ভারতকে হারাতে তামিম-সাকিবকে দরকার বিশ্ব একাদশের

ভারতকে হারাতে তামিম-সাকিবকে বিশ্ব একাদশে রাখছেন স্মিথ ও লক্ষ্মণ। ফাইল ছবি
ভারতকে হারাতে তামিম-সাকিবকে বিশ্ব একাদশে রাখছেন স্মিথ ও লক্ষ্মণ। ফাইল ছবি
ভারতকে তাদের মাটিতে হারাতে হলে স্বপ্নের এক দল বানিয়েই চেষ্টা চালাতে হবে। স্টার স্পোর্টসের ধারাভাষ্যকার ভিভিএস লক্ষ্মণ আর গ্রায়েম স্মিথ সে চেষ্টাই চালালেন।

ভারতের মাটিতে ভারতকে হারানোর স্বপ্ন দেখা বোধ হয় সব দলই ছেড়ে দিয়েছে! নিজেদের মাঠে টানা ১১টি সিরিজ জিতেছে কোহলি-রোহিতরা। ইংল্যান্ড হোক বা অস্ট্রেলিয়া, কেউই পাত্তা পাচ্ছে না ভারতের কাছে। আরেক বড় শক্তি দক্ষিণ আফ্রিকা তো পারলে এখন ভারত ছাড়তে পারলেই বাঁচে— এতটাই অসহায় দেখাচ্ছে তাদের। নির্দিষ্ট কোনো দলে হচ্ছে না, তাই স্বপ্নের এক দল সৃষ্টির কথা ভেবেছেন স্টার স্পোর্টসের ধারাভাষ্যকার গ্রায়েম স্মিথ ও ভিভিএস লক্ষ্মণ। শুধু এ দলের পক্ষেই সম্ভব ভারতে টেস্ট জেতা। সে দলে আছেন সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবাল।

ঘরের মাঠে গত ৩২ ম্যাচে মাত্র একটি টেস্ট হেরেছে ভারত। স্টিভ ও’কিফের ১২ উইকেটের সে স্পেলের পর আরও দুই বছর পার হয়ে গেছে, ভারতকে আর হারানো যায়নি তাদের উঠানে। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে যে রুদ্র রূপে দেখা যাচ্ছে তাদের, সেটাও প্রায় অচিন্তনীয়। প্রথম দুই টেস্ট দাপট দেখিয়ে রাঁচিতেও রান পাহাড় (৪৯৭/৯ ডি.) গড়েছে তারা। এমন প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন ম্যাচ দেখে স্টার স্পোর্টসে বিশ্লেষক হিসেবে নিজেদের সময়টা আরেকটু ভালো কাজে ব্যয় করতে চেয়েছিলেন স্মিথ ও লক্ষ্মণ। এমন এক বিশ্ব একাদশ যারা ভারতের উইকেটে ভারতকে হারানোর ক্ষমতা রাখে।

এই একাদশে প্রত্যাশিতভাবেই সুযোগ মিলেছে বিশ্বের সেরা চার ব্যাটসম্যানের দুজনের। তাসমান প্রতিবেশী কেন উইলিয়ামসন ও স্টিভ স্মিথ দুজনই পেসবান্ধব উইকেটের পাশাপাশি স্পিন উইকেটেও স্বচ্ছন্দ। ২০১৭ সফরেই পুনের স্পিন স্বর্গে যেভাবে খেলেছিলেন স্মিথ, সেটা স্মরণীয় হয়ে থাকবে বহুদিন। উইলিয়ামসনও ভারত ও বাংলাদেশের স্পিন বান্ধব উইকেটে খেলেছেন বেশ বড় কিছু ইনিংস। এ ক্ষেত্রে পিছিয়ে আছেন জো রুট। তাই ইংলিশ অধিনায়কের জায়গা হয়নি এতে।

তিন ও চারে না হয় উইলিয়ামসন ও স্মিথ নামবেন। কিন্তু ভারতে ইনিংস উদ্বোধন করার কঠিন দায়িত্ব নেবেন কারা? এ ক্ষেত্রে দক্ষিণ আফ্রিকার ডিন এলগার ও বাংলাদেশের তামিম ইকবালকেই বেছে নিয়েছেন স্মিথ ও লক্ষণ। চলতি সিরিজে এলগার ভালোই করছেন আর বাংলাদেশের উইকেটে নিয়মিত রান করার দক্ষতাই এগিয়ে দিয়েছে তামিমকে।

এ দলের পাঁচে ব্যাট করবেন পাকিস্তানের বাবর আজম। ক্যারিয়ারে ভারতে কখনো খেলার সুযোগ না হলেও বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে ব্যাট করার দক্ষতা বাবরকে একাদশে জায়গা পাইয়ে দিয়েছে। এ দলের উইকেটরক্ষক হিসেবে ছয়ে থাকবেন কুইন্টন ডিক। স্পিনে ভালো উইকেট রক্ষা করার ক্ষমতা দেখাচ্ছেন, আর ভারতের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে দারুণ এক সেঞ্চুরি এই কন্ডিশনে তাঁর দক্ষতার কথা বলছে। এরপরই এ দলের সবচেয়ে শক্তির জায়গা। দুই অলরাউন্ডার সাকিব ও বেন স্টোকস। বিশ্বের সবচেয়ে পূর্ণাঙ্গ দুই অলরাউন্ডার। একদিকে সাকিবের বাঁ হাতি স্পিন আটকে রাখবে ভারতের ব্যাটিং লাইনআপকে। অন্যদিকে পেস-বাউন্স ও রিভার্স সুইং নিয়ে টানা বল করতে পারেন স্টোকস। ব্যাট হাতেও দুজনের ডাবল সেঞ্চুরি আছে প্রতিপক্ষের মাঠে।

এ দলের বোলিং আক্রমণ সাজানো হচ্ছে প্যাট কামিন্স, জফরা আর্চার ও নাথান লায়নকে দিয়ে। গত অ্যাশেজ সিরিজ যারা দেখেছেন, তারা এই দুই পেসারের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে কোনো প্রশ্ন তুলবেন না। আর ভারতের মাটিতে বিদেশি কোনো স্পিনারের সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড গড়া লায়নকে ছাড়া ভারতের বিপক্ষে স্বপ্নের একাদশ গড়াটা বোকামি।

ভারতের মাটিতে খেলবে এমন বিশ্ব একাদশ: ডিন এলগার, তামিম ইকবাল, কেন উইলিয়ামসন, স্টিভ স্মিথ, বাবর আজম, সাকিব আল হাসান, বেন স্টোকস, কুইন্টন ডি কক (উইকেটরক্ষক), প্যাট কামিন্স, জফরা আর্চার, নাথান লায়ন।