নিয়ে খেলল দেখুন। শুধু তো ভালো দক্ষতা নয়; অনেক বেশি চারিত্রিক দৃঢ়তা, শৌর্য-সাহস, অন্য মাত্রার মনঃসংযোগ, অবিশ্বাস্য শারীরিক ও মানসিক শক্তির দরকার হয় এর জন্য। এগুলোই গ্রেটদের বৈশিষ্ট্য।’

এজবাস্টন টেস্টের প্রথম ইনিংসে শেষ দুই জুটিতে ১৬২ রান যোগ করেছেন স্মিথ। এখানেই ম্যাচের চিত্রটাই পুরো পাল্টে গেছে। আর এই দীর্ঘ সময়ে ইংল্যান্ড তাঁকে আউট করতে কী করেনি! অদ্ভুত ফিল্ডিং সাজিয়েও ফায়দা হয়নি। এমনকি ইংল্যান্ডের অস্ট্রেলীয় কোচ ট্রেভর বেলিস স্মিথকে সেই ছোটবেলা থেকে চেনেন। তিনিও ফেল মেরে গেছেন। এসব মনে করিয়ে দিয়ে ল্যাঙ্গার নিজের ‘অসহায়ত্বে’র কথাও বলেছেন। নেটেও যে স্মিথকে আউট করা যায় না!

অথচ এই স্মিথ আদতে ব্যাটসম্যানই ছিলেন না। তিনি ছিলেন লেগ স্পিনার। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের প্রথম দিনে আট-নয়ে ব্যাটিং করতেন। সেই স্মিথ ২৫তম টেস্ট সেঞ্চুরি তুলে নেওয়ার দ্রুততায় কেবল ডন ব্র্যাডম্যানের পেছনে!

এই যে রূপবদল, এটাও তো স্মিথ কোন ধাতুতে গড়া তা বলে দেয়। ল্যাঙ্গার বলছেন, ‘এবেলা সত্যিটাই স্বীকার করি। ও যখন প্রথম এল, একটু অন্য ধরনের লেগস্পিনার হিসেবে, (তখন সবাই ভেবেছিল) এই ছেলেটাকে দিয়ে হবে না। তখন সে নিজেকে নিয়ে ভেবে ঠিক করল, ‘‘না, আমি আর লেগস্পিনার হতে চাই না, আমি হতে চাই বিশ্বের সেরা ব্যাটসম্যান। সেখান থেকে সে নিজেকে বদলে নিয়ে বিরাট কোহলির মতো বিশ্বসেরা বানিয়েছে। এটার জন্য আলাদা কৃতিত্ব ওর পাওনা।’