'আমি ভয় পাইনি, ভয় পাইও না'

জাতীয় দলের প্রথম অনুশীলন শেষে ফয়সাল হোসেন ফাহিম। ছবি: প্রথম আলো
জাতীয় দলের প্রথম অনুশীলন শেষে ফয়সাল হোসেন ফাহিম। ছবি: প্রথম আলো

অনুশীলন ম্যাচে তপু বর্মণের পা থেকে বল কেড়ে নিলেন বেশ কয়েকবার। একবার তো জামাল ভূঁইয়া হাঁক ডেকে বল চেয়েও পেলেন না। কিন্তু অধিনায়ককে রাগ করার সুযোগ না দিয়ে বাঁ পায়ের শটে গোলরক্ষক আশরাফুল রানাকে ফাঁকি দিয়ে জালে জড়িয়ে দিয়েছেন বল। সবই ফয়সাল হোসেন ফাহিমের জাতীয় দলের জার্সিতে প্রথম দিনের (গতকাল) অনুশীলনের গল্প। বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ সামনে রেখে প্রথমবারের মতো জাতীয় দলে ডাক পেয়েছেন। কিন্তু অনুশীলন দেখে কে বলবে, এটাই ছিল জাতীয় দলে তাঁর প্রথম অনুশীলন!

বয়সভিত্তিক ফুটবলে ফাহিমের কারিশমার কথা সবারই জানা। নিজেকে চিনিয়েছিলেন ২০১৭ সালে কাঠমান্ডুতে অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব-১৫ সাফে। হ্যাটট্রিকসহ ৪ ম্যাচে ৭ গোল করে জিতেছিলেন সোনার বুট। এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ বাছাইপর্বে কাতারের বিপক্ষে বাংলাদেশের জয়ে তাঁর পা থেকে এসেছিল দারুণ এক গোল। স্ট্রাইকার সংকটের এ দেশে নিজেকে দারুণ প্রতিশ্রুতিশীল প্রমাণ করে গত বছর অনূর্ধ্ব-১৮ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে আবারও জিতেছেন সোনার বুট।

কিশোর ফাহিমের জন্য প্রয়োজন ছিল শুধু ভালো পরিচর্যার। দুই বছর ধরে সাইফ স্পোর্টিং ক্লাবের অধীনে সে সুযোগটাই আদায় করে নিয়েছেন প্রতিভা দিয়ে। উয়েফা প্রো লাইসেন্সধারী কোচের অধীনে বেড়ে উঠছেন। ফলে দুর্দান্ত গতির সঙ্গে বলের ওপর নিয়ন্ত্রণে এখন পরিপক্বতার ছাপ। উইংয়ে শুরু করে সুযোগ বুঝে আস্তে আস্তে বক্সের সামনে জায়গা খুঁজে নেওয়া। সঠিক সময়ে সঠিক জায়গায় থাকা। আর দূর থেকে পোস্টে শট নেওয়ার সাহস একটু আলাদাভাবেই পরিচয় করিয়ে দেয় ফাহিমকে।

এই সাহসকেই পুঁজি করে ছোট লিকলিকে শরীরে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন ফাহিম। প্রথম দিনের অনুশীলন শেষে প্রথম আলোকে জানিয়ে দিয়েছেন, ‘এখনই জাতীয় দলে ডাক পাব, সে আশা করিনি। ডাক পাওয়াতে অবাকই হয়েছি। কিন্তু প্রথম অনুশীলনে আমি কিন্তু একবারও ভয় পাইনি, ভয় পাইও না। বড় ভাইদের সঙ্গে মিলিয়ে খেলার চেষ্টা করেছি। ডাক পেয়েছি, এখন জায়গা তৈরি করে নিতে চাই।’

ফাহিমের ডাক পাওয়াটা হুট করে হলেও তাঁর ওপরে নজর রাখছিলেন জাতীয় দলের ব্রিটিশ কোচ জেমি ডে, ‘ফাহিমের ওপর গত মৌসুম থেকেই নজর রাখছিলাম আমি। এ বছর ও একই ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে। আশা করি, জাতীয় দলে ডাক পাওয়া তার আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেবে। তাকে ভবিষ্যতের জন্য আমরা তৈরি করতে চাই।’