সবাই গেছে বাজারে, কিনবে স্ট্রাইকার

কাভানিকে চাচ্ছে ইউনাইটেড-অ্যাটলেটিকো। ছবি: এডিনসন কাভানির টুইটার পেজ
কাভানিকে চাচ্ছে ইউনাইটেড-অ্যাটলেটিকো। ছবি: এডিনসন কাভানির টুইটার পেজ
>

এক মাস ব্যাপী শীতকালীন দলবদলের বাকি আর মাত্র তিন দিন। গোটা মাসে নিজেদের দলে বেশ কয়েকজন নতুন খেলোয়াড় নিয়ে আসা ইন্টার মিলান এবার দলে টটেনহাম থেকে দলে এনেছে ডেনমার্কের মিডফিল্ডার ক্রিস্টিয়ান এরিকসেনকে। শেষ মুহূর্তে নতুন খেলোয়াড় আনার জন্য গা-ঝাড়া দিয়েছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও বার্সেলোনার মতো ক্লাবগুলো

বেশ কয়েক মাস ধরেই শোনা যাচ্ছিল, ক্লাব ছাড়তে পারেন টটেনহামের ক্রিস্টিয়ান এরিকসেন। চুক্তি শেষ হয়ে যাচ্ছিল স্পার্সের সঙ্গে, চুক্তি বৃদ্ধির প্রস্তাবে সাড়াও দেননি এরিকসেন। ওদিকে টটেনহামে আসা নতুন কোচ হোসে মরিনহো কখনোই নিজের কোনো ক্লাবে এমন কোনো খেলোয়াড়কে জোর করে রাখেননি, যে দলের হয়ে শতভাগ আত্মনিবেদন দিয়ে খেলে না। এই সুযোগের অপেক্ষাতেই যেন ছিল মরিনহোর সাবেক ক্লাব ইন্টার মিলান।

দুইয়ে দুইয়ে চার মিলেই গেল। ইন্টারে নাম লিখিয়েছেন এরিকসেন। চুক্তিতে ছয় মাস বাকি থাকা এরিকসেনের জন্য ইন্টারের কাছ থেকে ১৭ মিলিয়ন পাউন্ড আদায় করে নিয়েছে টটেনহাম। এরিকসেনের সাবেক ক্লাব আয়াক্সের সঙ্গে টটেনহামের একটা চুক্তি ছিল, টটেনহাম এরিকসেনকে বিক্রি করে দিলে সে দলবদলের অঙ্কের শতকরা দশ ভাগ আয়াক্সকে দিতে হবে। সেই অর্থও (১.৭ মিলিয়ন পাউন্ড) ইন্টারই আয়াক্সকে পরিশোধ করে দিয়েছে। ফলে লাভবান হয়েছে সংশ্লিষ্ট চার পক্ষই—চূড়ান্ত মিডফিল্ডার সংকটে থাকা ইন্টার একজন অসাধারণ মিডফিল্ডার পেয়েছে, চুক্তিতে মাত্র ছয় মাস বাকি থাকা তাদের হয়ে খেলতে অনিচ্ছুক একজন খেলোয়াড়ের জন্য টটেনহাম ১৭ মিলিয়ন পাউন্ড পেয়েছে, এরিকসেন নিজের পছন্দের একটা ক্লাবে যেতে পেরেছেন, ওদিকে আয়াক্সও কিছু অর্থকড়ি পেয়েছে!

এদিকে পিএসভি থেকে ডাচ উইঙ্গার স্টিভেন বার্গউইনকে পাওয়ার জন্য আলোচনা শুরু করেছে টটেনহাম। ২৬.২ মিলিয়ন পাউন্ড দিতে রাজি আছে তারা এই খেলোয়াড়টির জন্য। ওদিকে হ্যারি কেনের জায়গায় খেলানোর জন্য এসি মিলান থেকে পোলিশ স্ট্রাইকার ক্রিস্তফ পিওন্তেককেও আনছে তারা।

এদিকে গোটা মাস চুপচাপ থাকার পর শেষ দিকে বেশ কিছু খেলোয়াড় আনার ব্যাপারে তোড়জোড় করা শুরু করে দিয়েছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। তাদের পছন্দের তালিকায় আছে স্পোর্টিং লিসবনের ব্রুনো ফার্নান্দেজ ও পিএসজির এডিনসন কাভানি। ব্রুনো ফার্নান্দেজের জন্য এখনো স্পোর্টিংয়ের মন গলাতে পারেনি তারা। নিজেদের সবচেয়ে দামি খেলোয়াড়কে বেচার জন্য ৫১ মিলিয়ন পাউন্ড দাবি করেছে তারা। কিন্তু প্রথমে ব্রুনোর জন্য ৪২ মিলিয়ন পাউন্ডের বেশি দিতে চায়নি ইউনাইটেড। স্পোর্টিংও গতকাল মারিতিমোর সঙ্গে লিগ ম্যাচে ব্রুনো ফার্নান্দেজকে খেলিয়েছে আর অনুচ্চারে জানিয়ে দিয়েছে, প্রস্তাব না বাড়ালে ব্রুনোকে পাওয়া যাবে না। পর্তুগিজ সংবাদমাধ্যমের সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, ৫১ নয়, বরং ৪৬.৫ মিলিয়ন পাউন্ড পেলেই ব্রুনোকে ছেড়ে দেবে স্পোর্টিং। তবে বিভিন্ন শর্ত পূরণ বাবদ আগামী কয়েক বছরে আরও ১২.৫ মিলিয়ন পাউন্ড দিতে হবে ইউনাইটেডকে। স্পোর্টিংয়ের এই দাবি ইউনাইটেড মানবে কি না, জানা যায়নি।

ওদিকে মার্কাস রাশফোর্ডের চোটের কারণে স্ট্রাইকার সংকটে থাকা ইউনাইটেড নজর দিয়েছে পিএসজির এডিনসন কাভানির দিকে। এরিকসেনের মতো তাঁরও চলমান চুক্তির মেয়াদ মাত্র ছয় মাস। ১২.৭ মিলিয়ন পাউন্ড পেলে কাভানিকে বিক্রি করা হবে, ইউনাইটেডের মতো আগ্রহী ক্লাবগুলোকে জানিয়ে দিয়েছে ফরাসি ক্লাবটি। এদিকে কাভানিকে প্রতি সপ্তাহে বেতন বাবদ তিন লক্ষ ষাট হাজার পাউন্ড দিতে হবে। ফলে আগ্রহী ক্লাবগুলোকে সেটা নিয়েও ভাবতে হচ্ছে। তবে কাভানি নিজে ইউনাইটেড নয়, বরং অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদে ডিয়েগো সিমিওনের অধীনে খেলতে চান। অ্যাটলেটিকো আবার ছয় মাস চুক্তি থাকা খেলোয়াড়ের জন্য ১২.৭ মিলিয়ন পাউন্ড দিতে রাজি নয়, তারা প্রস্তাব দিয়েছে ৮.৪ মিলিয়ন পাউন্ডের। দেখা যাক, ইউনাইটেড এই অচলাবস্থার সুফল নিতে পারে কি না।

এদিকে হন্য হয়ে একটা স্ট্রাইকার খুঁজছে বার্সেলোনাও। ভ্যালেন্সিয়া থেকে স্প্যানিশ স্ট্রাইকার রদ্রিগো মরেনো আসতে পারেন দলটিতে। এর মধ্যে ভ্যালেন্সিয়ার সভাপতি বার্সেলোনায় গিয়েছেন এ নিয়ে আলোচনা করার জন্য।