রিয়ালের সাবেক স্ট্রাইকারকে চাইছে বার্সেলোনা

রদ্রিগো মোরেনো। ছবি: এএফপি
রদ্রিগো মোরেনো। ছবি: এএফপি
>বেশ কয়েক মাস ধরেই নতুন স্ট্রাইকার চাইছে বার্সেলোনা। লুইস সুয়ারেজের চোটে পড়ার পর সে চাহিদাটা বেড়েছে আরও। বেশ কিছু স্ট্রাইকারের দিকে নজর দেওয়ার পর শেষমেশ ভ্যালেন্সিয়ার স্প্যানিশ স্ট্রাইকার রদ্রিগো মোরেনোকে দলে আনার জন্য তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছে স্প্যানিশ চ্যাম্পিয়নরা

গত কোপা দেল রের ফাইনালে বার্সেলোনার ‘ডাবল’ জয়ের স্বপ্ন গুঁড়িয়ে দিয়েছিল ভ্যালেন্সিয়া। ২-১ গোলে হেরে এসেছিল বার্সেলোনা। দ্বিতীয় গোল করে বার্সার কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দিয়েছিলেন স্প্যানিশ স্ট্রাইকার রদ্রিগো মোরেনো।

যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত সিনেমা নির্মাতা, অভিনেতা ও কার্টুনিস্ট জিম হেনসনের একটা বিখ্যাত উক্তি আছে, যা যুগে যুগে প্রবাদবাক্যের মর্যাদা পেয়েছে, ‘ইফ ইউ ক্যান্ট বিট দেন, জয়েন দেম’ অর্থাৎ ‘যদি তাদের হারাতে না পার, তাদের সঙ্গে যোগ দাও।’ সেই প্রবাদবাক্যটাই যেন বার্সেলোনা একটু ঘুরিয়ে-পেঁচিয়ে মানার চেষ্টা করছে। এই সপ্তাহেই লিগেও ভ্যালেন্সিয়ার কাছে হেরেছে বার্সা। তাদের যেহেতু হারাতে এতই কষ্ট হচ্ছে, সেহেতু তাদের বড় শক্তিটাকে নিজেদের শিবিরে টেনে আনলেই হয়!

সে কাজটাই করতে চলেছে বার্সেলোনা। ভ্যালেন্সিয়ার স্প্যানিশ স্ট্রাইকার রদ্রিগো মোরেনোকে পাওয়ার জন্য চেষ্টা-চরিত্র করে চলেছে বার্সেলোনা। লুইস সুয়ারেজের চোটের কারণে এমনিতেই একটা স্ট্রাইকার লাগত তাদের, রদ্রিগোকে কিনে একই ঢিলে দুই পাখি মারার চেষ্টা করছে যেন স্প্যানিশ ক্লাবটি।

এর মধ্যে বার্সেলোনার সভাপতি জোসেপ মারিয়া বার্তোমেউ ব্যাপারটার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন, ‘ওর (রদ্রিগো) ব্যাপারে আমাদের কোচেরা ভাবছেন। এমনিতেই আমাদের একজন স্ট্রাইকার লাগবে। বিকল্প একজন স্ট্রাইকার এ মাসে দলে আসবেই। তবে সেটা বার্সেলোনার দ্বিতীয় দল থেকে আসবে নাকি বাইরের কোনো ক্লাব থেকে আসবে সে ব্যাপারে নিশ্চয়তা দিতে পারছি না।’

এর মধ্যে বার্সেলোনা তাদের ‘বি’ দলের প্রতিভাবান স্ট্রাইকার কার্লেস পেরেজকে ইতালিয়ান ক্লাব এএস রোমার কাছে বিক্রি করে দেওয়ার ব্যাপারে কথাবার্তা পাকা করেছে। স্প্যানিশ এই স্ট্রাইকারের জন্য রোমা বার্সাকে দিচ্ছে ১৩ মিলিয়ন ইউরোর মতো। রোমায় বসনিয়ার স্ট্রাইকার এডিন জেকোর সহকারী হিসেবে খেলবেন পেরেজ। ফলে বার্সেলোনার দ্বিতীয় দল থেকেও একজন স্ট্রাইকার কমে গিয়েছে। ফলে আরেকজন স্ট্রাইকার আসার সম্ভাবনাটা আরও উজ্জ্বল হয়েছে।

রিয়ালের বয়সভিত্তিক দলে খেলেছেন মোরেনো। ছবি : সংগৃহীত
রিয়ালের বয়সভিত্তিক দলে খেলেছেন মোরেনো। ছবি : সংগৃহীত

এই দলবদল নিয়ে বার্সেলোনার কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলার জন্য শহরটিতে এর মধ্যেই পা রেখেছেন ভ্যালেন্সিয়ার সভাপতি অনিল মুর্তি ও এজেন্ট হোর্হে মেন্ডেজ। ভ্যালেন্সিয়ার মালিক পিটার লিম ও রদ্রিগো—দুজনেরই সম্মতি আছে খেলোয়াড়ের বার্সেলোনায় যাওয়ার ব্যাপারে।

এদিকে গত দলবদলের সময় থেকেই রদ্রিগোর দাম ৫০.৬ মিলিয়ন পাউন্ড চাইছে ভ্যালেন্সিয়া। ছয় মাস আগে অ্যাটলেটিকো চেয়েছিল রদ্রিগোকে, টাকার অভাবের কারণে শেষ মুহূর্তে পছন্দের খেলোয়াড়কে কিনতে পারেনি কোচ ডিয়েগো সিমিওনে। তখনো ৫০.৬ মিলিয়ন পাউন্ডের এক পয়সা কমেও রাজি হয়নি ভ্যালেন্সিয়া। এবার বার্সেলোনার কাছেও একই দাম হেঁকেছে তারা। ওদিকে বার্সেলোনা চাইলেও রদ্রিগোর পেছনে এত খরচ করতে রাজি নয়, কেননা বছরের এই সময়ে এত টাকা খরচ করলে ‘ফিন্যান্সিয়াল ফেয়ার প্লে’র বেড়াজালে পড়তে হবে তাদের। ফলে আপাতত ছয় মাসের ধার চুক্তিতে রদ্রিগোকে চাইছে বার্সা। তাতে ভ্যালেন্সিয়া যদি রাজি না হয় তাহলে দাম কমানোর জন্য চুক্তিতে বার্সেলোনা ‘বি’ এর মোঞ্চু কিংবা রাইটব্যাক মুসা ওয়াগকে অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে বলে জানা গেছে।

মজার ব্যাপার হলো, রদ্রিগো বয়সভিত্তিক ফুটবলে রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে খেলতেন। মূল দলে সুযোগ না পেয়ে যোগ দেন পর্তুগিজ ক্লাব বেনফিকায়। সেখানে আলো ছড়িয়ে চলে আসেন ভ্যালেন্সিয়ায়।

দলবদলের বাকি আছে আর মাত্র ৪৮ ঘণ্টা। দেখা যাক, দুই দলের মধ্যে বোঝাপড়া হয় কি না!