তামিমের শূন্যস্থান কি তাঁরা পেরেছেন পূরণ করতে

তামিমের বিকল্প হতে পারেননি কেউই। ছবি: শামসুল হক
তামিমের বিকল্প হতে পারেননি কেউই। ছবি: শামসুল হক

বাংলাদেশ দলের যখন অনুশীলন শেষ, তামিম ইকবাল তখন এলেন মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের নেটে ব্যাটিং করতে। বাংলাদেশ দল খেলছে অথচ তিনি নেই দলে। বাঁহাতি ওপেনার বিশ্রাম নিয়েছিলেন আফগানিস্তানের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্ট ও ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজে। তামিমের বিকল্প হিসেবে যাঁদের দলে অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন নির্বাচকেরা, তাঁরা কতটা আস্থার প্রতিদান দিতে পারলেন টেস্ট ও টি-টোয়েন্টিতে?

টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে সবশেষ ছয় ইনিংসে বাংলাদেশের হয়ে ওপেন করেছেন পাঁচজন। উদ্বোধনী জুটিতে নামা মুশফিকুর রহিম বাদে বাকি চারজনই খাঁটি ওপেনার—সৌম্য সরকার, লিটন দাস, সাদমান ইসলাম ও নাজমুল হোসেন । ১৮ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি ম্যাচটা বাদে একটিতেও শুরু ভালো হয়নি বাংলাদেশের। একজন ওপেনারের কাছ থেকেও আসেনি ফিফটি। ওপেনারদের ব্যর্থতায় আফগানিস্তানের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে বাংলাদেশ দ্রুতই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়েছে। ওপেনারদের ব্যর্থতায় টি-টোয়েন্টি সিরিজে পাওয়ার প্লে ভালোভাবে কাজে লাগাতে পারেনি বাংলাদেশ।

যেকোনো সংস্করণেই বড় স্কোর গড়তে ভালো শুরু পাওয়াটা খুব জরুরি। তবে টি-টোয়েন্টিতে ভালো শুরু পাওয়া অন্য দুই সংস্করণেই তুলনায় একটু কঠিনই। ম্যাচের প্রথম বল থেকেই ঝুঁকি নিতে হয়, উইকেট হারানোর শঙ্কাটাও তাই বেশি। এ ঝুঁকি নিয়েই পাওয়ার প্লে (৬ ওভার) ভালোভাবে কাজে লাগাতে পারলে বড় স্কোর পাওয়া সহজ হয়ে যায়। ত্রিদেশীয় সিরিজে বাংলাদেশের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এখানেই—বেশির ভাগ ম্যাচেই পাওয়ার প্লে কাজে লাগাতে পারেননি সাকিবরা।

নিজেদের প্রথম ম্যাচে পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশ হারিয়ে বসেছে ৪ উইকেট, দ্বিতীয় ম্যাচেও তাই। তৃতীয় ম্যাচে ২ উইকেট, পরেরটিতেও ২ উইকেট। বাংলাদেশ পাওয়ার প্লেতে গড়ে তুলেছে ৩৮.৭৫ রান, হারিয়েছে ৩টি করে উইকেট। প্রথম ৬ ওভার সবচেয়ে ভালো কাজে লাগিয়েছে আফগানিস্তান। গড়ে তুলেছে ৪৯ রান, উইকেট হারিয়েছে ১.২৫টি।

আজ সংবাদ সম্মেলনে আসা বাংলাদেশ কোচ রাসেল ডমিঙ্গো বললেন, ভালো শুরু না হওয়াটাই তাঁকে ভাবাচ্ছে খুব, ‘আমরা প্রথম ১০ ওভারেই ২ কিংবা তারও বেশি উইকেট হারিয়ে ফেলছি। এখন বেশি মনোযোগ দিচ্ছি অন্তত ২ উইকেট হারিয়ে কীভাবে ১৫ ওভারে যাওয়া যায়। এতে শেষ ৫ ওভার খুব ভালোভাবে কাজে লাগানো যায়। এখানে আমরা বেশি মনোযোগ দিচ্ছি।’

২ উইকেট হারিয়ে ১৫ ওভারে যেতে হলে ওপেনারদের তো ভালো করতে হবে। এই সিরিজে যে চারজন ওপেন করেছেন সবাই কম-বেশি ব্যর্থ। ২ ম্যাচে ৪ রান করেছেন সৌম্য। তাঁর জায়গায় সুযোগ পাওয়া নাজমুলও একই পথের পথিক—সমান ম্যাচে করেছেন ১৬ রান। মিরপুরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে আকস্মিক ওপেনিংয়ে নামা মুশফিক ৫ রানের বেশি করতে পারেননি। ব্যর্থদের ভিড়ে কিছুটা সফল লিটন, ৪ ম্যাচে করেছেন ৬১। চট্টগ্রামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তাঁর ২২ বলে ৩৮ রান যদি বাংলাদেশকে দারুণ শুরু এনে দেয়, ওপেনাররা ধারাবাহিক সফল হলে বাংলাদেশের স্কোরটা কত ভালো হতে পারত!

তামিমের জায়গায় যাঁরা সুযোগ পেয়েছিলেন এই সিরিজে রাসেল ডমিঙ্গো কি তাঁদের নিয়ে সন্তুষ্ট? সংবাদ সম্মেলন শেষে ড্রেসিংরুমে ফেরার পথে বাংলাদেশ কোচের কাছ থেকে মিলল দার্শনিক উত্তর, ‘কোচ হিসেবে কখনোই তৃপ্ত হতে পারবেন না। সব সময়ই আরও ভালো কিছু চাইবেন।’

ওপেনাররা যেভাবে খেলছেন, ডমিঙ্গোর চাওয়াটা আপাতত ‘আরও ভালো’ নয়; মোটামুটি হলেও যেন চলে!