মতিনের জোড়া গোল, বড় জয়ে সেমিতে বাংলাদেশ

দলকে জেতানো মতিনকে ঘিরে উল্লাস সবার। ছবি: শামসুল হক
দলকে জেতানো মতিনকে ঘিরে উল্লাস সবার। ছবি: শামসুল হক
>শ্রীলঙ্কাকে ৩-০ গোলে হারিয়ে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের সেমিফাইনালে পা রেখেছে বাংলাদেশ।

বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জিততেই নেমেছিল বাংলাদেশ। সেমিফাইনালে যেতে যে জয় ছাড়া আর কোনো পথ ছিল না। অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়ার অনুপস্থিতি ফুটবলপ্রেমীদের মনে কিছুটা চিন্তার উদ্রেক করলেও জেমি ডের দল আর হতাশ করেনি। আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলেই আজ সাদ-সুফিল-মতিন মিয়া-ইব্রাহিমরা জয় তুলে নিয়েছেন ৩-০ গোলের।

মতিন পেয়েছেন জোড়া গোল। তবে দারুণ এই জয়ে কিছুটা কালিমা পড়েছে শেষ দিকে তপু বর্মণের লাল কার্ড দেখা। সেমিফাইনালে বুরুন্ডির বিপক্ষে যে দেশসেরা এই ডিফেন্ডারকে পাচ্ছে না বাংলাদেশ।

জোড়া গোলেই কেবল নয়, দুর্দান্ত গতিময় ফুটবল উপহার দিয়ে শ্রীলঙ্কান রক্ষণকে বারবার ব্যতিব্যস্ত করেছেন মতিন। আজ বাংলাদেশের জয়ের নায়ক তিনিই। জাতীয় দলে অভিষেকটা আগে হলেও দেশের জার্সিতে এই প্রথম গোল পেলেন, প্রথমবারেই জোড়া গোল। অপর গোলটি করেছেন উইঙ্গার মোহাম্মদ ইব্রাহিম।

প্রতি-আক্রমণভিত্তিক ফুটবল থেকে বের হয়ে এসে আজ আক্রমণাত্মক ফুটবলে খেলেছে বাংলাদেশ। দুই স্ট্রাইকার মাহবুবুর রহমান সুফিল ও মতিন মিয়াকে নিয়ে ৪-৪-২ ফরমেশনে শুরু থেকেই বাংলাদেশ ছিল গোলের জন্য মরিয়া। দ্রুতগতির এই দুই স্ট্রাইকারের সঙ্গে উইঙ্গার ইব্রাহিমের ঝোড়ো গতি লঙ্কান রক্ষণকে কাঁপিয়ে দিয়েছে বারবার। সহজ সুযোগ নষ্টের মহড়া ও ব্যক্তিগত কারিকুরি দেখাতে গিয়ে এলোমেলো না করলে বাংলাদেশের জয়ের ব্যবধানটা হতে পারত আরও বড়।

১১ মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারত বাংলাদেশ। কিন্তু ইব্রাহিমের ক্রসে গোলমুখে কেন বলটি নিয়ন্ত্রণে নিতে গেলেন সাদউদ্দিন, তা বোঝা গেল না। ৫ মিনিট পরেই অভিষিক্ত মানিক হোসেন মোল্লা ও মতিন মিয়ার রসায়নে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। হোল্ডিং মিডফিল্ডার মানিকের এরিয়াল থ্রু বক্সের মধ্যে বাঁ পায়ে দারুণভাবে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ডান পায়ের শটে প্রথম গোলটি করেন মতিন।

নিয়মিত অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়ার স্থলে আজ অভিষিক্ত হওয়া মানিকের প্রশংসা করতেই হবে। দুই সেন্টারব্যাক তপু বর্মণ ও রিয়াদুল হাসানের সামনে দাঁড়িয়ে রক্ষণভাগকে ছায়া দিয়ে গেলেন পুরো ম্যাচ। প্রতিপক্ষের পা থেকে বল কেড়ে নিতে জুড়ি নেই তাঁর। রক্ষণাত্মক কৌশলের সঙ্গে রক্ষণচেরা থ্রু দিতেও পারদর্শী এই মিডফিল্ডার।

৬৪ মিনিটে মতিনের দ্বিতীয় সলো মুভে। মাঝমাঠ থেকে শ্রীলঙ্কার এক ডিফেন্ডারের পা থেকে বল কেড়ে নিয়ে বাঁ প্রান্ত দিয়ে দ্রুতগতিতে ভেতরের দিকে ঢুকে ইনসাইড ডজে গোলরক্ষককে কাটিয়ে গোলটি করেছেন মতিন। কিন্তু আজ তো গোলের নেশা পেয়ে বসেছিল বাংলাদেশকে। ৮৩ মিনিটে ৩-০ করলেন ইব্রাহিম। বদলি রাকিব হোসেনের ক্রস থেকে গোলমুখে টোকা দিয়ে গোলটি করেছেন এই উইঙ্গার।

বঙ্গবন্ধুতে আজ দুর্দান্ত এক বাংলাদেশকে দেখা গেল। আক্রমণাত্মক ফুটবল দর্শকদের দিয়েছে আনন্দ। তবে আক্ষেপটা তপুর ওই লাল কার্ডই।