আর্চারকে বর্ণবাদী গালি দিয়েছেন এক ইংলিশ

ম্যাচের শেষ দিনে বর্ণবাদী গালি খেয়েছেন আর্চার। ছবি : এএফপি
ম্যাচের শেষ দিনে বর্ণবাদী গালি খেয়েছেন আর্চার। ছবি : এএফপি
>নিউজিল্যান্ড-ইংল্যান্ড টেস্টের শেষ দিনে বর্ণবাদী আচরণের শিকার হন ইংল্যান্ডের পেসার জফরা আর্চার। নিউজিল্যান্ডের কোনো সমর্থক আর্চারকে বর্ণবাদী গালি দিয়েছে বলে মনে করা হলেও, এখন শোনা যাচ্ছে, ইংল্যান্ডের এক সমর্থকই বারবার আর্চারের গায়ের রং নিয়ে বিদ্রূপ করছিলেন

মাউন্ট মঙ্গানুইতে প্রথম টেস্টে ইংল্যান্ডকে ইনিংস ও ৬৫ রানে হারিয়েছে নিউজিল্যান্ড। ম্যাচের শেষ দিনে নিউজিল্যান্ড সমর্থকদের বর্ণবাদী আচরণের শিকার হয়েছেন ইংলিশ পেসার জফরা আর্চার—শোনা গিয়েছিল এমন কথাই। ব্যাপারটা নিয়ে তোলপাড় চলছে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটে। এরপর থেকেই তোলপাড় চলছে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটে। নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের (এনজেডসি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ডেভিড হোয়াইট জানিয়েছেন, যে দর্শক এমন আচরণ করেছেন তাকে আজীবনের জন্য ক্রিকেট মাঠ থেকে বহিষ্কার করা হতে পারে। কিন্তু তদন্তের মধ্যেই বেরিয়ে এসেছে অবাক করা এক তথ্য— কোনো কিউই সমর্থক নয়, বরং আর্চার বর্ণবাদী গালি খেয়েছেন নিজের দেশের সমর্থকের কাছেই!

সে দিন মাঠে উপস্থিত দুই দর্শকই জানিয়েছেন এই কথা। নিউজিল্যান্ডের তরাঙ্গা অঞ্চলে বসবাসকারী দুই ভাই এই নিয়ে মুখ সাক্ষাৎকার দিয়েছেন নিউজিল্যান্ডের পত্রিকা স্টাফের কাছে। সেদিন ওই সমর্থককে নিউজিল্যান্ডের কোনো খেলোয়াড়ের নাম উল্লেখ করতে বা সমর্থন দিতে দেখা যায়নি বলে জানিয়েছেন ওই দুজন, ‘ও ইংল্যান্ডের সমর্থক ছিল। অবশ্যই নিউজিল্যান্ডের কেউ ছিল না সে।’

সে সমর্থক এমন এমন সময়ে গালি দিচ্ছিল, যেন গালিটা ভালো করে শোনা যায়, এমনটাই বলেছেন এক ভাই, ‘সে লোকটা উপযুক্ত সময়ে গালিগুলো দিচ্ছিল। যখন বোলার তার বোলিং লাইনে ফিরে যাচ্ছিল, তখন সাধারণত আওয়াজ কম থাকে। শান্ত থাকে চারপাশ, দর্শকের আওয়াজ থাকে না। ওই সময়গুলোতেই জোরে জোরে বর্ণবাদী গালি দিচ্ছিল সে। '

নিজের গালি খাওয়ার অভিজ্ঞতা টুইটারে জানিয়েছেন আর্চার। টুইটে আর্চার জানিয়েছেন, নিউজিল্যান্ডের সেই দর্শক তাঁর ‘চামড়ার রং নিয়ে মন্তব্য করছিল।’ এ ঘটনায় আর্চারের কাছে ক্ষমা চেয়েছে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট। এর পুনরাবৃত্তি যেন না হয় তা নিশ্চিত করতে শুক্রবার থেকে শুরু হতে যাওয়া হ্যামিল্টন টেস্টে নিরাপত্তা বাড়ানোর নিশ্চয়তা দিয়েছে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট। কিউই অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনও ক্ষমা চাইবেন আর্চারের কাছে। উইলিয়ামসন বলেন, ‘এটি ভয়ংকর ব্যাপার। এসব যত দ্রুত সম্ভব নির্মূল করতে হবে এবং পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে তা নিশ্চিত করতে হবে।’

বর্ণবাদী মন্তব্য করা সেই দর্শককে নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেট মাঠ থেকে আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ করার কথা ভাবছে দেশটির ক্রিকেট বোর্ড।

এনজেডসি প্রধান নির্বাহী ডেভিড হোয়াইট জানান, বর্ণবাদী মন্তব্য করা সেই দর্শক ফৌজদারি মামলার সম্মুখীন হতে পারেন। সংবাদমাধ্যমকে হোয়াইট বলেন, ‘লোকটাকে খুঁজে বের করা গেলে আমরা তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেব। এ ধরনের ঘটনায় এটাই করা উচিত বলে মনে করি। খুঁজে পাওয়া গেলে নিউজিল্যান্ডের মাঠে ক্রিকেট ম্যাচ দেখা থেকে তাকে আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ করা হবে। আমার মতে নিউজিল্যান্ডের কোনো ক্রিকেট মাঠে তাকে আর কখনো ঢুকতে দেওয়া উচিত না।’ ইএসপিএন জানিয়েছে, সেই সমর্থককে ‘সম্ভবত খুঁজে পাওয়া গেছে।’

তবে ঘটনা যেদিক মোড় নিল, এখন নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেট বোর্ড কীভাবে দুষ্কৃতকারীকে খুঁজে বের করে, শাস্তিটাই বা কীভাবে দেয়, দেখার বিষয় সেটিই।