হরলান্ড এলেন, জয় করলেন

অভিষেকেই হ্যাটট্রিক করেছেন হরলান্ড। ছবি : এএফপি
অভিষেকেই হ্যাটট্রিক করেছেন হরলান্ড। ছবি : এএফপি
এই মৌসুমের শুরুতে অস্ট্রিয়ান ক্লাব রেড বুল সালজবুর্গের হয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগেই নিজের জাত চিনিয়েছেন আর্লিং ব্রট হরলান্ড। স্বভাবতই, টানাটানি পড়ে গিয়েছিল এই তরুণ স্ট্রাইকারকে নিয়ে। হরলান্ডও নিজের ক্যারিয়ারের পরবর্তী ধাপে পা দিতে দেরি করেননি, যোগ দিয়েছেন জার্মান ক্লাব বরুসিয়া ডর্টমুন্ডে। লিগ অভিষেকেই হ্যাটট্রিক করে জানিয়ে দিয়েছেন, কেন এত মাতামাতি তাঁকে ঘিরে!


হরলান্ড মানেই যেন গোল। নরওয়ের ১৯ বছর এই স্ট্রাইকারকে বলা হচ্ছে পরবর্তী ‘জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচ। নিজের এই নতুন পরিচয়কে সার্থক করার চেষ্টায় দিন দিন যেন গোলমুখে হয়ে উঠছেন আরও ভয়ংকর। সর্বশেষ উদাহরণ, জার্মান লিগে নিজের অভিষেক ম্যাচেই বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের হয়ে হ্যাটট্রিক করেছেন এই তরুণ তারকা।

এবারই প্রথম খেলতে এসেছিলেন চ্যাম্পিয়নস লিগ, এসেই করেছেন বাজিমাত। গ্রুপপর্বের প্রথম পাঁচ ম্যাচেই করেছেন ৮ গোল। এর মধ্যে আবার অভিষেকে হ্যাটট্রিকও করেছেন। চ্যাম্পিয়নস লিগের মতো কঠিন প্রতিযোগিতার মঞ্চে আলো ছড়ানো এই স্ট্রাইকারের পেছনে সেই তখন থেকেই লেগে ছিল একটি বা দুটি নয়, ৪০ ক্লাব! শেষ পর্যন্ত শেষ হাসিটা হেসেছে ডর্টমুন্ডই। ২০ মিলিয়ন ইউরোতে জার্মান ক্লাবে এই জানুয়ারিতেই যোগ দিয়েছেন হরলান্ড। যেভাবে গোল করছেন, বিশ মিলিয়ন ইউরোর অঙ্কটা ডর্টমুন্ডের কাছে অনেক কম বলেই মনে হবে। যদিও হরলান্ডের এজেন্ট মিনো রাইওলা ও বাবা আলফ ইঙ্গ হরলান্ডকেও কমিশন বাবদ আরও ২০ মিলিয়ন ইউরো দিতে হয়েছে ডর্টমুন্ডকে। তাও, যে ছেলে এভাবে এভাবে উঠতে-বসতে গোল করছে, তাঁর জন্য এতটুকু খরচ করাই যায়।

সে প্রমাণটাই কালকে দিলেন তিনি। অগসবুর্গের মাঠে খেলতে গিয়েছিল ডর্টমুন্ড। মূল একাদশে নামান হয়নি হরলান্ডকে। কিন্তু ৫৫ মিনিটের মধ্যেই ৩-১ গোলে পিছিয়ে পড়ার পর টনক নড়ে ডর্টমুন্ডের কোচ লুসিয়ান ফাভরের। বেঞ্চ থেকে নিজের সবচেয়ে বড় অস্ত্রকে মাঠে নামানোর সিদ্ধান্ত নেন তিনি। মাঠে নেমেই গোল করতে হরলান্ড সময় নেন মাত্র তিন মিনিট। আরেক তরুণ প্রতিভা জাডন সাঞ্চোর থ্রু পাস থেকে বল নিয়ে ডি-বক্সের মধ্যে বাম পায়ের জোরালো শটে গোল করে প্রথম গোল করেন হরলান্ড।

কিছুক্ষণ পর সাঞ্চো নিজেই গোল করেন। কিন্তু হরলান্ডের গল্পটা যে তখনই বাকি ছিল! ৭০ মিনিটে থরগান হ্যাজার্ডের পাসে গোল করার জন্য শুধু পা ঠেকালেই চলত হরলান্ডের, যেটা তিনি করতে ভুল করেননি। হয়ে গেল দুই গোল!

৭৯ মিনিটে মার্কো রয়েসের পাস ধরে বাম পায়ের শটে যেভাবে গোল করলেন, সেই এক শটেই তাঁকে বিশ্বমানের স্ট্রাইকার বলে দেওয়া যায়। মাঠে নামার ২৩ মিনিটের মধ্যেই হ্যাটট্রিক, ভাবা যায়!

মাত্র সপ্তম ফুটবলার হিসেবে জার্মান লিগের অভিষেকে হ্যাটট্রিক করলেন হরলান্ড। ডর্টমুন্ডের হয়ে হালান্ডের আগে অভিষেকে হ্যাটট্রিক করেছিলেন গ্যাবনের স্ট্রাইকার পিয়েরে-এমেরিক অবামেয়াং, তাও সেই সাত বছর আগের কথা। মৌসুমের মাঝপথে সব মিলিয়ে হরলান্ডের হ্যাটট্রিক সংখ্যা এখন ৬টি। মাত্র ২৩ ম্যাচ খেলে গোল ৩১টি।

থামাবে কে হরলান্ডকে?