মাহমুদউল্লাহদের সঙ্গে সাকিব না থেকেও আছেন

সাকিব আল হাসান না থাকায় টি-টোয়েন্টি দলের নেতৃত্বভার পেয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। ছবি: এএফপি
সাকিব আল হাসান না থাকায় টি-টোয়েন্টি দলের নেতৃত্বভার পেয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। ছবি: এএফপি
>

সাকিব-শূন্যতা কীভাবে পূরণ হবে? প্রথম টি-টোয়েন্টির আগে বাংলাদেশ দল নিয়ে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন এটাই। সঙ্গে দুশ্চিন্তা দিল্লির দূষণ নিয়েও।

সাকিব আল হাসানদের আসলে বিকল্প হয় না। হয় না বলেই তাঁদের মতো খেলোয়াড়ের অনুপস্থিতি আরও প্রবল করে দেয় তাঁদের উপস্থিতিকে। তাঁরা না থেকেও থাকেন আরও বেশি করে। এই যেমন দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে কাল বাংলাদেশ দলের অনুশীলনে সাকিব না থেকেও ছিলেন।

বিশ্বের যেকোনো দলের একাদশে সম্ভবত সহজেই সুযোগ পাবেন অলরাউন্ডার সাকিব। হুট করে এমন একজন ক্রিকেটারের শূন্যতা পূরণ করা সম্ভব না। ব্যাট করেন বাংলাদেশ দলের টপ অর্ডারে, আবার প্রতি ম্যাচে তিনিই দলের মূল বোলার। ফিল্ডিংয়ে দুর্দান্ত। দলের নেতাও তিনি। আইসিসির নিষেধাজ্ঞায় পড়ায় এমন একজন ক্রিকেটারকে ছাড়াই ভারত সফরের প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচের ছক আঁকতে হচ্ছে বাংলাদেশের কোচ রাসেল ডমিঙ্গোকে। স্বভাবতই বারবার ঘুরেফিরে আসছে সেই সাকিব প্রসঙ্গ।

কাল বাংলাদেশ দলের অনুশীলন শেষেই যেমন ডমিঙ্গোকে এক ভারতীয় সাংবাদিকের প্রশ্ন, কীভাবে সাকিব-শূন্যতা পূরণ করবেন? দুই শব্দে ডমিঙ্গোর উত্তর, ‘কঠিন কাজ।’ এরপর লম্বা ব্যাখ্যায় বললেন, ‘সাকিবের শূন্যতা অনুভূত হবেই। সে দুর্দান্ত এক ক্রিকেটার। অবশ্যই ওর না থাকা আমাদের জন্য বিশাল ক্ষতি। সাকিব তিনে ব্যাট করে। নতুন বলে বোলিং ওপেন করে। প্রথম বোলার পরিবর্তনের পর বল করে। প্রতি ম্যাচে ৪ ওভার বল করে। দলের সেরা ব্যাটসম্যানদের একজন সে। এখন আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে ওর বদলে আপনি একজন ব্যাটসম্যান নেবেন, নাকি একজন বোলার। কারণ, একই সঙ্গে দুটি পরিবর্তন করা কঠিন কাজ। আর খুব বেশি ক্রিকেটারও নেই যারা দুটিতেই দক্ষ। দেখা যাবে আপনি হয়তো একদিক শক্তিশালী করবেন, আরেক দিকে শক্তি হারাবে।’

জানা গেছে, ব্যাটিং অর্ডারে সাকিবের জায়গায় দেখা যেতে পারে তরুণ আফিফ হোসেনকে। ঢাকায় দুই দলে ভাগ হয়ে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচে তিনে খেলেছেন আফিফ। ব্যাটিং কোচ নিল ম্যাকেঞ্জিও বাড়তি সময় দিয়েছেন আফিফকে। বোলিং আক্রমণ নিয়ে দুশ্চিন্তা বেশি। সাকিবের জায়গায় স্কোয়াডে সুযোগ মিলেছে বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলামের। আছেন আরাফাত সানিও। একাদশে সুযোগ মিলতে পারে দুজনের একজনের। পেসার মোস্তাফিজুর রহমান ও লেগ স্পিনার আমিনুল ইসলামের একাদশে থাকা প্রায় নিশ্চিত। স্কোয়াডের বাকি দুই পেসার আল আমিন হোসেন ও শফিউল ইসলামের যেকোনো একজনকে বেছে নিতে হবে। ৪ বোলারের ১৬ ওভার নিশ্চিত হলেও বাকি ৪ ওভারের জন্য খণ্ডকালীন বোলারের কাছে যেতে হবে মাহমুদউল্লাহকে। তবে ডমিঙ্গো কাল বলছিলেন, সর্বশেষ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে উইকেটের চরিত্র বুঝে। তাঁর কথা, ‘বিষয়টা কন্ডিশনের ওপর নির্ভর করছে। যদি উইকেট ফ্ল্যাট হয়, তাহলে হয়তো বোলিংয়ে শক্তি বাড়াতে হবে। যদি উইকেটে বোলারদের সাহায্য থাকে, তাহলে হয়তো ব্যাটিংয়ে শক্তি বাড়াতে হবে।’

এ ছাড়া সাকিব না থাকায় দলের মানসিক ধাক্কা সামাল দেওয়া কোচের আরেকটি চ্যালেঞ্জ। যে কারণে ডমিঙ্গো বলছেন, ‘সে অনেক বড় ক্রিকেটার। দলের অনেকের খুবই কাছের বন্ধু সে। অবশ্যই ওর না থাকা কিছু ক্রিকেটারকে স্পর্শ করেছে। সে ভুল করেছে এবং সেটার শাস্তি পাচ্ছে। খুব বেশি কিছু এই ব্যাপারে বলতে পারব না। আমাদের নিয়ন্ত্রণেও নেই। বাংলাদেশে গত কয়েক সপ্তাহ বেশ ধকল গেছে।’ তারপরেও আশাবাদী বাংলাদেশ কোচ, ‘মাঝে মাঝে এমন ঘটনাগুলো দলকে একতাবদ্ধ হতে সাহায্য করে। এখানে আসার পর দলের সবাই ভালোভাবে অনুশীলন করছে। ছেলেদের বেশ খুশি লাগছে এবং চনমনে মনে হচ্ছে। এটাই গুরুত্বপূর্ণ।’

সাকিব-শূন্যতা ছাড়াও প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচের আগে আরেকটি দুশ্চিন্তার বিষয় দিল্লির দূষণ। কাল অনুশীলনে বাংলাদেশ দলের বেশির ভাগ ক্রিকেটার ও কোচের মুখে ছিল মাস্ক। পরে কয়েকজন ক্রিকেটার মাস্ক ছাড়া অনুশীলন করলেও মাস্ক খোলেননি ড্যানিয়েল ভেট্টরি, ডমিঙ্গোরা। প্রধান কোচের অভিযোগ, ‘ধোঁয়ার কারণে চোখ জ্বলছে, গলা বসে যাচ্ছে। তবে ভালো দিক হচ্ছে, এখানে কেউ মারা যাচ্ছে না। ধোঁয়ার কারণে আবহাওয়া আদর্শ নয়। কিন্তু দুই দলের জন্যই তো একই পরিস্থিতি। আমাদের অভিযোগ করার কিছু নেই। আমাদের এখানেই খেলতে হবে।’