৪২৬ রানের ম্যাচে পয়সা উসুল দর্শকদের

ব্যাট হাতে ২৮ বলে ৫৯ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেছেন মাহমুদউল্লাহ। ছবি: প্রথম আলো
ব্যাট হাতে ২৮ বলে ৫৯ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেছেন মাহমুদউল্লাহ। ছবি: প্রথম আলো

ঢাকা বনাম চট্টগ্রাম? বিপিএলে এ দুটি দলই বেশ শক্তিশালী। স্বাভাবিকভাবেই দর্শকদের কাছে হাই-ভোল্টেজ ম্যাচ। একদিকে মাশরাফি বিন মুর্তজা, শহীদ আফ্রিদি, থিসারা পেরেরা। অন্যদিকে ইমরুল কায়েস, মাহমুদউল্লাহ, কেসরিক উইলিয়ামস।আগে ব্যাট করতে নামা চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স এবার বিপিএলে উপহার দিয়েছে প্রথম দুই শ (২২১ রান) টপকানো ইনিংস। জবাবে ঢাকা পাল্লা দেওয়ার চেষ্টা করেও শেষ পর্যন্ত পারেনি। ২০৫ রান তুলে শেষ বলে অলআউট হয়েছে মাশরাফির দল। ১৬ রানের হারে বিপিএলের চট্টগ্রাম পর্বে শুভসূচনা করতে পারল না ঢাকা প্লাটুন। মোট ৪২৬ রানের এ ম্যাচের চুম্বক অংশ নিচে তুলে ধরা হলো:

মুমিনুল টি-টোয়েন্টিরও ব্যাটসম্যান:

মুমিনুল হকের সঙ্গে 'টেস্টের ব্যাটসম্যান তকমা জুড়ে দেওয়া হয়েছে বেশ আগেই। তামিম ইকবালের অনুপস্থিতিতে আজ ঢাকার হয়ে ওপেন করার সুযোগ পেয়েছিলেন মুমিনুল। ২ ছক্কা ও ৩ চারে ৩৫ বলে ৫২ রানের ইনিংস খেলে মুমিনুল দেখালেন টি-টোয়েন্টির মেজাজ তাঁর আছে। ওপেনিং সতীর্থ এনামুল হক দ্বিতীয় ওভারে ফিরে গেলেও এক প্রান্তে দাঁড়িয়ে ঢাকার রানের গতি কমতে দেননি মুমিনুল। ১৩ তম ওভারে যখন আউট হলেন জয়ের জন্য ৪৩ বলে ১০০ রান দরকার ছিল ঢাকার। হাতে ছিল ৫ উইকেট। এখান থেকে চাপে পড়ে ম্যাচটা শেষ পর্যন্ত বের করতে পারেননি ঢাকার পরের ব্যাটসম্যানরা।

স্নায়ুচাপের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ মেহেদী হাসান রানা:

রান উৎসবের এ ম্যাচে তুলনামূলক ভালো করেছেন দেশি বোলাররা। ঢাকার হয়ে মাশরাফি বিন মুর্তজা ৩ ওভারে ১৪ রান দিলেও ভালো করেছেন সালাউদ্দিন শাকিল ও হাসান মাহমুদরা। সালাউদ্দিন ৩ ওভারে ২৭ রানে নিয়েছেন ১ উইকেট। হাসান মাহমুদ ৪ ওভারে ৫৫ রান দিলেও গুরুত্বপূর্ণ ২টি উইকেট নেন। অফ স্পিনার মেহেদী হাসান অবশ্য একটু খরচে ছিলেন। ২ ওভারে ৩৩ রান দেন তিনি। চট্টগ্রামের হয়ে সবচেয়ে বেশি চাপ গেছে মেহেদী হাসান রানার ওপর দিয়ে। শেষ ওভারে বল করার আগে ৩ ওভারে ১৯ রানে ২ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। জয়ের জন্য শেষ ওভারে ঢাকার দরকার ছিল ২১ রান। ব্যাট করছিলেন খুনে মেজাজে থাকা থিসারা পেরেরা। কিন্তু স্নায়ুর চাপ ধরে রেখে প্রথম ৩ বলে মাত্র ২ রান দিয়ে চট্টগ্রামের জয় প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেন মেহেদী। সব মিলিয়ে শেষ ওভারে মাত্র ৪ রান দিয়ে থিসারার উইকেটটি নেন ২২ বছর বয়সী এ পেসার। এ ম্যাচে ২৩ রানে ৩ উইকেট নেন তিনি। আগের ম্যাচেও ৪ উইকেট নিয়েছিলেন তরুণ এ পেসার। চট্টগ্রামের হয়ে নাসির হোসেন ৬০ রান দিলেও নিয়েছেন ২ উইকেট। পেসার মুক্তার আলী ৪২ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট।

থিসারা ঝড়:

ঢাকার ইনিংসে শেষ ওভারের শেষ বলে আউট হওয়ার আগে ম্যাচটা জমিয়ে তুলেছিলেন লঙ্কান হার্ড হিটার থিসারা পেরেরা। ৪ ছক্কা ও ৩ চারে ২৭ বলে ৪৭ বলের ইনিংস খেলেন তিনি। মুমিনুল হক আউট হওয়ার পর ব্যাট করতে নামেন থিসারা পেরেরা। ঢাকা তখন ৪৩ বলে ১০০ রানের দূরত্বে। এখান থেকে ম্যাচটা শেষ ওভার পর্যন্ত টেনে নেন পেরেরা। ঝড় তুলেছিলেন কেসরিক উইলিয়ামস, মুক্তার আলী ও হাসান মাহমুদের ওপর দিয়ে। তবে ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে তাঁর সিঙ্গেলস না নেওয়াটা খানিকটা দৃষ্টিকটু লাগতে পারে। যদিও তখন থিসারার সঙ্গে বাট করছিলেন লোয়ার অর্ডারের ব্যাটসম্যানেরা।

জ্বলে উঠেছিলেন মাশরাফি:

বল হাতে আজ মোটেও ভালো সময় কাটেনি ঢাকা অধিনায়ক মাশরাফির। ৩ ওভারে দিয়েছেন ৪২ রান। উইকেট পাননি। কিন্তু ব্যাটিংয়ে নেমে খেলেছেন ৬ বলে ২৩ রানের 'ক্যামিও' ইনিংস। চট্টগ্রামের স্পিনার নাসির হোসেনের প্রথম চার বলে মেরেছেন টানা তিন ছক্কা ও একটি চার। পঞ্চম বলে অবশ্য লং অনে ইমরুল কায়েসকে ক্যাচ দেন মাশরাফি। আউট হওয়ার পর তাঁর হতাশা প্রকাশে খারাপ লাগতে পারে ঢাকার সমর্থকদের।

মাহমুদউল্লাহ ঠিক আছেন তো?

ব্যাট হাতে ২৮ বলে ৫৯ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেছেন মাহমুদউল্লাহ। ব্যক্তিগত ৭ রানে থাকতে হ্যামস্ট্রিংয়ে তাঁর পুরোনো ব্যথাটা জেগে উঠেছিল। এ চোট নিয়েই দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন তিনি। কিন্তু চট্টগ্রামের ফিল্ডিংয়ের সময় তাঁকে মাঠে দেখা যায়নি। হয়তো মাহমুদউল্লাহর চোট নিয়ে কোনো ঝুঁকি নিতে চায়নি টিম ম্যানেজমেন্ট।