বার্সেলোনা মেসি-নির্ভর দল, মানতে আপত্তি নেই কোচের

ম্যাচে মেসির দিকেই তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে পুরো বার্সেলোনাকে। ছবি: রয়টার্স
ম্যাচে মেসির দিকেই তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে পুরো বার্সেলোনাকে। ছবি: রয়টার্স

একটা ম্যাচ কত কিছুই না বদলে দেয়! এল ক্লাসিকোর আগেও খুব একটা খারাপ অবস্থা ছিল না বার্সেলোনার। লিগে রিয়াল মাদ্রিদের চেয়ে দুই পয়েন্ট এগিয়ে ছিল। চ্যাম্পিয়নস লিগে নাপোলির মাঠ থেকে ড্র নিয়ে ফিরেছে। ১ মার্চ রিয়াল মাদ্রিদের চেয়ে বেশ ভালো অবস্থানেই ছিল প্রতিদ্বন্দ্বীরা। কিন্তু ক্লাসিকোতে ২-০ ব্যবধানে হারের পরই যেন মহা সংকটে পড়ে গেছে দল। খুব বেশি মেসি-নির্ভর হয়ে পড়ছে কি না বার্সেলোনা, সে আলোচনাও চলছে। এমন অবস্থায় কোচ কিকে সেতিয়েন বলছেন, বার্সেলোনা যে মেসিকে কেন্দ্র করেই খেলে এটা স্বীকার করে নিতে আপত্তি নেই তাঁর।

চোটাঘাতে ক্লান্ত দল। আক্রমণভাগে লুইস সুয়ারেজ ও উসমানে ডেম্বেলে পুরো মৌসুমের জন্য ছিটকে গেছেন। আঁতোয়ান গ্রিজমান ও লিওনেল মেসিকেই গোল করার দায়িত্ব ভাগ করে নিতে হয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে তলব করে আনা হলেও এখনো মূল একাদশে নামার মতো নন মার্টিন ব্রাথওয়েট। এমন পরিস্থিতিতে বার্সেলোনার খেলার মাঝে কোনো প্রাণ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। পুরো দল মেসির কোনো জাদুকরী মুহূর্তের অপেক্ষায় বসে থাকছে। তেমন কিছু ঘটলেই শুধু জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ছে তারা।

রিয়াল মাদ্রিদের মাঠে অমন কিছু হয়নি। দলের পারফরম্যান্স সমর্থক ও কোচের হতাশা বাড়িয়েছে। সহকারী কোচ তো ডাগআউট থেকে গালাগালিও করেছেন খেলোয়াড়দের। সে জন্য তাঁকে ক্ষমা চাইতে হয়েছে এরই মাঝে। এমন অবস্থায় রিয়াল সোসিয়েদাদের মাঠে খেলতে যাচ্ছে বার্সেলোনা। ফর্মে থাকা সোসিয়েদাদের মাঠে মূল স্কোয়াডের মাত্র ১৫ জনকে সুস্থ পাচ্ছেন বার্সা কোচ। এ অবস্থায় মেসির ওপরই সব দায়িত্ব দিয়েছেন কোচ, ‘এটা সত্য যে কিছু খেলোয়াড় সব সময় ওকে বল দেওয়ার চেষ্টা করে। আমি হলেও তাই করতাম। মেসি দলের ৯০ ভাগ ম্যাচেরই ফল এনে দিয়েছে। আমি তো সব সময় খেলোয়াড়দের বলি যদি বল সঠিক জায়গায় থাকে তবে ম্যাচের ফলও সঠিক হয়। এ কারণেই তারা ওকে খুঁজে নেয়। এই নির্ভরতা স্বাভাবিক। আমি চাইব ওরা যেন সেটাই করে, তাহলেই আমি নিশ্চিন্ত থাকব।’

যদিও সেতিয়েনকে বার্সেলোনায় নেওয়া হয়েছিল অন্য কারণে। অতি মাত্রায় মেসি নির্ভরতায় ছিল সাবেক কোচ আর্নেস্তো ভালভার্দেরও। সে কারণেই ফল পেলেও ভালভার্দের খেলায় বিরক্ত হয়ে উঠেছিল বার্সেলোনা সমর্থকেরা। লিগের শীর্ষে ও চ্যাম্পিয়নস লিগের গ্রুপ পর্বেও চ্যাম্পিয়ন হয়েও তাই চাকরিচ্যুত হয়েছেন ভালভার্দে। এমন অবস্থায় সেতিয়েনকে ডেকে আনা হয়েছিল বার্সেলোনার পরিচিত ফুটবল ফিরিয়ে আনার জন্য। ইয়োহান ক্রুইফের দেখানো পাসিং ফুটবল আর সুন্দর ফুটবলের আশা দেখানো সেতিয়েন সেটা ম্যাচ পূর্ব সম্মেলনে স্বীকারও করেছেন, ‘অনেকেই বলত আমার বার্সেলোনার কোচ হওয়া উচিত। আমার সেটা মনে হতো না। আমি কী করেছি? আমার সিভিতে কী আছে? তবে বার্সেলোনা যেভাবে খেলতে চায় আমিও সেভাবেই ভাবি। এ কারণেই বার্সেলোনা ডেকেছে আমাকে।’

মেসি নির্ভর হয়েও যদি সেই ফুটবল উপহার দিতে পারেন সেতিয়েন তাহলে কারও এতে আপত্তি থাকবে না। কিন্তু ব্যর্থ হলেই যে বিপদ!