বড় বিপদ গেল ইমরুল কায়েসের
>মাঝে দেড় মাসে ক্রিকেট থেকে একেবারেই দূরে সরে গিয়েছিলেন ইমরুল। কী হয়েছিল তাঁর? বাঁ হাতি ওপেনার জানালেন, কঠিন সময়ে গেছে তাঁর
ইমরুল কায়েসের সুযোগ এসেছিল গত মাসে আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট দলে থাকার। কিন্তু বাঁ হাতি ওপেনারের উপায় ছিল না সুযোগটা লুফে নেওয়ার। ইমরুল তখন তাঁর এক বছরের শিশুপুত্র শোয়াইবকে নিয়ে ছোটাছুটি করছেন হাসপাতালে।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টের আগে শুরু হওয়া কন্ডিশনিং ক্যাম্পে ছিলেন ইমরুল। এক দিন অনুশীলন করার পরই জানলেন, ছেলের ডেঙ্গু হয়েছে। অসুস্থ শিশুপুত্রের চিন্তায় তাঁর থাকা হয়নি আফগানদের বিপক্ষে বাংলাদেশ টেস্ট দলে। সপ্তাহখানেকের চিকিৎসা শেষে ডেঙ্গু থেকে সেরে ওঠার স্বস্তি যখন মনে, ইমরুল তখন জানতে পারলেন ছেলে আরও একটি রোগে আক্রান্ত। এই রোগ না সারতেই শরীরে বাসা বাঁধল আরও একটি। কিসের রোগ, কী ধরনের রোগ, বাংলাদেশের চিকিৎসকেরা নাকি কিছুতেই বুঝতে পারছিলেন না তাঁকে। বাধ্য হয়ে ছেলেকে নিয়ে ইমরুল ছুটলেন সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে। সেখানে মাসখানেকের চিকিৎসা শেষে তাঁর ছেলে এখন বেশ সুস্থ।
ছেলে ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছে, ইমরুলের কাছে এটাই আপাতত বড় সুখবর, ‘প্রথমবার সিঙ্গাপুর থেকে আসার পর ভালো হয়ে গেলেও আবার সমস্যা শুরু হয়েছিল। আবার যেতে হলো। এবার চিকিৎসকেরা বলছেন, আশা করি আর হবে না। সে অনুযায়ী ওষুধ দিয়েছে। শুরুতে ডেঙ্গু হয়েছিল। ডেঙ্গু থেকে আরও দুটো রোগ হয়। আমাদের উপমহাদেশে সাধারণত এ ধরনের রোগ হয় না। মালয়েশিয়ার দিকে বেশি হয়। এ কারণেই বাংলাদেশে চিকিৎসকেরা বুঝতে পারছিল না কী রোগ হয়েছে বাচ্চাটার।’
ছেলের চিন্তায় এ কদিনে বেশ শুকিয়ে গেছেন ইমরুল। শরীরের ওজন কমেছে প্রায় পাঁচ কেজি। গত দেড় মাস কতটা ঝড় গেছে তাঁর ওপর দিয়ে, সেটিই আজ বিসিবি একাডেমি ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে বলছিলেন তিনি, ‘মানসিকভাবে ঠিক না থাকলে আসলে শারীরিকভাবে ফিট থাকা যায় না। যার ওপর দিয়ে যায় সে এটা ভালো বোঝে।’
গত নিউজিল্যান্ড সফরের দলে ছিলেন না ইমরুল। সুযোগ মেলেনি পরের সফরগুলোতেও। ঘরের মাঠে আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্টে যাও-বা সম্ভাবনা দেখা গিয়েছিল, ভাগ্যের কাছে হেরে সেটি মিলিয়ে গেল হাওয়ায়। ক্রিকেট থেকে কটা দিন একেবারেই দূরে সরে গিয়েছিলেন। বাঁ হাতি ওপেনার জানালেন, জাতীয় দলে ফেরার তাড়নায় আবারও তৈরি হচ্ছেন তিনি, ‘আশা নিয়েই সবাই সামনে এগিয়ে যায়। আমিও সেই আশা নিয়েই অপেক্ষায় আছি (আবারও সুযোগ পাবেন বাংলাদেশ দলে)। যদি সামনে সুযোগ আসে, অবশ্যই সুযোগ কাজে লাগাতে চেষ্টা করব। মাঝে একটা সুযোগ আসছিল, দুর্ভাগ্য আমার ছেলের অসুস্থতার কারণে খেলতে পারলাম না। তবে সুযোগ শেষ হয়ে যায়নি। সামনে যদি আবার সুযোগ আসে অবশ্যই চেষ্টা করব শতভাগ দেওয়ার।’
বাংলাদেশ দলে সুযোগ পাবেন কিনা, সেটি পরে। আপাতত ইমরুলের লক্ষ্য, রাঙাতে হবে জাতীয় লিগ।