ব্রাজিলের হয়ে '১০০' করতে যাচ্ছেন নেইমার

দেখতে দেখতে ব্রাজিলের হয়ে নিরানব্বইটা ম্যাচ খেলে ফেলেছেন নেইমার। ছবি : এএফপি
দেখতে দেখতে ব্রাজিলের হয়ে নিরানব্বইটা ম্যাচ খেলে ফেলেছেন নেইমার। ছবি : এএফপি
>আজ সেনেগালের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচ খেলতে নামছে ব্রাজিল। এই ম্যাচ খেললেই ব্রাজিলের জার্সিতে শততম ম্যাচ খেলার কৃতিত্ব নিজের করে নেবেন নেইমার।

এই তো সেদিনই না ব্রাজিলের হয়ে প্রথম খেলতে নামলেন নেইমার!

২০১০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচ দিয়ে ব্রাজিলের হয়ে ক্যারিয়ার শুরু করা নেইমারের শততম ম্যাচটা খেলতে যাচ্ছেন আজ, সেনেগালের বিপক্ষে। ম্যাচটা আয়োজন করতে যাচ্ছে সিঙ্গাপুর।

ব্রাজিলের হয়ে নেইমারের সর্বপ্রথম মাঠে নামার প্রেক্ষাপটটা একটু না আলোচনা করলেই নয়। সালটা তখন ২০১০। নিজেদের ষষ্ঠ বিশ্বকাপ জেতার লক্ষ্যে আফ্রিকা পাড়ি দিতে যাচ্ছে ব্রাজিল। কোচ হিসেবে আছেন ১৯৯৪ সালে ব্রাজিলকে বিশ্বকাপ জেতানো অধিনায়ক দুঙ্গা। তখন নেইমার নামের আঠারো বছর বয়সী এক তরুণের তাণ্ডবে কাঁপছে ব্রাজিল। অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপে এমনই ঝলক দেখিয়েছিলেন নেইমার, তাঁকে বিশ্বকাপের দলে দেখার জন্য কোচ দুঙ্গার কাছে ধরনা দিতে লাগলেন খোদ পেলে আর রোমারিওর মতো কিংবদন্তিরা।

কিন্তু অনুরোধে ঢেঁকি গিলে ফেললে তিনি আর দুঙ্গা কেন?

কাকা, রবিনহো, গ্রাফিতে, নিলমার ও লুইস ফাবিয়ানোদের নিয়ে গড়া অভিজ্ঞ আক্রমণভাগের ওপর দুঙ্গার তখন অগাধ আস্থা। আনকোরা কোনো তরুণকে দলে ডেকে এনে দলের রসায়ন নষ্ট করতে চাননি। দুঙ্গার দিক দিয়ে তিনি ঠিকই আছেন। কিন্তু দুঙ্গা এটা বুঝতে ভুল করেছিলেন, যে নেইমার আর দশটা আনকোরা তরুণ খেলোয়াড়ের মতো নন। হয়তো নেইমার থাকলে সে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে ব্রাজিলকে বিদায় নিতে হতো না।

ব্যর্থতার দায়ভার নিয়ে দুঙ্গা সরে দাঁড়ানোর পরেই ব্রাজিলে নেইমার-যুগের সূচনা। আর সে সুযোগটা নেইমারকে করে দিয়েছিলেন পরবর্তী কোচ মানো মেনেজেস।

এরপরের গল্পটা শুধুই উত্থানের। নয় বছর পর এখন যখন শততম ম্যাচ খেলার দ্বারপ্রান্তে নেইমার, ঝুলিতে জ্বলজ্বল করছে ৬১ গোল। ব্রাজিলের ইতিহাসের তৃতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা এই সাতাশ বছর বয়সেই হয়ে গিয়েছেন তিনি। এক গোল বেশি নিয়ে সামনে আছেন কিংবদন্তি রোনালদো, আর পেলেকে ছুঁতে নেইমারকে ব্রাজিলের জার্সি গায়ে করতে হবে আরও ১৬ গোল। ব্রাজিলের জার্সি গায়ে সব সময় যেমন ফর্মে থাকেন, পেলের এই রেকর্ডটা নিজের করে নিতে বেশি দিন সময় নেবেন না হয়তো!

ব্রাজিলের জার্সি গায়ে ব্যক্তিগত অর্জনের পাল্লাটা ভারী হলেও, দলগত অর্জনের ভাঁড়ারটা একটু হলেও অপূর্ণ। ব্রাজিলের যেকোনো প্রধান তারকার সবচেয়ে বড় অর্জন হিসেবে ধরা হয় বিশ্বকাপ জেতা। দুবারের চেষ্টায় সে ট্রফি এখনো জিততে পারেননি নেইমার। নেইমারের অভিষেকের পর ব্রাজিল কোপা আমেরিকা জিতেছে মাত্র একবার, সে দলেও নেইমার ছিলেন না। ২০১৬ সালে অলিম্পিক ফুটবলে সোনা জেতা ও ২০১৩ সালের কনফেডারেশনস কাপ জয় - জাতীয় দলের হয়ে নেইমারের দলগত অর্জন এই দুটিই।

এ উপলক্ষে গতকাল নেইমারকে একটা বিশেষ জার্সি উপহার দিয়েছে ব্রাজিল ফেডারেশন, জার্সির পিছে নেইমারের চিরাচরিত জার্সি নম্বর দশ নয়, বরং ছিল ১০০ নম্বরের উপস্থিতি। জার্সিটা নেইমারের হাতে তুলে দিয়েছেন বিশ্বকাপজয়ী তারকা বেবেতো।

জার্সি পেয়ে আপ্লুত হয়েছেন নেইমার। মিডিয়াকে জানিয়েছেন নিজের অনুভূতি, ‘আমি আমার জাতীয় দল ও ক্লাব - দুই ক্ষেত্রেই অনেক খুশি। এক শ ম্যাচ খেলতে পেরে আমি অনেক আনন্দিত।’