বাংলাদেশের উদ্দেশে হুংকার ছুড়ে দিল বুরুন্ডি

সেমিফাইনালে ওঠা নিশ্চিত করে বুরুন্ডির উল্লাস। ছবি: বাফুফে
সেমিফাইনালে ওঠা নিশ্চিত করে বুরুন্ডির উল্লাস। ছবি: বাফুফে

র‍্যাঙ্কিংয়ে ২০০ নম্বর ও তাদের চেয়ে এগিয়ে থাকা দুই দলের খেলা। খেলা না দেখে থাকলে এমন ম্যাচ নিয়ে কোনো আলোচনার আগ্রহ জাগে না। কিন্তু সেশেলস ও বুরুন্ডির ম্যাচ ছিল টান টান উত্তেজনায় পরিপূর্ণ। আধুনিক পরিকল্পিত ফুটবল না খেলেও যে ফুটবল আনন্দে ভাসা যায়, সেটা দেখাল আফ্রিকার দুই দল। আর তাতে সেশেলসকে ৩-১ গোলে হারিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হিসেবে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের সেমিফাইনালে পা রাখল বুরুন্ডি।

বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে সেশেলসের নাম ঘোষণার পর থেকেই ফুটবলপাড়ায় কৌতূহল, এরা কোন দল? কিন্তু র‍্যাঙ্কিংয়ের ২০০–তে থাকা দলটি যে ফুটবল খেলতে জানে ভালোই, সেটা টের পাওয়া গেল আজ। দারুণ ফুটবল খেলে প্রথমার্ধে ১-০ গোলে এগিয়েও গিয়েছিল তারা। কিন্তু প্রথম ম্যাচের পর আজও বুরুন্ডি দেখিয়ে দিয়েছে র‍্যাঙ্কিংয়ের ১৭২তম হওয়ার মতো দল নয় তারা। আক্রমণাত্মক ফুটবলের ঝড় দিয়ে দ্বিতীয়ার্ধের অর্ধেক পেরোনোর আগেই তিন গোল দিয়ে বসেছে। বাংলাদেশ যদি কাল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জিততে পারে, তবে সেমিফাইনালে বুরুন্ডির গতির সামনে বড় পরীক্ষাই দেবে।

মরিশাসকে ৪-১ গোলে উড়িয়ে দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করেছে বুরুন্ডি। সেশেলস সম্পর্কে কারও ধারণা না থাকায় অনেকেই ধরে নিয়েছিল তারাও আজ উড়ে যাবে। কিন্তু সেশেলস ছেড়ে কথা বলেনি। অনেক গোল হাতছাড়া না করলে স্কোর লাইন অন্য রকমও হতে পারত।

আফ্রিকান দুই দেশের মধ্যকার ম্যাচটি হয়েছে দারুণ উপভোগ্য। মূল জাতীয় দলের মাত্র ৪ জন ফুটবলার নিয়ে ঢাকায় এলেও টুর্নামেন্টে সুরভি ছড়াতে শুরু করেছে বুরুন্ডির ফুটবল। কম গেল না সেশেলসও। দেশের বাইরে খেলা জাতীয় দলের ফুটবলারদের ছাড়াই এসেছে, তবু তাদের খেলা ছিল প্রাণবন্ত।

২৬ মিনিটে সেশেলসকে এগিয়ে দিয়েছিলেন পেরি মোনাই। বুরুন্ডি রক্ষণের পাওয়া বল জালে পাঠিয়ে দিয়েছেন মোনাই। বুরুন্ডি এরপর একের পর এক আক্রমণ করেছে। প্রথমার্ধে অবশ্য তাতে কোনো লাভ হয়নি। আগের ম্যাচে হ্যাটট্রিক করা সিমিরিমানার গোলেই সমতায় ফেরে বুরুন্ডি। গোলটিতে সেশেলস গোলরক্ষকের ব্যর্থতার দায়ই বেশি। আসমান দিকুমানার সাদামাটা এক ক্রস গ্রিপে নিতে ব্যর্থ হন গোলরক্ষক আলভিন মিশেল। দৌড়ে এসে টোকা দিয়ে জালে জড়িয়ে দেন সিমিরিমানা। সমতায় ফেরার পর এগিয়ে যেতে বুরুন্ডি সময় নিয়েছে মাত্র ৬ মিনিট। ৬০ মিনিটে ২-১ করেছেন অধিনায়ক তামবুই আমিসি। ব্লানচার্ডের ক্রসে গোলমুখ থেকে পা লাগিয়ে গোলটি করেছেন এই মিডফিল্ডার।

পরের মিনিটেই তামবুইয়ের দুর্দান্ত ফিনিশিংয়ে ৩-১। ডান প্রান্ত থেকে বাতাসে ভেসে আসা বল প্রথম স্পর্শে দুর্দান্ত নিয়ন্ত্রণে নিয়ে দ্বিতীয় স্পর্শে বুলেট গতির ভলিতে বল জালে। এর পর হলো সেশেলসের গোল হাতছাড়া করার প্রদর্শনী। গোলরক্ষককে একা পেয়েও গোল মিস করেছে দলটি।