১৬ বছরেই বার্সার হয়ে গোল, নতুন ইতিহাস

গোল করে ইতিহাস গড়েছেন আনসু ফাতি। ছবি : টুইটার
গোল করে ইতিহাস গড়েছেন আনসু ফাতি। ছবি : টুইটার
>গতকাল বার্সেলোনার হয়ে হয়ে লা লিগায় সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে গোল করেছে আনসু ফাতি। গোল করার সময় তার বয়স ছিল ১৬ বছর ৩০৪ দিন। বার্সার ইতিহাসের সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতা হলেও লা লিগার ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতা আনসু ফাতি নয়। ইউরোপের শীর্ষ লিগ গুলোতে সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতা হওয়ার রেকর্ড আছে কার কার?

গত ম্যাচে বার্সেলোনার হয়ে সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে অভিষিক্ত হওয়ার পর লিওনেল মেসি জড়িয়ে ধরেছিলেন আনসু ফাতিকে। কানে কানে কী মন্ত্রণা দিয়েছিলেন, কে জানে! যা-ই দিন না কেন, তাতে কাজ হয়েছে বেশ। আর সেই মন্ত্রণা পেয়েই গতকাল লা লিগায় বার্সেলোনার ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতা হিসেবে ইতিহাসের পাতায় নিজের নাম লিখিয়েছে ফাতি। তবে লা লিগার সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতা হওয়ার রেকর্ডটা ভাঙতে পারেনি সে ফাতি।

লা লিগায় সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতার কৃতিত্বটা ক্যামেরুনের উইঙ্গার ফ্যাব্রিস ওলিঙ্গার। ২০১২-১৩ মৌসুমে মালাগার হয়ে সেল্টা ভিগোর বিপক্ষে এক তরুণকে খেলতে নামিয়ে দেন তৎকালীন কোচ ম্যানুয়েল পেলেগ্রিনি। ১৬ বছর ৯৮ দিন বয়সের ফ্যাব্রিস ওলিঙ্গা সে ম্যাচে গোল করে ইতিহাসের পাতায় নিজের নাম লিখে দেন। যদিও পরবর্তীতে গোল করতে কেমন লাগে, সে জিনিসটা এক রকম ভুলেই গেছেন এই তারকা। গত সাত বছরে নিজের প্রতিভার প্রতি তেমন সুবিচার করতে না পারা এই তরুণ মালাগা থেকে বেলজিয়ান ক্লাব জুলটে ওয়েগেরেম ও সাইপ্রিয়ট ক্লাব অ্যাপোলোন লিমাসোল হয়ে এখন খেলছেন আরেক বেলজিয়ান ক্লাব মোসক্রোনে। গত সাত বছরে লিগে গোল করতে পেরেছেন সাকল্যে দুটি। তালিকার দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইকার মুনিয়াইনেরও বলতে গেলে একই দশা। অ্যাথলেটিক বিলবাওয়ের হয়ে ১৬ বছর ২৮৯ দিন বয়সে প্রথম লিগ গোল করা এই স্প্যানিশ তারকা এক সময় লিভারপুল, রিয়াল মাদ্রিদের মতো ক্লাবের নজরে পড়লেও পরে উন্নতি করতে পারেননি।

তালিকায় ওলিঙ্গা আর মুনিয়াইনের পরেই স্থান হয়েছে ফাতির। দেখা যাক, ফাতি কত দূর এগোতে পারেন ক্যারিয়ারে!

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতা হওয়ার রেকর্ড ইংলিশ স্ট্রাইকার জেমস ভনের। ২০০৫ সালে ক্রিস্টাল প্যালেসের বিপক্ষে এক ম্যাচে এভারটনের হয়ে গোল করে এই কৃতিত্ব গড়েন তিনি। তাঁর বয়স ছিল ১৬ বছর ৮ মাস ২৭ দিন। এরপরের কাহিনিটা ওলিঙ্গা আর মুনিয়াইনের মতোই। তবে প্রিমিয়ার লিগের দ্বিতীয় সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতা জেমস মিলনারের কাহিনিটা আবার ভিন্ন। ১৬ বছর ১১ মাস ২২ দিন বয়সে লিডস ইউনাইটেডের হয়ে স্যান্ডারল্যান্ডের বিপক্ষে গোল করা মিলনার এর পর মাঠ মাতিয়েছেন অ্যাস্টন ভিলা, নিউক্যাসল ইউনাইটেড, ম্যানচেস্টার সিটি ও লিভারপুলের হয়ে। সিটির হয়ে জিতেছেন লিগ, লিভারপুলের হয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগ। এখনও লিভারপুলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় তিনি। তালিকার তৃতীয় স্থানে আছেন ইংলিশ তারকা স্ট্রাইকার ওয়েইন রুনি। এভারটনের হয়ে লিগে প্রথম গোলটা করার সময় তাঁর বয়স ছিল মিলনারের চেয়ে তিন দিন বেশি। পরে ইংলিশ লিগে ওয়েইন রুনি এভারটন ও পরে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে কী কী করেছেন, তা বিজ্ঞ পাঠককে না মনে করিয়ে দিলেও হবে!

ইতালিয়ান লিগে রেকর্ডটা সাবেক ইতালিয়ান স্ট্রাইকার আমাদেও আমাদেইয়ের দখলে। এএস রোমার বিখ্যাত এই স্ট্রাইকার রোমের 'অষ্টম রাজা' হিসেবে পরিচিত। ১৯৩৭ সালে লুচেসের বিপক্ষে গোল করে ইতালির সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন তিনি। গোল করার সময় তাঁর বয়স ছিল ১৫ বছর ৯ মাস ১৩ দিন। তালিকার দ্বিতীয় নামটাও এক রোমা কিংবদন্তির। ১৬ বছর ২ মাস ৭ দিন বয়সে রোমার হয়ে গোল করেন তারকা মিডফিল্ডার জিয়ান্নি রিভেরা।

জার্মান বুন্দেসলিগায় রেকর্ডটা তুর্কি মিডফিল্ডার নুরি সাহিনের। ২০০৫ সালে নুর্নবার্গের বিপক্ষে গোল করে বরুশিয়া ডর্টমুন্ডকে জেতান এই তারকা, তখন তাঁর বয়স ছিল ১৭ বছর ২ মাস ২১ দিন।