আর্জেন্টাইন ঝলকে এশিয়ায় বর্ণিল অভিষেক বসুন্ধরার

আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার হার্নান বার্কোসকে ঠেকাতে হিমশিম খেয়েছে টিসি স্পোর্টসের রক্ষণভাগ। ছবি: তানভীর আহাম্মেদ
আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার হার্নান বার্কোসকে ঠেকাতে হিমশিম খেয়েছে টিসি স্পোর্টসের রক্ষণভাগ। ছবি: তানভীর আহাম্মেদ
>এএফসি কাপে মালদ্বীপের টিসি স্পোর্টসকে ৫-১ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে বসুন্ধরা কিংস। ৪ গোল করেছেন আর্জেন্টিনার স্ট্রাইকার হার্নান বার্কোস।

আন্তর্জাতিক ফুটবলে এর চেয়ে ভালো অভিষেক আর হতে পারত না বসুন্ধরা কিংসের। আজ এএফসি কাপে মালদ্বীপের আগেরবারের চ্যাম্পিয়ন ক্লাব টিসি স্পোর্টসকে ৫-১ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে বসুন্ধরা।

বসুন্ধরার হয়ে আজ নিজের জাত চিনিয়েছেন হার্নান বার্কোস। লিওনেল মেসির সঙ্গে আর্জেন্টাইন জাতীয় দলে খেলা এই স্ট্রাইকার আজ একাই করেছেন হ্যাটট্রিকসহ ৪ গোল। অভিষেকে এর চেয়ে দুর্দান্ত আর কী করতে পারতেন তিনি। বয়সটা ৩৫ হলেও এই অঞ্চলের ফুটবলে দাপট দেখানো জন্য যে সেটি যথেষ্ট—সেটিরই প্রমাণ দিলেন তিনি।

মাঠের ২২ জন খেলোয়াড়ের মধ্যে আলাদা করে চেনা গেছে তাঁকে। লম্বা শরীরের জন্যই নয়, ফুটবল শৈলীতেও তিনি এগিয়ে ছিলেন সবার চেয়ে। তাঁর কল্যাণেই প্রথমার্ধেই ২-১ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় বসুন্ধরা। ১৮ মিনিটে গোলের খাতা খুলে ৬৮ মিনিটেই হ্যাটট্রিক, হালি পূরণ করেছেন ৯০ মিনিটে। মাঝের গোলটি ২৬ মিনিটে। অন্য গোলটি করেছেন আরেক তারকা বিশ্বকাপ খেলা দানিয়েল কলিনদ্রেস।

বসুন্ধরার আগে এএফসি কাপে বাংলাদেশ থেকে খেলেছে আবাহনী লিমিটেড ও সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব। কিন্তু মাঠে নামার আগে বসুন্ধরা কোচ অস্কার ব্রুজোনের মতো সাহস কেউ দেখাতে পারেননি । দুই স্ট্রাইকার নিয়ে ৪-৪-২ ফরমেশনে দল সাজিয়েছিলেন অস্কার। বার্কোস আর কলিনদ্রেস জুটির সামনে টিসির রক্ষণভাগকে দেখে মনে হচ্ছিল রীতিমতো অসহায়।

বার্কোসের প্রথম দুটি গোল হেডে। ১৮ মিনিটে বাম প্রান্ত থেকে দানিয়েল কলিনদ্রেসের ক্রসে দূরের পোস্ট থেকে দুই ডিফেন্ডারের মাঝখান থেকে লাফিয়ে উঠে হেড করে দলকে এগিয়ে দেন ১-০ গোলে।। কিন্তু পর মুহূর্তেই পেনাল্টি পেয়ে যায় টিসি। আলী আশফাককে বক্সের মধ্যে ফাউল করেছিলেন ইয়াসিন খান। যদিও গোলরক্ষক আনিসুর রহমান শটটি ঠেকিয়েছিলেন কিন্তু ফিরতি শটে ইসমাঈল ঈসা গোল করেন।

২৬ মিনিটেই ২-১ গোলে আবার এগিয়ে যায় বসুন্ধরা। বিপলু আহমেদের ক্রসে গোলমুখ থেকে হেডে নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেন বার্কোস। ৫০ মিনিটে আবারও পেনাল্টি পায় টিসি। কিন্তু এ যাত্রায় আনিসুর রহমান দেখান তাঁর পেনাল্টি ঠেকানোর ক্ষমতা। প্রথম দফায় ঈসার শট ঠেকিয়ে দেন তিনি। কিন্তু গোললাইন থেকে এগিয়ে এসে ঠেকানোয় নতুন করে শট নেওয়ার সুযোগ পান ঈসা। সেটিও দারুণ দক্ষতায় ফিরিয়ে দেন উদীয়মান এই গোলরক্ষক।

৬৮ মিনিটে পেনাল্টি থেকেই হ্যাটট্রিক পূরণ করেছেন বার্কোস—৩-১। বার্কোসের দিনে কলিনদ্রেসই বা পিছিয়ে থাকবেন কেন! ৬৮ মিনিটে বিশ্বনাথের ক্রস থেকে হেডে স্কোরলাইন ৪-১ করেন এই কোস্টারিকান তারকা। কিন্তু তখনো বার্কোস ম্যাজিক কিছুটা বাকি। ৯০ মিনিটে ব্যক্তিগত চতুর্থ গোলটি করে ফেলেন তিনি।

এশীয় পর্যায়ে অভিষেকটা আলো ঝলমলেই হলো বসুন্ধরা কিংসের।