ব্রাজিলের দুই তরুণ ভাঙলেন যত রেকর্ড

এই দুই তরুণে ভবিষ্যতের স্বপ্ন আঁকছে রিয়াল মাদ্রিদ ও ব্রাজিল। ছবি: রিয়াল মাদ্রিদ টুইটার
এই দুই তরুণে ভবিষ্যতের স্বপ্ন আঁকছে রিয়াল মাদ্রিদ ও ব্রাজিল। ছবি: রিয়াল মাদ্রিদ টুইটার

১৯ বছরের ভিনিসিয়ুস ও ১৮ বছরের রদ্রিগোর জন্য গতকালের রাতটা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। শুধু এ দুজনের জন্যই নয়, রিয়াল মাদ্রিদের জন্যও। গতকাল ওসাসুনার বিপক্ষে রদ্রিগো ও ভিনিসিয়ুসের গোল যে ইতিহাসেই জায়গা করে নিয়েছে। রিয়ালের হয়ে তরুণ ফুটবলারদের গোল করার রেকর্ড এমনিতেও কম। সেখানে বিশ বছরের নিচে দুজন ফুটবলার একই ম্যাচে গোল করেছেন কাল! এমন কিছু সবশেষ কবে দেখেছে রিয়াল মাদ্রিদ?

রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে এমন কিছু শেষবার যারা করেছেন তাঁরা কিংবদন্তি হয়ে গেছেন ক্লাবে। ১৯৯৬ সালের ১২ মে রিয়াল ভায়াদোলিদের বিপক্ষে ৩-০ ব্যবধানে জিতেছিল রিয়াল। সে ম্যাচে পরের দুটি গোল ছিল ১৮ বছর বয়সী রাউল গঞ্জালেজ ও ১৯ বছর বয়সী গুতি হার্নান্দেজের। দুজনই ক্লাবের ইতিহাসের অংশ হয়ে গেছেন। বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ার শেষে রিয়ালের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেননি তাঁরা। বয়সভিত্তিক দলের দায়িত্ব পালন করেছেন দুজনই। এর আগের সর্বশেষ ঘটনাতেও আছেন রাউল। ১৯৯৫ সালের ২ ডিসেম্বর সেভিয়ার বিপক্ষে বার্নাব্যুতে গোল করেছিলেন দুই ১৮ বছর বয়সী রাউল ও আলভারো বেনিতো। রিয়ালের বয়সভিত্তিক দলের সঙ্গে কদিন আগেও জড়িত ছিলেন বেনিতো।

কাল রদ্রিগো অবশ্য আরেকটি রেকর্ড গড়েছেন। সেটা হলো লা লিগা অভিষেকে রিয়ালের হয়ে সবচেয়ে দ্রুততম গোল। লা লিগায় রিয়ালের হয়ে অভিষেকে দ্রুততম গোলটি ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি রোনালদো লিমার। ২০০২ সালে লা লিগায় দেপোর্তিভো আলাভেসের বিপক্ষে মাঠে নামার ৬২ সেকেন্ডের মাথায় গোল করেছিলেন দুই বিশ্বকাপ বিজয়ী। কিন্তু সেটা রোনালদোর লা লিগা অভিষেক ছিল না। এর আগেই যে বার্সেলোনার হয়ে এক মৌসুম খেলেছেন রোনালদো। এত দিন রিয়ালের হয়ে লা লিগা অভিষেকেই দ্রুততম রেকর্ডটি ছিল ডেভিড বেকহামের।

২০০৩ সালের ৩০ আগস্ট রিয়াল বেতিসের বিপক্ষে মাঠে নামার ১২৪ সেকেন্ডেই গোল পেয়েছিলেন ইংলিশ মিডফিল্ডার। সে রেকর্ডটা কাল নিজের করে নিয়েছেন রদ্রিগো। গোলের দৃশ্যটা স্বপ্নের বলেই মনে হতে পারে। রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে অভিষেকের ম্যাচে প্রথমবারের মতো বল পায়ে নিলেন। ব্রাজিলিয়ান ছন্দের হালকা ড্রিবলিং শেষে ডি-বক্সে ঢুকেই কোনাকুনি শটে গোল। গতকাল অভিষেকের ৯৩ সেকেন্ডেই গোল করেছেন রদ্রিগো। স্বপ্নগুলো তো এমনই হয়।

৭২ মিনিটের এ গোল যদি স্বপ্নপূরণ হয় তবে ৩৬ মিনিটের গোলটি দুঃস্বপ্নের অবসান ঘটিয়েছে। রদ্রিগোর মতোই সাড়া জাগিয়ে রিয়াল মাদ্রিদে এসেছে ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। রদ্রিগোর এক বছর আগে রিয়ালে পা রাখা ভিনিসিয়ুসের মৌসুমের শেষটা ছিল দুঃস্বপ্নের মতো। চ্যাম্পিয়নস লিগে চোট পেয়ে ছিটকে পড়েছিলেন। এ মৌসুমেও দলে থিতু হতে পারছিলেন না না বড় তারকাদের জন্য। সেই কবে ফেব্রুয়ারিতে শেষ গোল। ড্রিবলিং ক্ষমতা দেখাতে গিয়ে গোলের সম্ভাবনা নষ্ট করায় প্রথমবারের মতো রিয়াল সমর্থকদের দুয়োও শুনেছেন কাল। দুয়োধ্বনি থামার আগেই বক্সের বাইরে থেকে বাঁকানো এক শট। বাঁকানো সে শটেই দুঃস্বপ্ন শেষ হলো ভিনির।

রদ্রিগো-ভিনিসিয়ুসে আড়ালে পড়ে গেছেন আরেক ব্রাজিলিয়ান। অথচ কাল ম্যাচ সেরা হয়েছেন ডিফেন্ডার এদের মিলিতাও। এ মৌসুমেই দলে আসা এই ডিফেন্ডার কাল দুর্দান্ত রক্ষণ কাজে মন কেড়ে নিয়েছেন সবার। তাতেই টানা দুই ম্যাচে রিয়ালের গোলমুখে কোনো শট না হওয়ার মতো ঘটনাও দেখা গেছে। ফুটবলের পরিসংখ্যান নিয়ে গবেষণার জন্য বিখ্যাত অ্যাকাউন্ট মিস্টার চিপস জানাচ্ছে, রিয়ালের রক্ষণের এমন অর্জন গত এক দশকে দেখা যায়নি!