'আমারই দোষ', বললেন সাকিব

>৭০ মিনিট, ১১১ বল টিকে গেলেই হারের লজ্জা পেতে হয় না। তবুও বাংলাদেশ পারেনি। চট্টগ্রাম টেস্টে বাংলাদেশ আসলে আফগানদের বিপক্ষে পাঁচটা দিনই হেরেছে।

শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে সৌম্য সরকার আউট হয়ে যেতেই পুরো আফগানিস্তান দল যে গর্জনটা দিল, তাতে পুরো সাগরিকাই যেন কেঁপে উঠল। বাংলাদেশের শেষ দুই ব্যাটসম্যান সৌম্য-নাঈম এতটাই হতবিহ্বল, তাঁদের পায়ে যেন শক্তি নেই ড্রেসিংরুমে পর্যন্ত যাওয়ার। নির্বাক দৃষ্টিতে দুজনই ঠায় দাঁড়িয়ে রইলেন উইকেটে।

বারবার বৃষ্টিবাধায় শেষ দিনটা আদৌ হবে কি না, এ সংশয়ে মাঠে দর্শকই আসেনি আজ । ফাঁকা গ্যালারিতে আফগানদের উল্লাস আর বাংলাদেশের নত মাথা—দৃশ্যটা চট্টগ্রাম টেস্টে একবারই হয়েছে, তা নয়। এই দৃশ্য প্রথম দিন থেকে শেষ দিন—ধারাবাহিকভাবে দেখা গেছে। বাংলাদেশ একটা দিনও হাসিমুখে মাঠ ছাড়তে পারেনি। প্রতিটা দিনই তারা পিছিয়ে থেকেছে। বৃষ্টির সহায়তায় সেই দল এই টেস্ট কোনোভাবে ড্র করতে পারলে আফগানিস্তানের সঙ্গে বড় অন্যায় হতো। এটি ভেবেই কিনা শেষ বিকেলে আবহাওয়া হয়ে উঠল খেলার উপযোগী।

এই সময়ে আফগানিস্তানকে নিতে হবে ৪ উইকেট। বাংলাদেশকে টিকতে হবে ৭০ মিনিট আর ১১১ বল। উইকেটে সাকিব-সৌম্য দেখে বাংলাদেশের আশা, সমীকরণটা মিলিয়ে ফেলা যাবে। কিন্তু সাকিব আল হাসান যে নেমেছেন আত্মঘাতী ভাবনায়! বোলার তাঁর উইকেট নিতে চাননি, তবুও তাঁর ‘মরিবার হলো সাধ’! এভাবে আত্মহত্যা, এভাবে দৃষ্টিকটু আউট—এই ম্যাচ বাংলাদেশ ড্র করে কীভাবে?

যে জঘন্য খেলাটা গত পাঁচ দিনে খেলল বাংলাদেশ, যদি ১০০-এর মধ্যে নাম্বার দিতে বলা হয় কত দেবেন সাকিব? ‘জিরো!’ এক শব্দেই পুরো দলের চিত্রটা তুলে ধরলেন অধিনায়ক। ব্যাটিংয়ে শূন্য। বোলিংয়ে শূন্য। পরিকল্পনা-কৌশল—কিছুতেই নাম্বার দেওয়ার মতো কিছুই করতে পারেনি বাংলাদেশ।

এই পারফরম্যান্স বাংলাদেশের দর্শকদের মেনে নেওয়া কঠিন। সাকিবও মানতে পারছেন না। সব দায় নিজের কাঁধেই নিচ্ছেন, ‘ মেনে নেওয়া অবশ্যই কষ্টের। ৪ উইকেট নিয়ে ১ ঘণ্টা ১০ মিনিট টিকে থাকতে হতো। আমি শুধু আমারটাই বলতে পারি। প্রথম বলে আউট হয়ে দলের কাজটা কঠিন করে ফেলেছি। দায়িত্ব আমার কাঁধেই পড়ে। প্রথম বলে কাট শট না খেললেও হতো। না খেলার মতোই বল ছিল। তবুও শট খেলে ফেলেছি। সেখানে দল চাপে পড়ে গেছে। যেহেতু আমি উইকেটে ছিলাম, মূল ভূমিকাটাই পালন করা উচিত ছিল। সেটি করতে পারলে ড্রেসিংরুম আরও স্বচ্ছন্দ থাকত। তাতে ম্যাচটা শেষ পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া যেত, ড্র হওয়ার সম্ভাবনা থাকত।’

সবই যখন বুঝতে পারছেন, অমন আত্মঘাতী শট খেলতে গেলেন কেন সাকিব? বিকেলে ব্যাটিং করতে নেমে ঘাবড়ে গিয়েছিলেন অধিনায়ক, ‘ভাবনাটা ছিল, যখন ১ ঘণ্টা ১০ মিনিট খেলার জন্য এসেছি, আমার তখন নার্ভাসনেস বেশি কাজ করেছে। দুপুরে যখন ব্যাটিংয়ে নেমেছিলাম, তখন ওটা (স্নায়ুচাপ) কাজ করেনি। চাইছিলাম প্রথম বলটা ভালোভাবে সামলাতে। আসলে আমারই দোষ।’