বিয়ের পর বদলে গেছেন লিটন

স্ত্রী সঞ্চিতার সঙ্গে লিটনের ছবিটাই বলে দিচ্ছে সুখে শান্তিতেই দিন কাটছে তাঁদের। ছবি: ফেসবুক
স্ত্রী সঞ্চিতার সঙ্গে লিটনের ছবিটাই বলে দিচ্ছে সুখে শান্তিতেই দিন কাটছে তাঁদের। ছবি: ফেসবুক

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর দেবশ্রী বিশ্বাস সঞ্চিতার সঙ্গে লিটন দাস সাত পাকে বাঁধা পড়েছেন গত জুলাইয়ে। হৃদয়ের বন্ধন তাঁদের আরও আগে থেকে। দাম্পত্য জীবন শুরুর পর দুজনের রসায়নটা যেন আরও জমেছে। আর সেটির ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে লিটনের পারফরম্যান্সে।

লিটন যেদিন খেলেন, মুগ্ধ চোখে দেখতে হয় তাঁর ব্যাটিং। স্ট্রোকের ঝটায় এমন দুরন্ত গতিতে এগোতে থাকেন, কখনো মনে হয় ব্যাটিং নয় ভিডিও গেমস খেলছেন! সমস্যা একটাই স্ট্রোকের এই ফুলঝুরি নিয়মিত নয়, দেখা যায় মাঝেমধ্যে। এবার বিপিএলে দেখা যাচ্ছে অন্য ছবি। ধারাবাহিক ভালো করছেন লিটন। ১২ ম্যাচে ৩ ফিফটিতে ৩৮.৩৬ ফিফটি ও ১৩৯.৭৩ স্ট্রাইকরেটে করেছেন ৪২২। এই মুহূর্তে সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহকের তালিকায় আছেন সেরা পাঁচে। আগের ম্যাচে ৫৬ রানের পর আজ চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে করেছেন ৪৮ বলে ৭৫ রান।

ব্যাটিংয়ে ধারাবাহিকতার পেছনে লিটন প্রথম বললেন টেকনিক্যাল পরিবর্তনের কথা, ‘টেকনিক একটু বদলেছে। আগে এভাবে ব্যাটিং করতাম না। নিলের (জাতীয় দলের ব্যাটিং কোচ ম্যাকেঞ্জি) সঙ্গে অনেক দিন কাজ করেছি। আমার পা ঠিক না, মাথার অবস্থান একটু বদলেছে। আগে দুই-তিন ম্যাচে আমার মাথার অবস্থান ঠিক ছিল না। এই জিনিসটা নিয়ে কাজ করছি যাতে মাথার অবস্থান এলোমেলো না হয়।’

টেকনিকের পাশাপাশি একটি মনস্তাত্ত্বিক বিষয়ও তুলে ধরলেন লিটন, ‘আগের বিপিএলে মারলে মারতেই থাকতাম। সব ধরনের শট খেলতে পারি, যে কারণে সব শটই খেলতে চাই। এ বিপিএলে অনেক শট কমিয়ে দিয়েছি। আগে ১৫ বলে ২৭-৩০ রান থাকত। তবে আউট হয়ে যেতাম। এবার ১৫ বলে ১৭ বা ১৩ থাকছে। পাওয়ার প্লেতে বোলাররা সব সময়ই ব্যাকফুটে থাকে। আমি যদি একটা বাউন্ডারি মেরে দিই অবশ্যই বোলার চিন্তায় পড়ে যায় যে পরের বলে ব্যাটসম্যান কী করতে পারে। এখানে নিজেকে একটু বদলেছি যে সব ধরনের শট খেলা যাবে না, শট বেছে খেলতে হবে।’

ক্রিকেটীয় মনস্তত্ত্বের কথা তো বললেন। মানসিকভাবে লিটনকে বদলে দিয়েছে আসলে বিয়ে। দাম্পত্য জীবন কীভাবে মানসিকভাবে তাঁকে স্থিতিশীলতা দিয়েছে, আরও পরিণত করেছে সেটি লিটন আজ সংবাদ সম্মেলনে খুলেই বললেন, ‘খুব কম বয়সে বিয়ে করে ফেলেছি। বিয়েটাই আমাকে আরও পরিণত করেছে। দুটো কথা বলি। ২০১৬-১৭ সালে যখন খারাপ খেলেছি, তখন আমার পরিণতবোধ অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে। (ক্যারিয়ারে) কখনো খুব একটা ছন্দ হারাইনি। ওই সময় জীবনে অনেক কিছু শিখেছি। ওখানে পরিণতবোধ বেড়েছে। বিয়ের পর আরেকটু বেড়েছে। জানি না কীভাবে বেড়েছে। সেটা মাঠে হোক কিংবা মাঠের বাইরে সবকিছুতেই বেড়েছে।’