রোহিত জানালেন কীভাবে ছক্কা মারতে হয়

কাল ঝড় বইয়ে দিয়েছিলেন রোহিত শর্মা। ছবি: এএফপি
কাল ঝড় বইয়ে দিয়েছিলেন রোহিত শর্মা। ছবি: এএফপি
ছক্কা মারতে শুধু পেশিশক্তি না টাইমিংও লাগে, কাল ম্যাচ শেষে বলেছেন রোহিত শর্মা। তাঁর ছক্কা মারার এ টোটকা কাজে লাগাতে পারেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানেরা


টি-টোয়েন্টি চার-ছক্কার খেলা। দ্রুত রান তুলতে এটাই একমাত্র পথ। জাত ব্যাটসম্যানেরা এ পথে হেঁটে থাকেন বাকি দুটি সংস্করণেও। উইকেটে সেট হয়ে গেলে অনেকটাই ইচ্ছেমতোই মারতেই পারেন ছক্কা। কাল দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে তেমন সামর্থ্যই আবার দেখালেন রোহিত শর্মা। ‘ছক্কাবাজ’ রোহিতের ৪৩ বলে ৮৫ রানের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি বাংলাদেশ।

রোহিতকে ছক্কাবাজ এমনিতেই বলা হয় না। কালকের ম্যাচের কথাই ধরুন। বাংলাদেশের ইনিংসে সর্বসাকল্যে ছক্কা যেখানে একটি রোহিত সেখানে একাই মেরেছেন ছয় ছক্কা। এর মধ্যে মোসাদ্দেকের করা দশম ওভারে প্রথম তিন বলে মেরেছেন টানা তিন ছক্কা। বলকে হাওয়ায় ভাসিয়ে সীমানা পার করার এতটা আত্মবিশ্বাস কোথায় পান রোহিত? ম্যাচ শেষে এ প্রশ্নের জবাবে ছক্কা মারার রহস্যটাই ভেদ করলেন ভারতীয় অধিনায়ক।

কোনটা মারতে হবে এবং কোথায় থামতে হবে তা বোঝা জরুরি—রোহিতের কথার এটাই মর্মবাণী। ভারতীয় ওপেনারের ব্যাখ্যা, ‘টানা তিন ছক্কার পর ভেবেছিলাম সবগুলোই মারব। কিন্তু চতুর্থ বলে ব্যর্থ হওয়ার পর সিদ্ধান্ত নেই ১ রান করে নেব।’ আন্দ্রে রাসেলের মতো শুধু পেশিশক্তি নির্ভর ‘পাওয়ার হিটার’ নন রোহিত। ছক্কা মারতে শক্তির চেয়ে টাইমিংয়েই বেশি ভরসা রাখেন তিনি। এর সঙ্গে ক্রিকেটের ‘বেসিক’ কিছু বিষয় তো আছেই। রোহিত সে কথাই ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বুঝিয়ে দিলেন বড় ছক্কা মারতে খুব ভালো শারীরিক গঠন ও পেশিশক্তি না থাকলেও চলে।

স্বাভাবিকভাবেই এখানে বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়দের প্রসঙ্গ উঠে আসে। কাল বাংলাদেশের ইনিংসে সৌম্য সরকার, মোহাম্মদ নাঈম, মুশফিকুর রহিম ও মোসাদ্দেক হোসেনদের ছক্কা মারার চেষ্টা মনে করলেই বিষয়টি পরিষ্কার হয়। সৌম্য ও মুশফিক ছক্কা মারতে গিয়ে ভুল ডেলিভারি বেছে নিয়ে আউট হয়েছেন। আর নাঈম ফিরেছেন টাইমিংয়ে গড়বড় করে। তবে রোহিতের কথা শুনলে সংক্ষিপ্ত সংস্করণে দেশের মাঝারি কিংবা ছোট গড়নের ব্যাটসম্যানেরা ছক্কা মারার টোটকা পেতে পারেন।

রোহিতের ব্যাখ্যা, ‘বড় ছক্কা মারতে খুব ভালো শারীরিক গঠন কিংবা পেশিশক্তি না হলেও চলে। এমনকি চাহালও ছক্কা মারতে পারবে। ছক্কা মারতে শক্তিই একমাত্র প্রয়োজনীয় বিষয় না। টাইমিংয়েরও দরকার আছে। বলটা ব্যাটের মাঝে লাগাতে হবে এবং মাথাটা স্থির থাকতে হবে। ছক্কা মারতে এ বিষয়গুলো নিশ্চিত করলেই চলে।’ সত্যি বলতে রোহিতের কাছে ছক্কা মারা যেন ডাল-ভাত। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এবার সহ আগের দুই বর্ষপঞ্জির পরিসংখ্যান দেখুন—এ তিন বর্ষপঞ্জিতেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি ছক্কা রোহিতের। ২০১৭ সালে মেরেছেন ৬৫ ছক্কা, ২০১৮ সালে ৭৪ আর এ বছর ৬৬ ছক্কা নিয়েও রোহিত সবার ওপরে।

টি-টোয়েন্টিতে (আজ থেকে হিসেব করে) গত দুই বছরে সর্বোচ্চ ছক্কা রোহিতেরই। এ সময় ৩২ ম্যাচে ৫৯ ছক্কা মেরেছেন রোহিত। একই সময়ে বাংলাদেশ দল খেলেছে ২২ ম্যাচ। আর এ ২২ ম্যাচে দলের সবাই মিলে মেরেছেন ৯৮ ছক্কা। বোঝাই যাচ্ছে, এ সংস্করণে ব্যাটিংয়ে সফলতার যে মূলমন্ত্র সেখানে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানেরা বেশ পিছিয়েই আছেন। এ দুই বছরে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি ছক্কা লিটন দাসের (২০)।