ম্যানচেস্টার ডার্বি জানিয়ে দিল, কত দুর্বল ইউনাইটেড

কারাবাও কাপের ফাইনালে এক পা দিয়ে রাখল সিটি। ছবি : এএফপি
কারাবাও কাপের ফাইনালে এক পা দিয়ে রাখল সিটি। ছবি : এএফপি
>

কারাবাও কাপে সেমিফাইনালের প্রথম লেগে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে ৩-১ গোলে হারিয়েছে ম্যানচেস্টার সিটি। গোল করেছেন বার্নার্ডো সিলভা, রিয়াদ মাহরেজ। অন্য গোল ইউনাইটেডের মিডফিল্ডার অ্যান্দ্রেয়া পেরেইরার আত্মঘাতী থেকে। ইউনাইটেডের সান্ত্বনাসূচক গোল ইংলিশ স্ট্রাইকার মার্কাস রাশফোর্ডের

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সে দিন আর নেই। প্রতি সপ্তাহেই নতুন করে তাদের দুর্বলতার নতুন নতুন উপাখ্যান দর্শকদের সামনে চলে আসে। ইংল্যান্ডের অন্যান্য শীর্ষ ক্লাবের চেয়ে তারা যে কতটা পিছিয়ে আছে, সেটা প্রায় প্রতি সপ্তাহেই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেন যেন রাশফোর্ড-মার্শিয়ালরা। গত রাতেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। কারাবাও কাপের সেমিফাইনালের প্রথম লেগে নিজেদের মাঠ ওল্ড ট্রাফোর্ডে ৩-১ গোলে ম্যানচেস্টার সিটির সঙ্গে হেরে গেছে তারা।

এই জয়ের ফলে নিজেদের মাঠে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া দ্বিতীয় লেগের আগেই মোটামুটি ফাইনালে যাওয়া নিশ্চিত করে ফেলল গত দুইবারের চ্যাম্পিয়ন ম্যানচেস্টার সিটি।

প্রথমার্ধেই ৩-০ গোলে পিছিয়ে পড়েছিল ইউনাইটেড, একদম ঠিক করে বললে ৩৯ মিনিটের মধ্যেই। লিগের সর্বশেষ ডার্বিতে ইউনাইটেডের কাছে অপ্রত্যাশিতভাবে হেরে গিয়েছিল সিটি। সেই জ্বালা থেকেই কি না, প্রথম থেকেই ইউনাইটেডকে একদম চেপে ধরে পেপ গার্দিওলার শিষ্যরা। মাঠে সার্জিও আগুয়েরো বা গ্যাব্রিয়েল জেসুসের মতো প্রথাগত কোনো স্ট্রাইকার ছিলেন না। ইংলিশ উইঙ্গার রাহিম স্টার্লিং খেলেছেন স্ট্রাইকার হিসেবে। তা ছাড়া কেভিন ডি ব্রুইনিয়া ও রিয়াদ মাহরেজের মতো আক্রমণাত্মক খেলোয়াড়েরাও ম্যাচের মাঝে প্রায়ই স্ট্রাইকার হয়ে যাচ্ছিলেন যেন। ফলে কাকে ছেড়ে কাকে মার্ক করব, সেই দোটানায় পড়ে মোটামুটি গোটা ম্যাচেই খাবি খেয়েছেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড।

ম্যাচের ৩৯ মিনিটের মধ্যেই মোটামুটি ম্যাচের ফল নির্ধারিত হয়ে যায়। ম্যাচের ১৭ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে কোনাকুনি শটে দারুণ এক গোল করেন পর্তুগিজ উইঙ্গার বার্নার্ডো সিলভা। গোল করার পর সিটির দ্বিতীয় গোলেও অবদান রেখেছেন পর্তুগিজ মিডফিল্ডার। তার পাস ধরেই ৩৩ মিনিটে ব্যবধান বাড়ান আলজেরিয়ার উইঙ্গার রিয়াদ মাহরেজ। তৃতীয় গোলটা পেতেও বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি সিটির। কেভিন ডি ব্রুইনার শট ডেভিড ডি গিয়া ঠেকিয়ে দিলেও, পরে আন্দ্রেয়া পেরেইরার গায়ে লেগে আত্মঘাতী গোল হজম করে ইউনাইটেড।

প্রথমার্ধ শেষ হতে না হতেই ম্যাচের ফলাফল নিজের মুঠোয় পুরে নেওয়ার কারণেই কি না, একটু ধীরেসুস্থে খেলেছে সিটি। না হলে যে উদ্যমে তারা খেলা শুরু করেছিল, পুরো নব্বই মিনিট সেটি ধরে রাখলে ইউনাইটেডের কপালে আরও বড় ব্যবধানের হারই লেখা ছিল হয়তো। ইউনাইটেডের গোলটাও এসেছে সিটির ধীরেসুস্থে খেলার মাশুল হিসেবেই। সিটির খেলোয়াড়েরা বলের দখল রাখতে পারেননি। আর সেটি থেকেই সুযোগ পেয়ে ব্যবধান কমান মার্কাস রাশফোর্ডরা।

দুই দলের মধ্যে মানের দিক দিয়ে এখন যে কত যোজন যোজন পার্থক্য, গত রাতে সেটাই যেন দেখিয়ে দিয়েছেন পেপ গার্দিওলা। এই মাসের ৩০ তারিখ সিটির মাঠ ইতিহাদে সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে মুখোমুখি হবে দুই দল।