ব্রায়ান্টের হেলিকপ্টারে 'সতর্ককারী যন্ত্র' ছিল না

কোবি ব্রায়ান্টকে বহনকারী হেলিকপ্টারের ধ্বংসাবশেষ। ছবি: এএফপি
কোবি ব্রায়ান্টকে বহনকারী হেলিকপ্টারের ধ্বংসাবশেষ। ছবি: এএফপি

হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় কোবি ব্রায়ান্ট তাঁর মেয়েসহ মোট ৯ জনের মৃত্যু নিয়ে তদন্ত করছে এফবিআই। সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ব্রায়ান্টকে বহনকারী সিকরস্কি এস-৭৬বি মডেলের হেলিকপ্টারটিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্র (ওয়ার্নিং ডিভাইস) সংযোজিত ছিল না। আকাশে উড়ন্ত অবস্থায় উঁচু কিছুর সঙ্গে আঘাত থেকে পাইলটকে সতর্ক করে দেওয়ার যন্ত্রটা ব্রায়ান্টের হেলিকপ্টারে ছিল না। গত রোববার হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত বাস্কেটবল কিংবদন্তি ও পাঁচবারের এনবিএ চ্যাম্পিয়ন কোবি ব্রায়ান্ট।

প্রতিটি এয়ারলাইনেই এমন যন্ত্র সংযোজন করা থাকে। তবে তদন্তকারীরা ঠিক নিশ্চিত নন, যন্ত্রটি ব্রায়ান্টের হেলিকপ্টারকে দুর্ঘটনা থেকে বাঁচাতে পারত কি না। তবে ক্যালিফোর্নিয়ার ক্যালাবাসেস পাহাড়ি অঞ্চলে ঘন কুয়াশার মধ্যে পাইলট সতর্ক থাকতে পারতেন যদি প্রযুক্তিটি সংযোজিত থাকত-জানিয়েছেন তদন্তকারীরা। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় পরিবহন নিরাপত্তা বোর্ডের (এনটিএসবি) সদস্য জেনিফার হোমেন্ডি জানিয়েছেন, ব্রায়ান্টের হেলিকপ্টার বামে তীক্ষ্ণ মোচড় নিয়ে সেকেন্ডে ২০০০ ফুট নিচে আছড়ে পড়েছে।

ব্রায়ান্টকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি পরিচালিত হচ্ছিল আইল্যান্ড এক্সপ্রেস ইনকরপোরেশনের তত্ত্বাবধানে। ঘন কুয়াশার মধ্যে ওড়ার অনুমতি ছিল না প্রতিষ্ঠানটির। ওই অঞ্চলে ঘন কুয়াশা ও মেঘের মধ্যে ওড়ার শেষ মুহূর্তে নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছিলেন পাইলট, জানিয়েছেন এনটিএসবির তদন্ত দলের সদস্য উইলিয়াম ইংলিশ। প্রয়াত বাস্কেটবল কিংবদন্তি ও তাঁর মেয়ের সঙ্গে যাত্রী ছিলেন আরও সাতজন। কেউ বেঁচে ফিরতে পারেনি। ৯টি মৃতদেহ উদ্ধার করেছেন তদন্তকারীরা।

পাইলট ওড়ার জন্য ওই পথ বেছে নিয়েছিলেন কেন, তার কারণ এখনো খুঁজে বের করতে পারেনি তদন্ত দল। গোটা তদন্ত শেষ হতে এক বছর থেকে ১৮ মাস লাগতে পারে। তবে ১০ দিনের মধ্যে তারা প্রাথমিক একটি প্রতিবেদন জমা দেবেন। দুর্ঘটনার আগে একদম শেষ মুহূর্তে পাইলট রেডিও যোগাযোগ করে জানিয়েছিলেন ঘন কুয়াশা ও মেঘের আস্তরণ এড়াতে তিনি আরও উঁচুতে উঠছেন। এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার তাকে জিজ্ঞেস করছিলেন, ঠিক কী করতে চান? কিন্তু কোনো জবাব আসেনি।

ব্রায়ান্টের দুর্ঘটনার আগে আইল্যান্ড ইনকরপোরেশনের তত্ত্বাবধানে আরও চারটি দুর্ঘটনা ঘটেছে গত ৩৫ বছরে। সরকারি নথি অনুযায়ী ১৯৮৫ সালের দুর্ঘটনায় মারা যান ৪জন। সেটি ছিল মাঝ আকাশে সংঘর্ষ। ২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠানটিকে দুর্ঘটনার জন্য জরিমানাও গুনতে হয়েছে। তবে ব্রায়ান্টের দুর্ঘটনার সঙ্গে আগের ঘটনার কোনো সংযোগ বা প্রতিষ্ঠানের গাফিলতি আছে কি না তদন্তকারী দল তা এখনো নিশ্চিত করতে পারেনি।