সাকিবের সঙ্গে একমত রশিদ

‘বন্ধু’ রশিদ কাল থেকে হয়ে যাচ্ছেন সাকিবের ‘শত্রু’। ছবি: শামসুল হক
‘বন্ধু’ রশিদ কাল থেকে হয়ে যাচ্ছেন সাকিবের ‘শত্রু’। ছবি: শামসুল হক
>

চট্টগ্রাম টেস্টে পার্থক্য গড়ে দিতে পারেন কারা, এ প্রশ্নে সাকিব-রশিদ দুজনের ভাবনা এক।

জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ড্রেসিংরুমের সামনে কাল সাকিব আল হাসানকে রশিদ খানের জড়িয়ে ধরার ছবিটা নিশ্চয়ই দেখেছেন। ক্রিকেটীয় সৌজন্য তো আছেই, আইপিএলের দল সানরাইজার্স হায়দরাবাদে খেলেন, দুজন এক অর্থে ‘সতীর্থ’। দুজনের হার্দিক শুভেচ্ছা বিনিময় হওয়াটাই স্বাভাবিক।

আইপিএলে সতীর্থ হতে পারেন, এখন প্রেক্ষাপট ভিন্ন। দুজন আছেন ‘ন্যাশনাল ডিউটি’তে। দুজনই কালে মাঠে নামবেন নিজের দেশকে জেতাতে। সেই লড়াইয়ে স্পিনাররা রাখতে পারেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা—এটাই শোনা যাচ্ছে গত কদিনে। কন্ডিশন-উইকেটের চরিত্র, চট্টগ্রামে অতীত রেকর্ড—এসবই হয়তো এমনটা ভাবতে বাধ্য করছে। বাংলাদেশ দল তাই স্কোয়াডে রেখেছে চার বিশেষজ্ঞ স্পিনার—একাদশে চারজনেরই ঠাঁই মেলার জোর সম্ভাবনা। আফগানিস্তান দলে দুই লেগ স্পিনার, এক ‘চায়নাম্যান’। সঙ্গে যোগ করতে হবে অভিজ্ঞ মোহাম্মদ নবীকেও। লড়াইটা তাহলে দুই দলের স্পিনারদের মধ্যেই হতে যাচ্ছে? যদি সেটাই হয় বাংলাদেশ না আফগানিস্তান, কোন দলের স্পিন আক্রমণ এগিয়ে থাকবে এই টেস্টে?

সাকিব আল হাসান: দেশে আমরা তো ভালোই বোলিং করেছি। আমাদের স্পিনাররা যখনই তাদের পছন্দ মতো উইকেট যখন পেয়েছে, সব সময়ই ভালো করেছে। তবে ওদেরও কোয়ালিটি স্পিনার আছে। আমার মনে হয় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে এখানে দুই দলের ব্যাটিং।

এই হচ্ছে ক্ষুরধার ক্রিকেট মস্তিষ্কের সাকিব! সবাই যখন স্পিন-স্পিন করছে, তখন তিনি ভাবছেন অন্য কিছু। উইকেট যদি স্পিন-সহায়ক ‘মাইনফিল্ড’ হয় সেখানে সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে ব্যাটসম্যানদেরই। এই পিচে ব্যাটসম্যানরা লড়াইয়ের স্কোর না এনে দিতে পারলে বোলাররা লড়বেন কী করে? আফগান অধিনায়ক এক মত সাকিবের সঙ্গে।

রশিদ খান: ঠিক বলেছে। আমরাও এটা ভাবছি। এই কন্ডিশনে ব্যাটসম্যানদের রান করা কঠিনই হবে। যে টিকে থাকতে পারবে, চাপ সামলাতে পারবে, তারাই জিতবে। স্পিনারদের ঠিক জায়গায় বোলিং করতে হবে। ঠিক লেংথে বোলিং করতে পারলে উইকেট পাওয়া সহজ হবে। আগে এখানে স্পিনারদের ম্যাচ হতে দেখেছি। দুই দলেরই তাই ব্যাটসম্যানদের অগ্নিপরীক্ষা। যারা নিয়ন্ত্রণ নিতে পারবে, যারা স্নায়ুর সঙ্গে পেরে উঠবে, ঠিক সময়ে ঠিক কাজটা করবে তারাই জিতবে।

রশিদ বললেন এ ধরনের উইকেটে ব্যাটসম্যানদের অগ্নিপরীক্ষা। সেই পরীক্ষা বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা পারবেন উতরে যেতে? সাকিব আশাবাদী তাঁর ব্যাটসম্যানদের নিয়ে, ‘হ্যাঁ, চ্যালেঞ্জ অবশ্যই থাকবে ব্যাটসম্যানদের। ওদের যারা ফাস্ট বোলার আছে তারাও বেশ ভালো মানের। স্পিনাররা তো খুবই ভালো। স্বাভাবিকভাবেই আমাদের ব্যাটসম্যানদের জন্য অনেক বড় চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। কিন্তু আমি আমার ব্যাটসম্যানদের ওপর পুরোপুরি আস্থা রাখছি। আসলে গত দুই সপ্তাহে যতটা প্রস্তুতি নিয়েছে, এর চেয়ে বেশি কিছু করা যায় না। সবাই যার যার জায়গা থেকে সর্বোচ্চটা দিয়েছে। এখন মাঠে ওই অনুশীলনের প্রতিফলন ফেলতে পারলে আমরা ভালো কিছু করতে পারব।’

কথা এটাই, প্রস্তুতি শেষ। মাঠের সেটির প্রতিফলন ঘটানোর অপেক্ষা।