পর্তুগিজ লেমোস ও আবাহনী জুটি বড় হচ্ছে

আবাহনী লিমিটেডের পর্তুগিজ কোচ মারিও লেমোস। ফাইল ছবি
আবাহনী লিমিটেডের পর্তুগিজ কোচ মারিও লেমোস। ফাইল ছবি
>আগামী মৌসুমেও আবাহনী লিমিটেডের কোচের দায়িত্বে থাকবেন বলে আশাবাদী মারিও লেমোস। নতুন মৌসুম নিয়ে তাঁর সঙ্গে ক্লাবের আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পর্তুগিজ এই কোচ।

আবাহনীর কোনো খেলোয়াড় দল ছেড়ে যাচ্ছেন কি না, আগামী মৌসুমে দেশি-বিদেশি নতুন কোন তারকা ফুটবলার আবাহনীতে যোগ দিচ্ছেন—আপাতত দেশের ফুটবল অঙ্গনে এসব নিয়ে কোনো কথা নেই। কিন্তু সবারই জানার আগ্রহ, আবাহনীর দায়িত্বে পর্তুগিজ কোচ মারিও লেমোস থাকছেন তো?

ভাঙাচোরা আবাহনী দলকে নিয়ে এএফসি কাপে ইতিহাস গড়া সেনাপতি লেমোস। ৩৩ বছর বয়সী পর্তুগিজ কোচের অধীনে প্রথমবারের মতো এএফসি কাপের গ্রুপ পর্বের বাধা পার হয়েছে দেশের ঐতিহ্যবাহী ক্লাবটি। আর সেরা চমকটা আবাহনী দিয়েছে ইন্টার সেমিজোনে ২০১০ বিশ্বকাপ খেলা উত্তর কোরিয়ার এপ্রিল টোয়েন্টি ফাইভকে ৪-৩ গোলে হারিয়ে। যদিও দ্বিতীয় লেগে পিয়ংইয়ংয়ে ২-০ গোলে হেরে আরও বড় ইতিহাস গড়া হয়নি। কিন্তু এ সাফল্যের মূলে আছেন পর্তুগিজ কোচ লেমোসই।
স্বাভাবিকভাবেই লেমোসকে আরও দীর্ঘ সময়ের জন্য পেতে চাচ্ছে আবাহনী। কিন্তু লেমোস কি চাচ্ছেন? সেমিফাইনালের ফিরতি পর্ব খেলে ঢাকায় ফেরার পথে বেইজিংয়ে বসে নিজের ভবিষ্যতের কথা প্রথম আলোকে শোনালেন লেমোস, ‘পরবর্তী মৌসুম নিয়ে ইতিমধ্যে ক্লাবের সঙ্গে আলাপ হয়েছে। আবাহনীর সঙ্গেই থাকছি বলে আশাবাদী। এ ছাড়া এই মৌসুমের মেয়াদও তো এখনো শেষ হয়নি। শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব পর্যন্ত এখনো চুক্তি আছে।’

শেষ মৌসুমে স্বাধীনতা কাপের আগে আবাহনীর দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয় ৩৩ বছর বয়সী লেমোসের হাতে। পর্তুগিজ এই কোচ স্বাধীনতা কাপ ও লিগ শিরোপা জিততে ব্যর্থ হলেও এএফসি কাপে দেখিয়ে দিয়েছেন তাঁর ক্ষুরধার মস্তিষ্ক। পিয়ংইয়ংয়ে এপ্রিলের কাছে হেরে এএফসি কাপে আবাহনীর স্বপ্নযাত্রা থেমে গিয়েছে। কিন্তু থামার আগপর্যন্ত যা করে দেখিয়েছে, তা ক্লাবটির জন্য ইতিহাস। যে আবাহনী এএফসি প্রেসিডেন্টস ও এএফসি কাপে সাতবার খেলে গ্রুপ পর্ব পেরোতে পারেনি, তাদের এবার এএফসি কাপের ইন্টার জোনাল ফাইনালের স্বপ্ন দেখার সাহস দেখিয়েছেন লেমোস।

অথচ এএফসি কাপের শুরু থেকেই আবাহনী দলটা ছোটখাটো হাসপাতাল! শুরুর আগেই চোটে ছিটকে গিয়েছে দলের দুই স্তম্ভ ডিফেন্ডার তপু বর্মণ ও মিডফিল্ডার আতিকুর রহমান ফাহাদ। গ্রুপ পর্বের একটি ম্যাচেও পাওয়া যায়নি ফিটনেস নিয়ে সমস্যায় থাকা চার বিদেশিকে। দ্বিতীয় পর্বে পা রেখে আবাহনী যখন আরও বড় স্বপ্ন দেখছে, তখন হারাতে হয়েছে গ্রুপ পর্বে ৩ গোল করা নায়ক আফগানিস্তানের ডিফেন্ডার মাসি সাইগানিকে।

প্রতিরক্ষাব্যবস্থায় আফগান অভাব পূরণের জন্য আনা হলো মিসরীয় ডিফেন্ডার আলে নাসেরকে। কিন্তু আগে মালদ্বীপের ক্লাবের হয়ে এএফসি কাপের শেষ ম্যাচে কার্ড দেখায় আবাহনীর জার্সিতে মাঠে নামতে পারলেন না তিনি। তাঁর ম্যাচ খেলার খবরটাও এসেছিল ম্যাচের দুই দিন আগে। মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে এল এএফসি কাপে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা মামুনুল ইসলামের চোট। সেমিফাইনালে এপ্রিল টোয়েন্টি ফাইভের মুখোমুখি হওয়ার আগে এমন ভাঙাচোরা দল নিয়ে আবাহনী সমর্থক থেকে শুরু করে ক্লাব কর্তারাও ছিলেন উদ্বিগ্ন। কিন্তু সেই দল নিয়েও উত্তর কোরিয়ার চ্যাম্পিয়ন দলের বিপক্ষে জিতে মাঠ ছেড়েছেন লেমোস। এমন কোচকে তো ধরে রাখতে চাইবেই আকাশি-নীলরা।