কুষ্টিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় জাতীয় হ্যান্ডবল দলের সোহানসহ নিহত ২

ডিসেম্বরে নেপালে এসএ গেমস খেলে এসেছিলেন সোহান। ছবি: সংগৃহীত
ডিসেম্বরে নেপালে এসএ গেমস খেলে এসেছিলেন সোহান। ছবি: সংগৃহীত

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় জাতীয় হ্যান্ডবল দলের গোলরক্ষক সোহানুর রহমানসহ দুজন নিহত হয়েছেন। আজ শুক্রবার সকাল ১০টায় ভেড়ামারা-প্রাগপুর সড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

সোহানুর (২১) দৌলতপুর উপজেলার বাহিরমাদি গ্রামের কালু মন্ডলের ছেলে। নিহত অপরজন সোহানের আত্মীয় একই এলাকার শহিদুল ইসলামের ছেলে সোলাইমান (২১)। তাঁরা দুজন মোটরসাইকেল আরোহী ছিলেন।

সোহান গত ডিসেম্বরেই নেপালে খেলে এসেছেন এসএ গেমস। সোহানের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে হ্যান্ডবল ফেডারেশনে। হ্যান্ডবল ফেডারেশনের কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম বলেন, ‘সোহান খুবই সম্ভাবনাময় খেলোয়াড় ছিল। ওর মৃত্যুতে বড় ক্ষতি হয়ে গেল জাতীয় দলের।’

সোহানের সঙ্গে মোটরসাইকেলে থাকা সোলাইমান
সোহানের সঙ্গে মোটরসাইকেলে থাকা সোলাইমান

প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা গেছে, দৌলতপুর উপজেলার হোসেনাবাদ বাজারের অদূরে একটি দূরপাল্লার বাসকে অতিক্রম করছিল সোহান। এ সময় সামনে থাকা একটি নসিমনের (ইঞ্জিন চালিত তিন চাকার যান) সঙ্গে তাঁর মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ হয়। এতে সোহান ও তাঁর পেছনে বসে থাকা সোলাইমান ওই গাড়ির নিচে ছিটকে পড়েন।

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, দুপুর বারটায় এই দুজনকে হাসপাতালে আনা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় আড়াইটার দিকে সোলাইমান মারা যান। উন্নত চিকিৎসার জন্য সোহানুরকে অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকায় পাঠানো হয়। পথে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে সোহানুরও মারা যান।

মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে সোহানুরের বাবা কালু মণ্ডল প্রথম আলোকে বলেন, অ্যাম্বুলেন্স রাজবাড়ীতে পৌঁছার পর সোহান মারা যান। তাঁর লাশ গ্রামের বাড়িতে নেওয়া হচ্ছে।

দুর্ঘটনা কবলিত সোহানের মোটরসাইকেল। ছবি: সংগৃহীত
দুর্ঘটনা কবলিত সোহানের মোটরসাইকেল। ছবি: সংগৃহীত

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক তাপস কুমার সরকার প্রথম আলোকে বলেন, দুজনের দুই পায় ভেঙে প্রচুর রক্ত ক্ষরণ হয়েছে। মাথায় আঘাত পেয়েছিল। ধারণা করা হচ্ছে রক্তক্ষরণেরই তাঁদের মৃত্যু হয়েছে।

সোহানুরের পারিবারিক সূত্র জানায়, তাঁরা চার ভাই। সবার বড় ছিলেন সোহান। বাকি তিন ভাই ছোট। বাবা কালু মণ্ডল পেশায় কাঠমিস্ত্রি।

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গের সামনে সোলাইমানের মামাতো ভাই মিঠুন আলী বলেন, সোলাইমান ও সোহান নিকট আত্মীয় ও একে অপরের বন্ধু ছিল। সোলাইমান যশোরে তাঁর মামার কাছে থাকতেন। সেখানে পড়াশোনার পাশাপাশি কাজ করতেন। কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে বিকেল পৌনে পাঁচটায় সোলাইমানের লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়।

তিন চাকার এই বাহনের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় সোহানের মোটরসাইকেলের। ছবি: সংগৃহীত
তিন চাকার এই বাহনের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় সোহানের মোটরসাইকেলের। ছবি: সংগৃহীত

দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আরিফুর রহমান স্থানীয়দের বরাত দিয়ে বিকেল পাঁচটায় প্রথম আলোকে বলেন, সকাল দশটার দিকে সোলাইমানসহ সোহান মোটরসাইকেল চালিয়ে আল্লাহরদর্গা এলাকার দিকে যাচ্ছিলেন। হোসেনাবাদ এলাকায় ঢাকাগামী দূরপাল্লার জেআর পরিবহনকে অতিক্রম করতে যান। এ সময় সামনে থাকা স্টিয়ারিং গাড়ির (নসিমন) সঙ্গে ধাক্কা লেগে সড়কে ছিটকে বাসের সামনে গিয়ে পড়েন। স্থানীয়রা তাঁদের উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেয়।