'জীবনের চেয়ে টাকা বড় নয়'

করোনাভাইরাসের ঝুঁকির মাঝে ফুটবল খেলতে চাইছেন না বালোতেল্লি। ছবি: বালোতেল্লি ইনস্টাগ্রাম
করোনাভাইরাসের ঝুঁকির মাঝে ফুটবল খেলতে চাইছেন না বালোতেল্লি। ছবি: বালোতেল্লি ইনস্টাগ্রাম

করোনাভাইরাসের ভয়াল রূপ টের পাচ্ছে ইতালি। এই ভাইরাসে দেশটিতে মৃত মানুষের সংখ্যা ৩৬০ ছাড়িয়েছে। দেশটির এক-তৃতীয়াংশ জনগণকে গৃহবন্দী করার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। ১ কোটি ৫০ লাখ মানুষকে ঘরে বসে থাকার নির্দেশের মাঝে আগামী ৩ এপ্রিল পর্যন্ত সিরি ‘আ’র সব ম্যাচ দর্শকবিহীন মাঠে খেলানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গতকাল রাতে দর্শকহীন মাঠে ইন্টার মিলানকে ২-০ গোলে হারিয়েছে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর জুভেন্টাস।

ইতালিয়ান ফুটবলারদের অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি দামিয়ানো তোমাসি এতেই সন্তুষ্ট নন। তাঁর দাবি অনতিবিলম্বে লিগের সব খেলা থামিয়ে দেওয়া উচিত। ইতালির উত্তরাঞ্চলে গৃহবন্দী করার নির্দেশের আগেই তোমাসি টুইটারে লিখেছেন, ‘লিগ থামাও। আমাদের আরও (সংক্রমণ) কিছু দরকার? ফুটবল থামাও। আগে স্বাস্থ্য, পরে অন্য কিছু।’ পরে ইতালিয়ান ফুটবল ফেডারেশন সভাপতি ও দেশটির ক্রীড়ামন্ত্রীও এ ব্যাপারে তাদের সম্মতির কথা জানিয়েছেন। ইতালিয়ান স্ট্রাইকার মারিও বালোতেল্লিও করোনাভাইরাসের সংক্রমণের মাঝে ফুটবল খেলার ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছেন কাল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

তোমাসির ওই টুইটের পর বর্তমানে ব্রেসিয়ার হয়ে খেলা বালোতেল্লি আবেগপ্রবণ এক লেখা দিয়েছেন। করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া অঞ্চলে আছেন বলে পারিবারিকভাবে এমনিতেই মানসিক যন্ত্রণায় আছেন। সে সঙ্গে স্বাস্থ্যগত সমস্যাও যোগ করার কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না বালোতেল্লি, ‘আমি আপনার সঙ্গে শতভাগ একমত। আমাদের স্বাস্থ্যের চেয়ে অর্থ বড় নয়। আমাদের জেগে উঠতে হবে। “তোমরা তো নিরাপদেই আছ! খেললে কী হয়। দর্শকশূন্য মাঠে খেললে কিচ্ছু হবে না না। যেসব লোক গৃহবন্দী হয়ে আছে তাদের সপ্তাহান্তের একমাত্র আনন্দ কেড়ে নিয়ো না”—এমন ফালতু কথা বলতে এসো না।’

ইতালির অন্য অঞ্চল থেকে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকা মানুষের কষ্টটা নিজের অভিজ্ঞতাতেই টের পাচ্ছেন বালোতেল্লি। এমন অবস্থায় বাড়তি ঝুঁকি বাড়ানোর কোনো অর্থ দেখেন না এই ফুটবলার, ‘আমি ফুটবল আপনাদের চেয়েও বেশি ভালোবাসি। কিন্তু খেলা মানে হলো বাস, ট্রেন, উড়োজাহাজে চড়া, একটা হোটেলে থাকা। যাদের সঙ্গে আপনার সম্পর্ক নেই কোনো তাদের সংস্পর্শে আসা। আমি এমনিতেই করোনাভাইরাসের জন্য আমার বাচ্চাদের কাছে যেতে পারছি না। কারণ ওরা লম্বার্ডিতে থাকে না। এতে আমি এমনিতে দুঃখিত ও ক্ষুব্ধ। আমার মার সঙ্গে অন্তত প্রতিদিন দেখা হয়, একসঙ্গে খাই আমরা। কিন্তু আমি চাই না আমার কাছ থেকে তার কাছে জীবাণু ছড়াক। তার বয়স তো আমার মতো নয়। আমি যতই ফুটবল ভালোবাসি না কেন, আমি তার অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি নিতে পারি না। কেন নেব? অন্য কাউকে বিনোদন দেওয়ার জন্য? বা কারও অর্থ যেন না কমে? হাস্যকর কথা বলবেন না। ভুল ধারণা ঝেড়ে ফেলুন, যথেষ্ট হয়েছে। আমরা স্বাস্থ্য নিয়ে কোনো ঝুঁকি নিতে পারি না।’