'মুশফিক-মাহমুদউল্লাহর আরেকটু আগে নামা উচিত'

মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।ছবি: এএফপি
মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।ছবি: এএফপি

প্রথম ইনিংসের পুনরাবৃত্তিই যেন হতে চলেছে ইন্দোরে। ভারতীয় বোলারদের সামনে দাঁড়াতেই পারছেন না বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। লাঞ্চের আগে ৬০ রানেই বাংলাদেশ হারিয়ে ফেলেছে ৪ উইকেট। এ ইনিংসেও দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ দুই ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ নেমেছেন পাঁচ ও ছয় নম্বর ব্যাটিং পজিশনে।

ভারতীয় দলের সাবেক ওপেনার ওয়াসিম জাফরের প্রশ্ন এখানেই। বাংলাদেশ দলের সেরা দুই ব্যাটসম্যান যখন নামছেন, দল তখন ব্যাটিং বিপর্যয়ে। ভারতের ঘরোয়া ক্রিকেটের অন্যতম সফল ব্যাটসম্যান ওয়াসিম মনে করেন দুজনের নামা উচিত আরেকটু আগে, ‘মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের মতো অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানের অন্তত পাঁচে ব্যাটিং করা উচিত। মোহাম্মদ মিঠুন (এ টেস্টে যিনি নেমেছেন চারে) ছয়ে নামতে পারে। মুমিনুল তিনে, মুশি (মুশফিক) চারে, রিয়াদ পাঁচে—এটা খুব ভালো ব্যাটিং লাইনআপ। সাকিব-তামিম যেহেতু নেই, সিনিয়রদের দায়িত্ব নিতে হবে। এ দলে সবচেয়ে সিনিয়র হচ্ছেন মুশফিক-রিয়াদ। তাদেরই সবচেয়ে বেশি দায়িত্ব নিতে হবে, আরেকটু আগে নামতে হবে।’

>

দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ দুই ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ নেমেছেন পাঁচ ও ছয় নম্বর ব্যাটিং পজিশনে। ভারতীয় দলের সাবেক ওপেনার ওয়াসিম জাফর মনে করেন দুজনেরই আরেকটু আগে নামা উচিত

কাল বিকেলে যখন মুঠোফোনে কথা হচ্ছিল ওয়াসিমের সঙ্গে, তিনি তখন মুম্বাইয়ে। টিভিতে দেখছেন ইন্দোর টেস্ট। ওয়াসিম মনে করেন, প্রথম ইনিংসেই বাংলাদেশের অন্তত ২৫০-৩০০ রান করা উচিত ছিল। ইন্দোর টেস্ট কোন দিকে যাচ্ছে, প্রথম দিনেই সেটি অনেকটা পরিষ্কার হয়ে গেছে। অনেকে অবশ্য টস জিতে মুমিনুল হকের ব্যাটিং নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তবে রবিচন্দ্রন অশ্বিন বলেছেন, বাংলাদেশ সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ওয়াসিমও প্রায় একই কথা বললেন, ‘মুমিনুল খুব সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। যখন আপনি দুই পেসার নিয়ে খেলবেন, টস জিতে আপনার আগে ব্যাটিং করা ছাড়া উপায় থাকে না। দলে যদি তিন-চার পেসার থাকে তাহলে না হয় আগে বোলিং করা যেতে পারে। অনেক বড় সিদ্ধান্ত ছিল তার জন্য। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা অনেক বাজে শট খেলে আউট হয়েছে। তারা ভারতীয় বোলারদের উইকেট উপহার দিয়ে এসেছে। ভারতীয় বোলাররা বোলিংও দুর্দান্ত করছে, সন্দেহ নেই। তবে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা যেভাবে উইকেট দিয়ে এসেছেন, এটা ১৫০ রানের উইকেট ছিল না।’

দ্বিতীয় ইনিংসেও সেই একই ছবি দেখা যাচ্ছে। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা আসছেন-যাচ্ছেন। মুশফিকদের প্রতি ওয়াসিমের পরামর্শ, ‘দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের জন্য কঠিনই হয়ে যাবে। তবে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে সহজে উইকেট দেওয়া যাবে না। বোলাররা যেন কষ্ট করে উইকেট নেয়। ৩০-৩৫ বল খেলার পর উইকেট ছুড়ে দিতে নেই।’

ভারতের সাবেক ওপেনার ওয়াসিম জাফর। ছবি: এএফপি
ভারতের সাবেক ওপেনার ওয়াসিম জাফর। ছবি: এএফপি

মুশফিক-মাহমুদউল্লাহরা সেটি করতে পেরেছেন কিনা, ওয়াসিম জাফর নিশ্চয়ই দেখছেন। তবে ইন্দোর টেস্টে যেভাবে নাকানি-চুবানি খাচ্ছে বাংলাদেশ, কলকাতায় টেস্টে কি আদৌ কোনো আশা আছে? কেউ কেউ বলছেন, ইডেনে দুই দলের জন্য সমান সুযোগ থাকবে। বাংলাদেশ-ভারত কোনো দলই গোলাপি বলে দিবারাত্রির টেস্ট কখনো খেলেনি। যেহেতু দুই দলই টেস্ট ক্রিকেটের নতুন পর্ব শুরু করতে যাচ্ছে, রোমাঞ্চকর এক টেস্টই হবে।

বর্তমানে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) গেম ডেভেলপমেন্ট বিভাগের সঙ্গে যুক্ত ওয়াসিম তা মনে করেন না। তাঁর মতে, দিবারাত্রির টেস্ট দুই দলের জন্য প্রথম হলেও বাংলাদেশ ভীষণ চাপে থেকেই কলকাতায় খেলতে নামবে, ‘সিরিজে যখন ১-০ ব্যবধানে পিছিয়ে থাকবেন তখন এমনি চাপ থাকবে। ভারত খুবই শক্তিশালী দল। এ মুহূর্তে তাদের দুর্বলতা খুব কম। দুর্দান্ত ব্যাটিং লাইনআপ, দুর্দান্ত সব পেসার, স্পিনার আছে। যখন এমন শক্তিশালী দলের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে নামবেন আপনাকে আপনার সেরাটা দিতেই হবে, যেটা এখন বাংলাদেশ দলের প্রয়োজন।’

প্রশ্ন এখানেই, টি-টোয়েন্টিতে তাদের সেরাটা বেরিয়ে এলেও টেস্টে কেন হতশ্রী দশা!