মেনে চলুন তামিম-মাহমুদউল্লাহ-মুশফিকের 'প্রেসক্রিপশন'

করোনা থেকে বাঁচতে সবার সতর্কতা দরকার, মনে করেন ক্রিকেট তারকারা। ছবি: প্রথম আলো
করোনা থেকে বাঁচতে সবার সতর্কতা দরকার, মনে করেন ক্রিকেট তারকারা। ছবি: প্রথম আলো

হুট করেই অভ্যাস বদলে ফেলা কঠিন। আজ বঙ্গবন্ধু প্রিমিয়ার লিগের উদ্বোধন হলো মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে। আবাহনী-পারটেক্সের খেলোয়াড়েরা করোনা-পরিস্থিতির স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললেন। কেউ কারও সঙ্গে হাত মেলালেন না। কেউ কেউ মুষ্টি মেলালেন, কেউ বা ব্যবহার করলেন কনুই। কিন্তু খেলার মধ্যে তো বটেই, খেলার পর দেখা গেল পুরোপুরি উল্টো চিত্র। একে অন্যকে জড়িয়ে ধরার ব্যাপারটি ঘটল। হাতও মেলালেন সবাই একে অন্যের সঙ্গে। অভ্যাস বদলানো যে কঠিন, সেটি খুব করেই বোঝা গেল।

করোনা-আতঙ্কের মধ্যেই শুরু হয়েছে ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগ। শুরুতেই খেলোয়াড়দের সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। করমর্দন, কোলাকুলি, বলে থুতু মাখিয়ে ঘষা—এসব করতে রীতিমতো বারণই করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু মাঠে কী আর এত কিছু মাথায় থাকে? উদ্‌যাপনটা আগের মতোই করছেন ক্রিকেটাররা। হাইফাইভ, করমর্দন—সবকিছুই।
মুশফিকুর রহিম বললেন নিজেদের অনভ্যাসের কথা, ‘মাঝে মাঝে আমরা সবাই ভুলে যাই (হাসি)। এখনো অভ্যস্ত হইনি সবাই। তবে এটি নিয়ে সবাই একটু শঙ্কিত। চেষ্টা করছি যতটুকু সচেতন ও সতর্ক থাকা যায়। হ্যান্ডশেক করতে নিষেধ করা হয়েছে আমাদের। পানি পানের বিরতিতে একটু দূরে দূরে থাকতে বলা হয়েছে সবাইকে। সবাই চেষ্টা করছে নির্দেশনা অনুসরণ করতে। পানির বোতলও প্রত্যেকে আলাদাভাবে পান করছে। আমরা চেষ্টা করছি সচেতন থেকে খেলার।’

এমনিতেই প্রিমিয়ার লিগে দর্শক সংখ্যা অনেক কম থাকে। আজও স্টেডিয়াম ছিল ফাঁকা। কিছু দর্শক এসেছেন। এমন মহামারির সময় মাঠে গুটিকয়েক দর্শক দেখে কিছুটা অবাকই হয়েছেন মুশফিক। কদিন আগে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড ম্যাচে গ্যালারিতে গিয়ে নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেটারদের বল কুড়ানোর কথা মনে করলেন মুশফিক, ‘অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড ম্যাচে দেখেছি মাঠে দর্শক কেউ নেই। বল গ্যালারিতে যাচ্ছে, লকি ফার্গুসন নিজে গিয়ে বল কুড়িয়ে আনছে। সেখানে বাংলাদেশের মানুষ তো ক্রিকেট পাগল। তারা যেন সচেতন থাকেন। গ্যালারিতে বসলেও যেন দূরত্ব বজায় রাখেন। মাস্ক ব্যবহার যেন করেন সবাই। একজনের হলে অন্যজন আক্রান্ত হতে পারে। আমি মনে করি, তাদের অবশ্যই সচেতন থাকা উচিত। তারা যদি আমাদের ভালোবাসতে পারে, আমাদেরও তাদের ভালোবাসা উচিত। আমার অনুরোধ থাকবে, সবাই যেন সচেতন থাকেন।’

প্রিমিয়ার লিগের অনুশীলনে এসে গাজি গ্রুপ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহও বাংলাদেশের মানুষদের করোনাভাইরাস থেকে সতর্ক থাকতে বলেছেন, ‘আমার মনে হয় কম বেশি সবাই এটা সম্পর্কে সচেতন। কারণ প্রতিষেধক তো এই মুহূর্তে সেভাবে নেই, যতটুকু আমরা নিজেদের সাবধানে রাখতে পারি, আমরা নিজেরা যতটুকু হাত ধোয়ার অভ্যাস, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে পারবেন ওই জিনিসগুলো আমরা যদি খেয়াল রাখতে পারি। এ ছাড়া পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এসব খেয়াল রাখলে সবার জন্যই ভালো। যেহেতু ক্রিকেট জগতে সবাই কম বেশি একজন আরেকজনকে চিনি, তো সবাইকে যদি এই বার্তাটা দিতে পারি, একজন আরেকজনের ব্যাপারে সতর্ক হই, সচেতন হই তাহলে মানে সবার জন্য ভালো।’

দেশবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রাইম ব্যাংকের অধিনায়ক তামিম ইকবালও, ‘সবার একটু সতর্ক থাকতে হবে। যদি দেখা যায় হাত ধরার দরকার নেই, তাহলে দরকার নেই। সবাই এটা বুঝতে পারছে যে এটা সবার ভালোর জন্যই করা হচ্ছে। একটু সতর্ক থাকতে হবে আমাদের। সতর্ক থাকলে সবার জন্য ভালো।’