লাল কার্ড বিতর্ক, উত্তেজনা, সব শেষে মরিনহোর গ্লানির রেকর্ড

ম্যাচে কিছু একটা নিয়ে বেশ ভাবনায় মগ্ন হয়ে পড়েছিলেন মরিনহো। ছবি: রয়টার্স
ম্যাচে কিছু একটা নিয়ে বেশ ভাবনায় মগ্ন হয়ে পড়েছিলেন মরিনহো। ছবি: রয়টার্স
চেলসির মাঠে ২-১ গোলে হেরেছে টটেনহাম। শীর্ষ চারে থেকে আগামী মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলার দৌড়ে পিছিয়ে পড়ল হোসে মরিনহোর দল


বেনফিকা আর ইউনিয়াও দে লেইরিয়াতে প্রথম দুই মৌসুম হিসেব থেকে না হয় বাদই দিন! হোসে মরিনহোর ফুটবলে নাম কামানো শুরু পোর্তো থেকে, সেই পোর্তো থেকেই হিসেব করা যাক। ২০০২ সালে পর্তুগিজ ক্লাবটির দায়িত্ব নিয়ে প্রথম চমক দেখান মরিনহোর, এরপর চেলসিতে দুই দফা আর ইন্টার মিলান, রিয়াল মাদ্রিদ, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড হয়ে এখন টটেনহাম হটস্পারে কেটে গেছে ১৮টি বছর। কিন্তু এত বছরে এর আগে মরিনহোকে যে স্বাদ আর কোনো দল দিতে পারেনি, সেটিই কিনা এবার তিনি উপহার পেলেন নিজেরই সাবেক এক ‘শিষ্যে’র কাছে!

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে আজ তাঁর সাবেক ক্লাব চেলসির মাঠে ২-১ গোলে হেরেছে মরিনহোর টটেনহাম। এর আগে গত ডিসেম্বরেও চেলসির কাছে নিজেদের মাঠে ২-০ গোলে হেরেছিল মরিনহোর দল। তাতেই গ্লানির এক রেকর্ড জুটল মরিনহোর কপালে। তাঁর এত বছরের কোচিং ক্যারিয়ারে লিগে নিজের ও পরের—দুই মাঠেই পর্তুগিজ কোচের দলকে হারানো প্রথম ক্লাব চেলসি। তা-ও কোন চেলসি? মরিনহোর সাবেক ক্লাব তো বটেই, চেলসিতে মরিনহোরই কোচিংয়ে এক সময় মাঠে আলো ছড়ানো ফ্র্যাঙ্ক ল্যাম্পার্ড এ মৌসুমে সে ক্লাবের ডাগআউটে। শিষ্যের কাছেই গ্লানির রেকর্ড ‘উপহার’ পেলেন মরিনহো।

গত নভেম্বরে মরিনহো দায়িত্ব নেওয়ার পর ১৫ ম্যাচে এটি টটেনহামের পঞ্চম হার। এই হারে প্রিমিয়ার লিগের শীর্ষ চারে থেকে আগামী মৌসুমের চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলার দৌড়েও পিছিয়ে পড়েছে স্পার্স। ২৭ ম্যাচে ৪০ পয়েন্ট নিয়ে এই মুহূর্তে পয়েন্ট তালিকার পাঁচে আছে টটেনহাম, সমান ম্যাচে তাদের চেয়ে ৪ পয়েন্ট বেশি নিয়ে চারে চেলসি। ছয় নম্বরে থাকা শেফিল্ড ইউনাইটেড (২৬ ম্যাচে ৩৯ পয়েন্ট, ২৭তম ম্যাচটি আজ বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় ব্রাইটনের বিপক্ষে) আর সাত নম্বরে থাকা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড (২৬ ম্যাচে ৩৮ পয়েন্ট, ২৭তম ম্যাচটি কাল ওয়াটফোর্ডের বিপক্ষে) নিজেদের ম্যাচ জিতলে ছাড়িয়ে যাবে টটেনহামকে।

চোটে পড়ে দলের মূল দুই ভরসা হ্যারি কেন আর সন হিউং-মিন মাঠের বাইরে থাকাতেই হয়তো এমন দশা টটেনহামের। ১৫ মিনিটেই অলিভিয়ের জিরুর গোলে এগিয়ে যায় চেলসি। মাঝমাঠ থেকে জর্জিনিওর দারুণ রক্ষণচেরা পাস স্পার্স বক্সের সামনে খুঁজে নেয় জিরুকে। তাঁর প্রথম শটটি ফিরিয়ে দেন স্পার্স গোলকিপার হুগো লরিস। ফিরতি বলে চেলসি মিডফিল্ডার রস বার্কলির শট লাগে পোস্টে। বল আবার এসে পড়ে জিরুর পায়ে, তাঁর শট এবার খুঁজে নেয় জাল।

বিরতি থেকে ফিরে তৃতীয় মিনিটেই আবার গোল চেলসির। এবার মার্কোস আলোনসো। বক্সের প্রান্তে বার্কলির পাস পেয়ে প্রথম স্পর্শেই শট নেন আলোনসো, বাঁ পায়ের শটটা লরিসকে ফাঁকি দিয়ে জড়ায় জালে। টটেনহামের ভাগ্য ভালো বলতে হবে। এর চার মিনিট পর দলটা দশ জনেরও হয়ে পড়তে পারত! চেলসি রাইটব্যাক সেজার আসপিলিকেতার পা মাড়িয়ে দেন টটেনহামের জিওভান্নি লো সেলসো, কিন্তু রেফারি তো কিছু দেনইনি, ভিএআরও কোনো শাস্তি দেয়নি টটেনহামের আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডারকে। ৮২ মিনিটে আলোনসোরই শট বারে লেগে ফিরে না এলে টটেনহামের হারটা আরও বড় ব্যবধানেরই হতো।

তা হয়নি, বরং ম্যাচের শেষ পাঁচ-ছয় মিনিট চেলসি উল্টো কাটিয়েছে পয়েন্ট হারানোর শঙ্কায়। ৮৯ মিনিটে টটেনহামের এরিক লামেলার শট চেলসি ডিফেন্ডার আন্টোনিও রুডিগারের পায়ে লেগে ঢোকে জালে, গোলটাকে রুডিগারের আত্মঘাতীই ধরা হচ্ছে। তবে এরপরের এক মিনিট আর যোগ করা সময়ের পাঁচ মিনিটে আর সমতায় ফেরা হয়নি টটেনহামের।