হন্যে হয়ে স্ট্রাইকার খুঁজছেন মরিনহো

হ্যারি কেইনের চোট ভোগাচ্ছে মরিনহোকে। ছবি : এএফপি
হ্যারি কেইনের চোট ভোগাচ্ছে মরিনহোকে। ছবি : এএফপি
>

চোটে পড়েছেন দলের মূল স্ট্রাইকার ও অধিনায়ক হ্যারি কেইন। ফলে খেলানোর মতো স্ট্রাইকার নেই টটেনহামে। জানুয়ারির দলবদলে তাই হন্য হয়ে স্ট্রাইকার খুঁজে চলেছেন টটেনহাম কোচ হোসে মরিনহো। এই মাসে স্ট্রাইকার না পেলে ভুগতে থাকা স্পার্সের অবস্থা আরও খারাপ হতে পারে

গত কয়েক বছর ধরেই টটেনহামের একমাত্র কার্যকরী স্ট্রাইকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন হ্যারি কেইন। দুর্দান্ত ফিট এই স্ট্রাইকার চোটে পড়েন না সাধারণত, ফলে টটেনহামের কোনো কোচ আগে টাকা পয়সা খরচ করে অন্য কোনো দামি স্ট্রাইকার আনতে চাননি। ফলে কেইন যখনই চোটে পড়েছেন, বেশ ভুগেছে টটেনহাম। যেমনটা ভুগছে এখন। বাম পায়ের হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে পড়ে মাঠের বাইরে চলে গেছেন টটেনহাম ও ইংল্যান্ডের অধিনায়ক। ফলে স্ট্রাইকার অভাবে পড়েছেন দলের কোচ হোসে মরিনহো।

টটেনহামে যে স্ট্রাইকার নেই, তা কিন্তু না।

কেইনের বিকল্প হিসেবে দলে ১৭ বছর বয়সী আরেক ইংলিশ স্ট্রাইকার ট্রয় প্যারট রয়েছেন, কিন্তু তাঁর মতো আনকোরা স্ট্রাইকারের ওপর এখনই পাহাড়সম চাপ দিতে চাচ্ছেন না মরিনহো। এর আগে কেইন যখন চোটে পড়েছিলেন, মূল স্ট্রাইকার হিসেবে দক্ষিণ কোরিয়ার উইঙ্গার হিউং মিন সন কিংবা ব্রাজিলের উইঙ্গার লুকাস মউরাকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খেলাতেন সাবেক কোচ মরিসিও পচেত্তিনো। খুব সম্ভবত মরিনহো সে কৌশল অনুসরণ করতে চান না। নাহয় দলবদলের বাজারে স্ট্রাইকার খুঁজে বেড়াবেন কেন?

শোনা যাচ্ছে, এসি মিলানের পোলিশ স্ট্রাইকার ক্রিস্তফ পিওন্তেক কে দলে আনতে চাইছেন মরিনহো। এই জানুয়ারিতেই দলের সাবেক তারকা জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচকে ফিরিয়ে এনেছে এসি মিলান। ফলে মূল একাদশে জায়গা অনিশ্চিত হয়ে গেছে পিওন্তেকের। অথচ গত বছরই মিলানে এসেছিলেন পিওন্তেক। সেবার দুর্দান্ত ফর্মে থাকা পিওন্তেক এ মৌসুমে তেমন ফর্মে নেই, ফলে কয়েক মাস যেতে না যেতেই অধৈর্য হয়ে পড়েছে মিলান। আর সেই সুযোগটাই নিতে চাইছে টটেনহাম।

আপাতত ছয় মাসের ধার চুক্তিতে পিওন্তেককে দলে আনতে চাইছে টটেনহাম। কিন্তু পিওন্তেককে ধারে পাঠাতে আগ্রহী নয় মিলান। তাঁকে পুরোপুরি বেচে দিতে চায় তারা, দাম হাঁকিয়েছে ৩০ মিলিয়ন পাউন্ডের মতো। ওদিকে টটেনহাম জানে, হ্যারি কেইন পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ফিরে এলে তাঁকেই প্রতি ম্যাচ খেলাতে হবে। চোট কাটিয়ে আগামী এপ্রিলে মাঠে ফেরার কথা কেইনের। ফলে যে স্ট্রাইকার মূল একাদশে বলতে গেলে খেলবেনই না, তাঁর পেছনে এত খরচ করতে চাইছে না ইংলিশ ক্লাবটা। আর ঐতিহ্যগতভাবেই টটেনহাম একটু 'কিপটে' ক্লাব হিসেবে পরিচিত। এর আগে কেইনের সঙ্গে অদল-বদল করে খেলানোর জন্য ডাচ স্ট্রাইকার ভিনসেন্ট ইয়ানসেনকে কিনেছিল তারা, ১৭ মিলিয়ন পাউন্ডের বিনিময়ে। ৩১ ম্যাচে ২ গোল করে নিজের মূল্য বোঝাতে পারেননি ইয়ানসেন। ফলে টটেনহাম এখন স্ট্রাইকারের পেছনে করার ব্যাপারে আরও সাবধানী।

ধারের প্রস্তাব মিলান ফিরিয়ে দেওয়ার পর টটেনহাম পিওন্তেকের জন্য দ্বিতীয় প্রস্তাব পাঠিয়েছে। দাম কমানোর জন্য চুক্তিতে আর্জেন্টিনার সেন্টারব্যাক হুয়ান ফয়থ ও কেনিয়ার মিডফিল্ডার ভিক্টর ওয়ানিয়ামাকে ঢোকাতে চাইছে তারা। এই প্রস্তাবের এখনো জবাব দেয়নি মিলান।

টটেনহাম ছাড়াও পিওন্তেকের পেছনে ছুটছে আরেক ইংলিশ ক্লাব অ্যাস্টন ভিলা।

পয়েন্ট টেবিলে টটেনহামের অবস্থাও বিশেষ ভালো নয়। ২১ ম্যাচ খেলে ৩০ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকার ষষ্ঠ স্থানে আছে তারা। চতুর্থ স্থানে থাকা চেলসির চেয়ে এখনো ছয় পয়েন্টে পিছিয়ে টটেনহাম। এই কঠিন মৌসুমেই টটেনহামের আশার বাতিঘর হয়ে ছিলেন তিনি। এই মৌসুমে এই পর্যন্ত সব মিলিয়ে মোট ২৫ ম্যাচ খেলে ১৭ গোল করেছেন কেইন।

কেইনের অভাব পূরণের জন্য তাই মরিনহোর স্ট্রাইকার খোঁজাটা অস্বাভাবিক কিছু না।