উড়ে গেল প্রোটিয়ারা, যুব বিশ্বকাপের সেমিতে বাংলাদেশ

দারুণ জয়ে যুব বিশ্বকাপের সেমিতে বাংলাদেশ। ছবি: আইসিসি টুইটার
দারুণ জয়ে যুব বিশ্বকাপের সেমিতে বাংলাদেশ। ছবি: আইসিসি টুইটার
>কোয়ার্টার ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ১০৪ রানে হারিয়ে যুব বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে বাংলাদেশ

ম্যাচ শেষ হতেই ধারাভাষ্যকার বললেন, ‘দারুণ পেশাদারি পারফরম্যান্স।’

আসলেই তাই! যুব বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে বাংলাদেশের যুবারা হারাল পেশাদারি ক্রিকেট খেলেই। অনূর্ধ্ব-১৯ পর্যায়ে পেশাদারি মানসিকতা আশা করাটা অনেক সময় বাড়াবাড়ি হয়ে যায়। কিন্তু পচেফস্ট্রুমে আজ তৌহিদ হৃদয়, তানজিদ হাসান, শাহাদাত হোসেন, রকিবুল হাসানরা যে ক্রিকেট খেললেন, তাতে ‘পেশাদারি’ শব্দটিকে এড়িয়ে যাওয়ার উপায় নেই।

২৬২ রানের লক্ষ্য চ্যালেঞ্জিংই ছিল স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য। সেটি পচেফস্ট্রুমের মন্থর উইকেটে বাংলাদেশ দলে স্পিনারদের আধিক্যের কারণেই। বাঁ হাতি স্পিনার রকিবুল হাসান যে বোলিংটা করলেন, তার সামনে কেবল ছটফটই করেছে স্বাগতিকেরা। ১৯ রানে ৫ উইকেট নিয়ে রকিবুল বলতে গেলে একাই শেষ করে দিয়েছেন তাদের। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পক্ষে দ্বিতীয় সেরা বোলিং পারফরম্যান্স এটি।

রকিবুল একাই নন। মিডিয়াম পেসার তানজিম হাসান সাকিব, অফ স্পিনার শামীম হোসেন কিংবা বাঁ হাতি মিডিয়াম পেসার শরিফুল হাসানরাও বিনা চ্যালেঞ্জে ছাড়েননি দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটসম্যানদের। তানজিম ৪১ রানে নেন ২ উইকেট, শরিফুল আর শামী দুজনেই নেন একটি করে উইকেট। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে লুক বিউফোর্ট একাই লড়েছেন। ৯১ বলে ৬ বাউন্ডারিতে তাঁর ৬০ রান শুধু হারের ব্যবধানই কমিয়েছে। ওপেনার জোনাথন বার্ড করেছেন ৩৫ রান। ইনিংসের শুরুতেই অধিনায়ক ও উইকেটরক্ষক আকবর আলী বার্ডের ক্যাচ ফেলেছিলেন। কিন্তু সেটি খুব বড় সমস্যা হয়ে দেখা দেয়নি।

দিনের শুরুতে আগ্রাসন ছিল তানজিদ হাসানের ব্যাটে। তাঁর অনবদ্য ব্যাটিংই গড়ে দেয় জয়ের ভিত। অবশ্য দুর্দান্ত সব স্ট্রোক খেলে তাঁর ৮৪ বলে ৮০ রানের ইনিংসটি আরও বড় হতে পারত। ওপেনিং জুটিতে তানজিদ আর পারভেজ হোসেন ৬০ রানের জুটি গড়ে ভালো শুরু এনে দেন দলকে। এরপর তৌহিদকে সঙ্গে নিয়ে তানজিদ গড়েন আরও ৫৭ রানের জুটি। তবে বাংলাদেশের ইনিংসের সবচেয়ে আকর্ষণীয় অংশ চতুর্থ উইকেটে শাহাদত আর তৌহিদের ১০২ রানের জুটি। এ দুজনের ব্যাটই বাংলাদেশের সংগ্রহকে নিয়ে যায় ২৬১-তে। শাহাদত ৭৬ বলে অপরাজিত ৭৪ রানে। তৌহিদ ৭৩ বলে করেন ৫১। দুজন মিলে শেষ ১০ ওভারেই নেন ৭৯ রান।

বাংলাদেশের ছুড়ে দেওয়া চ্যালেঞ্জটা নিতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। এবার বাংলাদেশের সামনেই নতুন চ্যালেঞ্জ। আকবর আলীর দল কী পারবে প্রথমবারের মতো যুব বিশ্বকাপের ফাইনালে জায়গা করে নিতে! সে জন্য ৬ ফেব্রুয়ারি সেমিফাইনালে পার হতে হবে নিউজিল্যান্ড-বাধা। যুব বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে এর আগে মাত্র একবারই উঠেছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল, ২০১৬ সালে।