বিপিএলে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা কেন সেঞ্চুরি পাচ্ছেন না

সৌম্য সরকার । ছবি: প্রথম আলো
সৌম্য সরকার । ছবি: প্রথম আলো
>আজ অসাধারণ এক ইনিংস খেলেছেন সৌম্য। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের কাছ থেকে এমন ইনিংস প্রায়ই দেখা যাচ্ছে। কিন্তু কেন যেন কেউই তিন অঙ্ক ছুঁতে পারছেন না

রাজশাহী রয়্যালসের বিপক্ষে সৌম্য সরকার আজ অপরাজিত ছিলেন ৮৮ রানে। আরেকটি ওভার পেলে হয়তো তিন অঙ্ক ছুঁতে পারতেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। জিততেও পারত তাঁর দল কুমিল্লা। আর বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা যে টুর্নামেন্টে সেঞ্চুরি–খরায় ভুগছেন, সেটিও ঘুচত।

অর্ধেক পথ পেরোনো বঙ্গবন্ধু বিপিএলে এখনো বাংলাদেশের কোনো ব্যাটসম্যান পাননি তিন অঙ্কের দেখা। এ পর্যন্ত টুর্নামেন্টে সেঞ্চুরি করেছেন সিলেটের আন্দ্রে ফ্লেচার আর কুমিল্লার ডেভিড ম্যালান। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে শুধু মুশফিকুর রহিমই সেঞ্চুরির আশা জাগিয়েছেন। ১৭ ডিসেম্বর জহুর আহমেদে রাজশাহীর বিপক্ষে অসাধারণ এক ইনিংস খেলে আউট হয়েছেন ৯৬ রানে। মুশফিক বাদে বাংলাদেশের আর কোনো ব্যাটসম্যান পৌঁছাতে পারেননি ৯০-এর ঘরে। ৮০-এর ঘরে যেতে পেরেছেন মাত্র দুজন—আজ সৌম্য আর ১১ ডিসেম্বর মিরপুরে চট্টগ্রামের বিপক্ষে মোহাম্মদ মিঠুন অপরাজিত ছিলেন ৮৪ রানে।

বেশির ভাগ ইনিংসে দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা উইকেটে থিতু হচ্ছেন, কেউ কেউ সেঞ্চুরির আশাও জাগাচ্ছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ইনিংসটা কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছে না। টি-টোয়েন্টিতে সেঞ্চুরি করা সব সময়ই কঠিন। সেই কঠিন কাজটা বিদেশি ব্যাটসম্যানরা যেভাবে করছেন, স্থানীয়রা কেন পারছেন না? বাংলাদেশ দলের তরুণ ভরসা আফিফ হোসেন বলছেন, ‘হয়তো পরিস্থিতি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় রান রেট অনেক ওপরে থাকে। রান রেট ঠিক রাখতে গিয়ে হয়তো ভুল শট খেলে ফেলছি আমরা। সামনে হবে (দেশি ব্যাটসম্যানদের সেঞ্চুরি) ইনশা আল্লাহ।’

এটা ঠিক, ভালো ব্যাটিংয়ে সেঞ্চুরিই একমাত্র মানদণ্ড নয়। কিন্তু একজন ব্যাটসম্যানের তিন অঙ্ক ছোঁয়ার অভ্যাস থাকলে দলীয় স্কোরটা অনায়াসে ২০০ পেরোয়। নিয়মিত ২০০ পেরোনো ইনিংস, ২০ ওভারের ক্রিকেটে তিন অঙ্ক ছোঁয়ার অভ্যাস থাকলে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতেও রানের পাহাড় গড়া কঠিন হয় না।

টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের সেঞ্চুরি করতে না পারার পেছনে উইকেট একটা গুরুত্ব ভূমিকা রাখে বলে মনে করেন নির্বাচক হাবিবুল বাশার, ‘টি-টোয়েন্টিতে ১১০-১২০ স্ট্রাইকরেটে সেঞ্চুরি করা যায় না। সব সময় ১৪০-১৫০ স্ট্রাইকরেট থাকতে হয়। আমরা পাওয়ার ক্রিকেট খেলে অভ্যস্ত না। আমাদের ব্যাটসম্যানরা সাধারণত যে ধরনের উইকেট খেলে, সেটি পাওয়ার হিট অনুমোদন করে না। যদি তাদের নিয়মিত ভালো উইকেটে খেলার সুযোগ করে দিতে পারি, তবে লম্বা ইনিংস খেলার অভ্যাস তৈরি হবে। শুরু থেকেই মেরে খেলা শিখবে। বড় ইনিংস খেলতে এটার বিকল্প নেই।’