ভারতীয় দর্শকদের ভিড়ে আছেন লাল-সবুজ সমর্থকেরাও

স্বাগতিক দর্শকদের ভিড়ে লাল-সবুজের পাতাকা উঁচিয়ে ধরতে এসেছেন বাংলাদেশের সমর্থকেরাও। ছবি: প্রথম আলো
স্বাগতিক দর্শকদের ভিড়ে লাল-সবুজের পাতাকা উঁচিয়ে ধরতে এসেছেন বাংলাদেশের সমর্থকেরাও। ছবি: প্রথম আলো
>

বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপের যৌথ বাছাইপর্বে কলকাতার যুব ভারতীয় স্টেডিয়ামে ভারতের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময়ে রাত ৮টায়।

‘ইন্ডিয়া , ইন্ডিয়া ... জিতে গা..গা...’ কলকাতার যুব ভারতীয় স্টেডিয়ামে পা রাখার সঙ্গেই স্লোগানটা কানে আসছে। তবে একটু ভালোভাবে লক্ষ্য করলে পাওয়া যায় লাল জার্সি পড়া বাংলাদেশি দর্শকদেরও। গলায় বাংলাদেশের পতাকা ঝুলিয়ে হেলে দুলে স্টেডিয়ামে চত্বরে হেঁটে বেড়াচ্ছে তারা। ঢাকা থেকে আসা বেশ কয়েকজন দর্শকের সঙ্গে কথাও হলো।

এই দর্শকেরা আগেভাগেই অনলাইনে ম্যাচের টিকিট কেটে চলে এসেছেন কলকাতায়। এঁদেরই একজন মোহাম্মাদ সেলিম ঢাকা থেকে কালই কলকাতায় পা রেখেছেন। ভারতের বিপক্ষে জামাল ভূঁইয়ারা হতাশা করবেন না, এটিই তাঁর আশা, ‘শুধু ফুটবল ম্যাচটি দেখার জন্যই কলকাতায় আসা। ভারত স্বাগতিক হলেও বাংলাদেশও খারাপ করবে না। আমরা খুবই আশাবাদী।’

বাংলাদেশের দর্শকেরা যেখানে আশাবাদী, সেখানে জয়ের ছবি এঁকেই মাঠে এসেছেন ভারতীয় দর্শকেরা। মোবাইল টেলিকম ব্যবসায়ী শুভজিৎ দাস এসেছেন জয় নগর থেকে। নিয়মিত মোহনবাগানের খেলা দেখা হলেও ভারতীয় জাতীয় দলের ফুটবল ম্যাচ দেখা এই প্রথম, ‘কলকাতায় জাতীয় দলের খেলা প্রথম দেখতে এলাম। আত্মবিশ্বাসী ভারত জিতবে। সুনীল ছেত্রী হ্যাটট্রিকও করতে পারে। আশা করি বাংলাদেশও ভালো খেলবে।’

কলকাতা এমনিতেই ফুটবলের শহর। উনুনে ঘি ঢেলে দিয়েছে বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ। হালে দুই দলের শক্তির পার্থক্য যতই থাকুক না কেন, কলকাতায় ম্যাচ হওয়াটাই সাধারণ দর্শকদের তাতানোর জন্য যথেষ্ট। এর সঙ্গে আছে ইতিহাস। ৩৪ বছর পর যুব ভারতীতে মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ ও ভারত। কলকাতার মাঠে ভারত জাতীয় দলই খেলছে প্রায় ৯ বছর পর। সব মিলিয়ে ফুটবল-জ্বরে ভুগছে গোটা শহর।

সব মিলিয়ে সুনীল ছেত্রীদের বিপক্ষে জামাল ভূঁইয়াদের দুর্দান্ত এক লড়াই দেখার অপেক্ষায় সবাই। কলকাতার দর্শকদের উন্মাদনাও বলছে জমজমাট এক ম্যাচ হতে চলেছে আজ। ভারতীয় ফুটবল সংস্থার মিডিয়া কর্তা জানালেন এ ম্যাচে ৬৫ হাজার টিকিট ছাপানো হয়েছে। এর মধ্যে সাধারণ দর্শকদের জন্য বরাদ্দ ৪৫ হাজার টিকিট। যার ৩৫ হাজার টিকিট অনলাইনে ৩ ঘণ্টার মধ্যেই শেষ হয়েছে। ২০ হাজার টিকিট ভারতীয় ফুটবল সংস্থার বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠন ও রাজ্য সরকারের জন্য বরাদ্দ। তবে সেখান থেকেও সাধারণ দর্শকদের কিছু টিকিট বুথে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আকাশ সমান চাহিদার সামনে এ ক্ষুদ্র জোগানে কি আর কিছু হয়!

স্বাগতিক দর্শকদের ভিড়ে লাল-সবুজের পাতাকা উঁচিয়ে ধরতে কলকাতায় এসে পৌঁছেছে বাংলাদেশ থেকে কয়েকটি বহর। জয়-পরাজয় ছাপিয়ে ম্যাচটি যেন হয়ে উঠেছে দুই বাংলার সেতুবন্ধন।