না খেলে বিশ্রাম নেওয়া মুশফিকের কাছে 'পাপ'

মুশফিকুর রহিম। প্রথম আলো ফাইল ছবি
মুশফিকুর রহিম। প্রথম আলো ফাইল ছবি
>

কাল বিপিএল ফাইনাল শেষে মুশফিক খোলাসা করলেন কেন তিনি যেতে চান না পাকিস্তান সফরে

মুশফিকুর রহিম পাকিস্তানে যেতে চান না, গত ডিসেম্বরে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান সাংবাদিকদের সেটি জানিয়েছেন। কাল মুশফিক আনুষ্ঠানিক চিঠি দিয়ে বিসিবিকে জানিয়েছেন যে তিনি পাকিস্তান সফরে যাবেন না। দুর্দান্ত ছন্দে থাকা বাংলাদেশ দলের এ অভিজ্ঞ উইকেটকিপার ব্যাটসম্যানকে ছাড়াই আজ হয়তো দল দিয়ে দেবে বিসিবি।

মুশফিক কেন পাকিস্তানে যেতে চান না, নানা মাধ্যমে নানা কথা শোনা গেলেও তাঁর মুখ থেকে এত দিন কিছু শোনা যায়নি। কাল বিপিএল ফাইনাল শেষে মুশফিক খোলাসা করলেন কেন তিনি যেতে চান না পাকিস্তান সফরে—

* পাকিস্তান সফরের দল এখনো দেয়নি। শুনেছিলাম আপনি যেতে চাইছেন না। আপনার সিদ্ধান্তে কি কোনো পরিবর্তন এসেছে?
মুশফিক: সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের কী আছে? আমি তো আগেই বলে দিয়েছি যাব না। পারিবারিক কারণে যাব না। আগেই অনুরোধ করেছি, তারা সেটা মেনে নিয়েছে। আমি আনুষ্ঠানিক চিঠিও দিয়েছি (বিসিবিকে)।

* শুধু টি-টোয়েন্টি সিরিজেই যাবেন না, নাকি একেবারেই পাকিস্তান সফরে যাবেন না?
মুশফিক: পাকিস্তানেই যাচ্ছি না।

* আপনার পাকিস্তানে না যাওয়ার কারণ নিরাপত্তাজনিত শঙ্কা, না অন্য কোনো কারণ?
মুশফিক: অন্য কী কারণ হতে পারে? পারিবারিক কারণ তো বললামই। তারা ভয় পাচ্ছে, শঙ্কিত। এটার পর সেখানে গিয়ে খেলতে পারি না।

* এই সিদ্ধান্ত নেওয়া কতটা কঠিন ছিল আপনার জন্য?
মুশফিক: যদি বলেন বাংলাদেশ দলের একটি সিরিজে বিশ্রাম নিতে হবে, এর চেয়ে বড় পাপ আর কিছু হতে পারে না! আমার জন্য অনেক বড় সুযোগও ছিল পাকিস্তান সুপার লিগের (পিএসএল) মতো এত বড় টুর্নামেন্টে খেলার। প্রথমেই ওদের না করে দিয়েছি। জানি পুরো টুর্নামেন্টটা পাকিস্তানে হবে। ওদের বলেছি, যেহেতু পরিবার অনুমতি দিচ্ছে না, এখানে যেতে পারব না। জীবনের চেয়ে অবশ্যই ক্রিকেট বড় না। একই সঙ্গে বলতে চাই, পাকিস্তান হয়তো আগের চেয়ে ভালো (নিরাপত্তার দিক দিয়ে)। আরও দুটি বছর যদি নিয়মিত অন্য দলগুলো সেখানে সফর করে, তখন হয়তো আমার আত্মবিশ্বাস বাড়বে। পাকিস্তানে আগেও সফর করেছি। ২০০৮ সালে গিয়েছিলাম। ওখানকার খেলার পরিবেশ, উইকেট খুবই ভালো হয়। সে হিসেবে বলব, অবশ্যই সফরটা মিস করব। আগামী ২-৩ বছরে যদি পরিস্থিতি ধারাবাহিক ভালো হয়, ভবিষ্যতে সেখানে না যাওয়ার কারণ নেই।

* আপনি যে ছন্দে আছেন, যে মানের ব্যাটসম্যান—এই মুহূর্তে আপনার বিকল্প নেই বাংলাদেশ দলে।
মুশফিক: বাংলাদেশ দলে বিকল্প খেলোয়াড় খুঁজতে এক ঘণ্টা লাগে! সব সময়ই চেষ্টা করি পরের সিরিজটা কীভাবে ভালো করতে পারি। কখনো লক্ষ্য থাকে না সামনে বিশ্বকাপ, এশিয়া কাপ—এই কাপ, সেই কাপ! আমার লক্ষ্য পাকিস্তানের পর যে সিরিজটা আছে, জিম্বাবুয়ে সিরিজ সামনে রেখে তৈরি হওয়া।

* আপনার বিকল্প পেতে নির্বাচকদের প্রতি কোনো পরামর্শ ছিল কি?
মুশফিক: বললাম তো, বাংলাদেশে বিকল্প খেলোয়াড় খুঁজতে এক ঘণ্টা সময় লাগে না! অনেক বিকল্প খেলোয়াড় আছে। অনেকেই ভালো খেলছে। সবার জন্যই এটা একটা ভালো সুযোগ। যে-ই সুযোগ পায়, যেন সেটি কাজে লাগাতে পারে। যদি পরের সিরিজে সুযোগ পাই চেষ্টা করব নিজের জায়গাটা যেন ধরে রাখতে পারি।

* বাংলাদেশ দলের এখন যে অবস্থা, সাকিব আল হাসান নেই। মাশরাফি বিন মুর্তজা টি-টোয়েন্টি খেলেন না। এখন আপনিও যদি না খেলেন পাকিস্তানে গিয়ে দল আদৌ ভালো করতে পারবে?
মুশফিক: ভারতে তো আমি খেলেছিলাম, কী লাভ হয়েছে? তিন দিন আর আড়াই দিনে হেরেছি দুটি টেস্ট। আমরা পাঁচ সিনিয়র খেলোয়াড় থাকতেই কত ম্যাচ হেরেছি। আবার না থাকার পরও অনেক ম্যাচ জিতেছি। হ্যাঁ, থাকতে পারলে ভালো করার সম্ভাবনা হয়তো থাকত। তবে আমি মনে করি, নতুন খেলোয়াড়দের জন্য এটা ভালো সুযোগ। বাংলাদেশও নতুন খেলোয়াড় খুঁজছে। পাকিস্তানের বিপক্ষে পাকিস্তানের মাটিতে খেলা চ্যালেঞ্জিং। দলের প্রতি শুভকামনা থাকবে যেন ভালো করতে পারে।