এমবাপ্পে এখন কিছুই বলবেন না

দূরে তাকিয়ে কি রিয়ালের হাতছানি দেখতে পাচ্ছেন এমবাপ্পে? ছবি: এএফপি
দূরে তাকিয়ে কি রিয়ালের হাতছানি দেখতে পাচ্ছেন এমবাপ্পে? ছবি: এএফপি

হবে কি হবে না, তা ছাপিয়ে প্রশ্নটা অনেকটা এখন—কখন হবে? কখন পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে যাবেন কিলিয়ান এমবাপ্পে?

কোনো একদিন রিয়াল মাদ্রিদে খেলা যে তাঁর ছোটবেলার স্বপ্ন, সে কথা এমবাপ্পে নিজেই অনেকবার বলেছেন। তাঁর ছোটবেলার পছন্দের কোচ ছিলেন ফরাসি কিংবদন্তি ও বর্তমান রিয়াল কোচ জিনেদিন জিদান, বড় হয়ে ভালো লাগত রিয়ালে ৯টি সোনালি বছর কাটিয়ে গত মৌসুমেই জুভেন্টাসে যাওয়া ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর খেলা। বিশ্বকাপজয়ী ২১ বছর বয়সী ফরাসি স্ট্রাইকারকে পেতে রিয়ালের আগ্রহও বলতে গেলে এখন সর্বজনবিদিত। জিদান তো সংবাদমাধ্যমে খোলাখুলিই বেশ কয়েকবার এমবাপ্পের প্রতি নিজের মুগ্ধতার কথা জানিয়েছেন। সব মিলিয়ে গুঞ্জন, আগামী মৌসুমের শুরুতেই পিএসজিকে বিদায় জানিয়ে রিয়ালকে নিজের ঘর বানিয়ে নিতে পারেন এমবাপ্পে।

এ ব্যাপারে এমবাপ্পে কী বলছেন? ফ্রেঞ্চ স্ট্রাইকার আপাতত ‘স্পিকটিনট।’ মুখে তালা মেরে রেখেছেন। কারণ? এমবাপ্পের কথা, তিনি এখন যা-ই বলবেন, তাতেই আলোচনার ঝড় উঠবে চারিদিকে। এমবাপ্পে তাই এখন কিছু বলবেন না।

ভুল কিছু অবশ্য বলেননি এমবাপ্পে। বয়স, ফর্ম, সম্ভাবনা, দলবদলের সম্ভাব্য মূল্য—সব মিলিয়ে দলবদলের বাজারে এই মুহূর্তে সবচেয়ে প্রার্থিত ফুটবলারের নামই কিলিয়ান এমবাপ্পে। সেই এমবাপ্পে রিয়ালে যাওয়ার গুঞ্জন নিয়ে ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ যা-ই বলুন, তা-ই তো বড় খবর! ফরাসি মহাতারকার চেয়ে সেটা আর ভালো কে বোঝে!

নিজের দাতব্য সংগঠন ‘ইন্সপায়ার্ড বাই কিলিয়ান এমবাপ্পে’-র উদ্বোধন অনুষ্ঠানে রিয়ালে যাওয়া-না যাওয়ার প্রশ্নে এমবাপ্পে তাই বললেন, ‘সবাই এটা নিয়ে কথা বলে। যখন ছোট ছিলাম, আমিও বলতাম। কিন্তু আমি এখন একজন খেলোয়াড়, আর আমি জানি এ নিয়ে কথা বলার সময় এখন নয়।’ কেন নয়, সে ব্যাখ্যাও দিলেন, ‘মাত্র জানুয়ারি চলছে—মৌসুমের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময় শুরু হবে এখন। ধরুন, আমি আপনার প্রশ্নটার উত্তর দিলাম, কিছু একটা বললাম। সবাই তখন এটা নিয়েই আলোচনা করবে। সেটা পিএসজির জন্য ভালো কিছু হবে না।’

তাঁর শেষ কথাটার অবশ্য অন্য অর্থও খুঁজে নেওয়া যায়। পিএসজির জন্য ভালো কিছু না হওয়া মানে তো রিয়ালের জন্য ভালো কিছু হওয়ারই সম্ভাবনা! এমবাপ্পে অত আলোচনায় গেলেন না, বরং আপাতত পিএসজির প্রতিই তাঁর আনুগত্যের কথা জানিয়ে দিলেন আরেকবার, ‘এখন আমি পিএসজিতে আছি। শতভাগই দিচ্ছি ক্লাবটার জন্য। এই মৌসুমে আমি ক্লাবটাকে আরও বড় কিছুর দিকে ছুটতে সাহায্য করতে চাই। অনেক শিরোপা জেতাতে চাই। তাই আমার এখন ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা বলা উচিত হবে না।’

মোনাকোতে ২০১৬-১৭ মৌসুমে প্রথম কলি হয়ে ফোটা তাঁর, আর ফুলের সৌরভ ছড়াতে শুরু করেছেন পরের মৌসুমে পিএসজিতে এসে। এরপর পিএসজি আর ফ্রান্সের জার্সিতে ২১ বছরেই এমবাপ্পের মহাতারকা বনে যাওয়া। প্যারিসের ক্লাবটার প্রতি তাই এমবাপ্পের কৃতজ্ঞতা, ‘আমি ক্লাবটাকে নিয়ে ভাবি কারণ ক্লাবটা আমাকে সাহায্য করেছে। আমি এখানে এসেছি ১৮ বছর বয়সে। তখন আমি একটা প্রতিভা ছিলাম। এখন আমি মহাতারকা। সেজন্য পিএসজি আর ফ্রান্স জাতীয় দলকে ধন্যবাদ।’

শুধু কথায় তো চিড়ে ভেজে না, কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনের তাই সেরা উপায়টাতেও পাখির চোখ এমবাপ্পের। সে উপায়টা কী? দলকে শিরোপা জেতানো। তাঁর এই মৌসুমের স্বপ্ন, ইউরোপের কূলীন হয়ে ওঠার স্বপ্নে বিভোর পিএসজিকে ক্লাবের ইতিহাসের প্রথম চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতাবেন। আর ফ্রান্সের হয়ে ২০১৮ বিশ্বকাপ তো জিতেই গেছেন, এবার এমবাপ্পের চাওয়া ২০২০ ইউরো আর অলিম্পিক।