সৌরভই চিনেছিলেন 'ওপেনার শেবাগ'কে

যখন সতীর্থ ছিলেন দুজন। ছবি : এএফপি
যখন সতীর্থ ছিলেন দুজন। ছবি : এএফপি
>ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান ছিলেন বীরেন্দর শেবাগ। ভারতীয় দলে ওপেনার সংকটের সময়ে মিডল অর্ডার থেকে ওপেনিংয়ে চলে আসেন তিনি। বাকিটা তো ইতিহাস। শেবাগ জানিয়েছেন ওপেনার হওয়ার পেছনের গল্পটা।

শচীন টেন্ডুলকার ছাড়া তখন ভারতের ওপেনার হিসেবে কারওর জায়গায়ই পাকা ছিল না এক সময়। মিডল অর্ডারে তখন মাত্রই নিজের পায়ের তলার মাটি শক্ত করা শুরু করেছেন শেবাগ। সে অবস্থায় একদিন শেবাগকে মিডল অর্ডার থেকে এনে ওপেনার বানিয়ে দেওয়া হলো। তিনি নিরাশ করেননি। ভারতের অন্যতম সেরা ওপেনার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন এই মারকুটে ব্যাটসম্যান। কিন্তু তিনি ওপেনার হয়েছিলেন কার সিদ্ধান্তে?

সৌরভ গাঙ্গুলীই ছিলেন শেবাগের ওপেনার হওয়ার নেপথ্যে। তিনি তখন ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক। হালের বিসিসিআই প্রধান, ভারতের ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা অধিনায়কের সিদ্ধান্তেই শেবাগ ওপেনার হয়েছিলেন, ‘আমাকে ওপেনার হওয়ার পেছনে দাদার (সৌরভ) সবচেয়ে বড় ভূমিকা। তিনি একদিন আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, আমি কি ওপেন করতে রাজি আছি? আমার প্রতিক্রিয়া ছিল, আপনিই তো ভালো ওপেন করতে পারেন শচীনের সঙ্গে। তাহলে আপনি আর শচীন কেন ওপেন করছেন না?’

শেবাগ স্বাভাবিকভাবেই দোটানায় ছিলেন। সে সংশয় দূর করেন সৌরভ, ‘এরপর দাদা আমাকে ব্যাখ্যা দিলেন, ওপেনিংয়ে সহজেই শচীনের সঙ্গী হওয়া যাবে। সে জায়গাটা ফাঁকা, শচীনের সঙ্গে ওপেন করতে কে নামবে, সেটা তখনো নির্ধারণ করা হয়নি। আমি ছিলাম তখন মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান। দাদা আমাকে বললেন, আমি যদি ওপেন করতে নামি, মূল একাদশে আমার জায়গা নিশ্চিত হয়ে যাবে। কিন্তু আমি যদি ওপেন না করে মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানই থেকে যাই, তাহলে মূল একাদশে সুযোগ পাওয়ার জন্য মিডল অর্ডারের কারওর চোটে পড়ার অপেক্ষা করতে হবে।’

শেবাগের ওপর ভরসা না রাখলে হয়তো ওপেনার শেবাগকে দেখা যেত না, ‘আমি মূলত তাঁর কথায় রাজি হয়ে যাই একটা কারণে। তিনি আমাকে বলেন, তিনি আমাকে ওপেনার হিসেবে যথেষ্ট সুযোগ দেবেন। টানা তিন-চার ম্যাচ দেখবেন আমাকে ওপেনার হিসেবে। তারপরেও যদি আমি ব্যর্থ হই, তাও তিনি আমাকে বাদ দেবেন না, আমাকে মিডল অর্ডারে খেলাবেন। সব মিলিয়ে আমি দলে নিজের জায়গা সম্পর্কে আশ্বস্ত হই। এরপরেই ওপেনার হওয়ার জন্য রাজি হয়ে যাই। আমার সঙ্গে খুব ভালো ব্যবহার করেছিলেন দাদা। আমার ওপর ভরসা রেখেছিলেন। আর একজন খেলোয়াড়ের ওপর অধিনায়কের ভরসা থাকলে সেটা টনিকের মতো কাজ করে। আমি ভাবলাম, দাদা যেহেতু আমার ওপর এত ভরসা করছেন, একটু চেষ্টা করেই দেখি ওপেনার হিসেবে। আমি আজ খেলোয়াড় হিসেবে যা অর্জন করেছি, সব দাদার জন্যই। আমি ওনার প্রতি কৃতজ্ঞ।’

ভাগ্যিস সৌরভ এমন কিছু ভেবেছিলেন, নয়তো শেবাগের প্রতিভার অনেক কিছুই যে অজানা রয়ে যেত ক্রিকেটপ্রেমীদের।