সাকিবের মতো ধারাবাহিক হতে চায় আফগানরা

সাকিবের ধারাবাহিকতাকেই সমীহ আফগানিস্তান কোচের। ছবি: শামসুল হক
সাকিবের ধারাবাহিকতাকেই সমীহ আফগানিস্তান কোচের। ছবি: শামসুল হক
>আফগানিস্তানের ইংলিশ কোচ অ্যান্ডি মোলস সোজাসাপটাই চট্টগ্রাম টেস্টে নিজেদের ‘আন্ডারডগ’ হিসেবে রাখতে চান। বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে নিয়ে নিজের মুগ্ধতার কথাই জানিয়েছেন তিনি।

অ্যান্ডি মোলস, মানুষটা বেশ রসিক। রসবোধ যেমন, আফগানিস্তানের এই ইংলিশ কোচের মানসিক শক্তিও প্রশংসনীয়। ডায়াবেটিসের রোগী। বাঁ পায়ের তলায় পুঁজ জমেছিল। বাধ্য হয়ে কাল চট্টগ্রামের একটা হাসপাতালে অস্ত্রোপচার করিয়ে পুঁজ বের করতে হয়েছে।

অস্ত্রোপচারের পর আজ বিশ্রাম নিতে পারতেন মোলস। বিশ্রাম নেননি। ক্র্যাচে ভর দিয়েই চলে এসেছেন মাঠে। ব্যান্ডেজ জড়ানো পা নিয়ে তীব্র রোদে জহুর আহমেদ স্টেডিয়ামে ক্যাচ অনুশীলন করিয়েছেন আফগান ক্রিকেটারদের। ক্র্যাচে ভর দিয়ে পরে এসেছেন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে।

খররোদে দাঁড়িয়ে কথা বলতে বলতে আর কঠিন কঠিন প্রশ্নের উত্তর দিতে দিতে মোলসের মুখটা রক্তিম হয়ে উঠছে। তবুও হাসিটা উবে যাচ্ছে না। এক সাংবাদিক যেমন জানতে চাইলেন, বাংলাদেশ দলে সাকিব আল হাসানের মতো বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার আছেন। কতটা ভয় পাচ্ছেন তাঁকে? মোলস উত্তরটা দিলেন বেশ রসিয়ে, ‘আমি তো আর তাঁকে খেলছি না! তাঁকে নিয়ে ভীত নই। তবে এই যে দেখুন আমি এক পায়ে (পা দেখিয়ে) হাঁটছি। আমার মনে হয়ে সে আমাকে দ্রুত আউট করে দেবে।’

মোলসের এ কথায় না হেসে উপায় নেই। তবে সে হাসিটা তিনিই থামিয়ে দিলেন, ‘তাদের দলে বিশ্বমানের খেলোয়াড় আছে। ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলে সাকিব। আমরা সেখানে ধারাবাহিক নই। মাঝে মধ্যে বাজে ক্রিকেট খেলি। আমাদের চ্যালেঞ্জ এটাই, সাকিবের মতো ধারাবাহিক হতে হবে।’

বিনয়ী মোলস অকপটে স্বীকার করে নিচ্ছেন চট্টগ্রাম টেস্ট আফগানিস্তান খেলবে ‘আন্ডারডগ’ হয়ে। তবে তার মানে এই নয়, বাংলাদেশকে ভীষণ ভয় পাচ্ছে আফগানরা। আফগানিস্তান কোচ বরং জানিয়ে রাখলেন ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলাই হবে তাঁদের লক্ষ্য, ‘আমরা বাংলাদেশকে অনেক সমীহ করি। আমাদের ওপরের দল তারা। তবে তাদের ভয় পাচ্ছি। অনেক দিন হলো তারা অসাধারণ খেলে দেশের মাঠে। আমরা অবশ্যই আন্ডারডগ। শীর্ষ দলই বাংলাদেশে এসে হাবুডুবু খেয়েছে। কোনো সন্দেহ নেই এখানে আমাদের স্কিলের কঠিন পরীক্ষা হতে যাচ্ছে। যদি স্কিল কাজে লাগাতে পারি ও মনোযোগ ধরে রাখতে পারি আগামী পাঁচটি দিন বিশেষ কিছু করার সামর্থ্য আমাদের আছে।’

বাংলাদেশ যে চট্টগ্রাম টেস্টে তাদের প্রথাগত শক্তির বাইরে যাবে না, সেটি স্কোয়াড দেখেই বোঝা গেছে। চার বিশেষজ্ঞ স্পিনার নেওয়ার অর্থই হচ্ছে বোলিং বিভাগ সাজানোই হবে স্পিন-আক্রমণে ভর করে। আফগানিস্তান দলে ডান হাতি ব্যাটসম্যানের আধিক্য থাকায় দুই বাঁহাতি স্পিনার খেলা অনেকটাই নিশ্চিত । প্রশ্ন শুধু দুই অফস্পিনারই খেলবে না কি একজন।

আফগানিস্তানের শক্তির জায়গা স্পিন। বিশ্বমানের স্পিন প্রতিপক্ষ দলে, সেটি জেনেও বাংলাদেশ স্পিন আক্রমণে জোর দিচ্ছে—এটি মোটেও অবাক করেনি আফগান কোচকে, ‘ওদের স্পিন আক্রমণ দেখে মোটেও অবাক হইনি। সবশেষ কয়েকটি টেস্টে তাদের দলটা আমি দেখেছি। এটাকে বলে ঘরের মাঠে সুবিধা নেওয়া। বরং এতেই অবাক হতাম যদি তারা শক্তিশালী স্পিন আক্রমণ নিয়ে না খেলত। আমাদেরও স্পিন আক্রমণটা ভালো।’

নিজেদের আন্ডারডগ বললেও মোলস কিন্তু শেষ কথাটায় চ্যালেঞ্জই জানিয়ে রাখলেন বাংলাদেশকে। সাকিব-তাইজুলরা যদি আফগান ব্যাটসম্যানদের পরীক্ষা নেন, রশিদ-কায়েসরাও কথা বলবে চোখে চোখ রেখে।