১৬ বছর পর এমন 'ভোঁতা' রিয়াল

রিয়াল আক্রমণভাগের ব্যর্থতা নিশ্চিতভাবেই দুশ্চিন্তায় ফেলবে কোচ জিদানকে। ছবি: এএফপি
রিয়াল আক্রমণভাগের ব্যর্থতা নিশ্চিতভাবেই দুশ্চিন্তায় ফেলবে কোচ জিদানকে। ছবি: এএফপি

পিএসজির আক্রমণভাগে ছিলেন না নেইমার, এডিনসন কাভানি ও কিলিয়ান এমবাপ্পে। কিন্তু রিয়াল মাদ্রিদের আক্রমণভাগে ছিলেন এডেন হ্যাজার্ড, গ্যারেথ বেল ও করিম বেনজেমা। অথচ ম্যাচের স্কোর লাইন—পিএসজি ৩ রিয়াল ০! এমন হারে কোনো অজুহাত চলে না। বরং ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় সাফল্য বিচারে সেরা ক্লাবটির ব্যর্থতাই ঠিকরে চোখে বেঁধে।

‘বিবিএইচ’— বেল, বেনজেমা ও হ্যাজার্ড। আক্রমণভাগের তিন খেলোয়াড়কে ভালোবেসে এ তকমা দিয়েছেন রিয়াল সমর্থকেরা। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, বেল ও বেনজেমা একসঙ্গে খেলার সময় যেমন ‘বিবিসি’ তকমা দেওয়া হয়েছিল। ‘বিবিএইচ’ সেই ‘বিবিসি’কে টপকে যেতে পারবে কি না, তা সময়ই বলে দেবে। কাল পার্ক দেস প্রিন্সেসে রিয়াল মাদ্রিদ একাদশের হয়ে ‘বিবিএইচ’ আক্রমণভাগ একসঙ্গে মাঠে নেমেছিল প্রথমবারের মতো। কিন্তু মাঠ ছাড়তে হয়েছে গোল ছাড়াই। বড় হারের ক্ষত নিয়ে।

সে হারের ক্ষত আর গভীর করেছে ‘অনাকাঙ্ক্ষিত’ এক নজির। কোচ জিনেদিন জিদানের অধীনে চ্যাম্পিয়নস লিগে এটাই সবচেয়ে বড় ব্যবধানের হার রিয়ালের। তবে খেলায় যেহেতু হার-জিত থাকেই, তাই এমন কিছুতে খুব বেশি কষ্ট পাওয়ার কথা না রিয়াল সমর্থকদের। কষ্ট যদি তাঁরা কিছুতে পেয়ে থাকেন সেটি রিয়ালের আক্রমণভাগ যেভাবে খেলেছে সে জন্য। এক বেল ছাড়া বাকিরা প্রায় খোলসবন্দী হয়েই ছিলেন। তাতে দেখা যায়নি চিরায়ত সেই আক্রমণ পিপাসু রিয়ালকে। দেখা যায়নি প্রতিপক্ষের গোলপোস্ট লক্ষ্য করে নেওয়া কোনো শটও! ভুল পড়েননি। পিএসজির গোলপোস্ট লক্ষ্য করে কাল কোনো শট নিতে পারেনি রিয়াল।

আর তাই সাবেক ক্লাবের বিপক্ষে মাঠে অনেকটাই দর্শক হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন পিএসজি গোলরক্ষক কেইলর নাভাস। পরিসংখ্যান বলছে, ম্যাচের ৪৮ শতাংশ সময় বল দখলে রেখেছিল রিয়াল। মোট ৯টি আক্রমণ করেও ফরাসি ক্লাবটির গোলপোস্টে কোনো শট নিতে পারেনি। চ্যাম্পিয়নস লিগে রিয়াল আক্রমণভাগের কাছ থেকে এমন হতাশাজনক পারফরম্যান্স গত এক যুগেও দেখেননি দলটির সমর্থকেরা। একদম খোলাসা করে বললে, ১৬ বছর—হ্যাঁ, ঠিক এতগুলো বছর পর এবারই প্রথমবারের মতো কোনো ম্যাচে প্রতিপক্ষের গোলপোস্টে কোনো শট নিতে পারেনি রিয়াল। সবশেষ এমন দেখা গিয়েছিল ২০০৩-০৪ মৌসুমে। খেলাধুলার পরিসংখ্যান বিশ্লেষণী ওয়েবসাইট ‘অপটা’ জানাচ্ছে ১৬৭ ম্যাচ পর এমন কিছু দেখতে হলো রিয়াল সমর্থকদের।

তবে সমর্থকদের সান্ত্বনা হতে পারে, রিয়ালের বাতিল হওয়া দুটি গোল। বেআইনিভাবে হলেও অন্তত পিএসজির জালে দুবার বল তো পাঠানো গেছে!