মেসির সম্পত্তি এভাবে হাতছাড়া হবে?

মেসির পক্ষে একান্ত সম্পত্তি করে নেওয়া ট্রফিটা ধরে রাখা কঠিন হবে। ছবি: রয়টার্স
মেসির পক্ষে একান্ত সম্পত্তি করে নেওয়া ট্রফিটা ধরে রাখা কঠিন হবে। ছবি: রয়টার্স

ক্রীড়াবিশ্বকে হার মানিয়েছে করোনাভাইরাস। বিশ্বের নানা প্রান্তে ঘরোয়া ও মহাদেশীয় সব প্রতিযোগিতা স্থগিত হচ্ছে। ইউরোপে অধিকাংশ দেশেই থামিয়ে দেওয়া হয়েছে ফুটবল লিগ। জুনের মধ্যে লিগ চালু করা যাবে, এমন আশ্বাসও কেউ দিতে পারছেন না। এ অবস্থায় কোন লিগে কীভাবে বিজয়ী নির্ধারিত হবে, সে আলোচনা চলছে। চলছে মৌসুম বাতিল করে দেওয়ার আলোচনাও। এর মাঝেই উঠে এসেছে অন্য এক প্রসঙ্গও। এবারের ইউরোপিয়ান গোল্ডেন শু জিতবেন কে?

ইউরোপের সব লিগ মিলিয়ে সর্বোচ্চ গোলদাতার হাতে উঠে এই ট্রফি। গত এক দশকে এ ট্রফিটা ছুঁয়ে দেখতে পেরেছেন অবশ্য মাত্র তিনজন। ২০০৯-১০ মৌসুমে লিওনেল মেসি প্রথমবারের মতো ইউরোপের সব কটি লিগ মিলিয়ে সর্বোচ্চ গোল করেছিলেন। এরপর থেকে এ ট্রফি শুধু তিনজনের স্পর্শ পেয়েছে। মেসি, ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ও লুইস সুয়ারেজ। রোনালদো পেয়েছেন তিনবার। সুয়ারেজ দুবার। আর মেসি ছয়বার। হিসাব মিলছে না? ১০ বছরে ১১ বার বিজয়ী খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে? কারণ, ২০১৩–১৪ সালে সুয়ারেজ ও রোনালদো ভিন্ন দুই লিগে সমান গোল করে ট্রফিটা ভাগাভাগি করে নিয়েছিলেন।

রোনালদো পরের বছরই পুরস্কারটা একা দখল করে নিয়েছেন। পরের বছরই আবার সেটা বুঝে নিয়েছেন লুইস সুয়ারেজ। ব্যস, এরপর থেকেই শুধু মেসি-রাজত্ব। টানা তিন বছর ধরে ইউরোপের সোনালি জুতা মেসির দখলে। এবার সেটা বদলে যেতে পারে।

এক যুগ পরে ইতালিতে সোনালি জুতাটা ফিরিয়ে আনবেন ইমমোবিল। ছবি: রয়টার্স
এক যুগ পরে ইতালিতে সোনালি জুতাটা ফিরিয়ে আনবেন ইমমোবিল। ছবি: রয়টার্স

বিভিন্ন লিগের যে অবস্থা সেটা ধরেই যদি গোল্ডেন শু দিয়ে দেওয়া হয়, তবে এবার মহাতারকাদের কারও কপালেই জুটছে না এ ট্রফি। লিগের শুরুতে প্রায় দুই মাস চোটের কারণে খেলতে না পেরেও ১৯ গোল করেছেন মেসি। ওদিকে ২১ গোল করেছেন রোনালদো। আর চোটে পড়ার আগে সুয়ারেজের গোল ১১টি। কিন্তু ইউরোপে লিগ গোলে তাদের চেয়ে অনেক এগিয়ে আছেন একজন। লাৎসিওর সিরো ইমমোবিল এবার অবিশ্বাস্য ফর্মে আছেন। ৩০ বছর বয়সী ইতালিয়ান ২৬ ম্যাচেই করেছেন ২৭ গোল। এই গোলই ২০০৬–০৭ মৌসুমের পর ইতালিতে গোল্ডেন শু ফিরিয়ে নিতে সাহায্য করতে পারে। মজার ব্যাপার, এক যুগ আগে পুরো মৌসুম খেলে ইমমোবিলের চেয়ে এক গোল কম করেই ইউরোপের সেরা ফরোয়ার্ড বনেছিলেন ফ্রান্সেসকো টট্টি।

এ মৌসুমে ম্যাচের চেয়ে গোল বেশি আছে রবার্ট লেবানডফস্কিরও। ২৩ ম্যাচে ২৫ গোল বায়ার্ন মিউনিখ স্ট্রাইকারের। এই দুজনের পরেই আছেন রোনালদো ও আরবি লাইপজিগের টিমো ভেরনার। মজার ব্যাপার এই দুজনের (২১) চেয়ে ৪ গোল বেশি করেও তাঁদের সঙ্গেই থাকতে হচ্ছে আরলিং হরলান্ডকে। কারণ, ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগের খেলোয়াড়দের গোলের ক্ষেত্রে ২ দিয়ে গুণ করে পয়েন্ট হিসাব করা হয়। কিন্তু হরলান্ড ডর্টমুন্ডে আসার আগে ১৬ গোল করেছেন অস্ট্রেলিয়ান লিগে। মাঝারি সারির লিগ বলে তাঁর ওই গোলগুলোকে ১.৫ দিয়ে গুণ করা হয়েছে। ফলে ২৫ গোল করেও ভেরনার ও রোনালদোর মতোই ৪২ পয়েন্ট পেয়েছেন হরলান্ড।

এ কারণেই ইউরোপে এ মৌসুমে সর্বোচ্চ গোল করেও ইমমোবিলের কাছ থেকে ট্রফিটা কেড়ে নিতে পারবেন না এরিক সোরগা। এই ২০ বছর বয়সী স্ট্রাইকার গত মৌসুমে এফসি ফ্লোরা তালিনের হয়ে ৩১ গোল করেছেন। কিন্তু তাঁর দেশ এস্তোনিয়া ইউরোপের ফুটবল শক্তিতে একদম তলানির দিকে থাকায় তাঁর গোলগুলোর ক্ষেত্রে মাত্র ১ দিয়েই গুণ হচ্ছে। তাই ৩১ পয়েন্ট পেয়ে শীর্ষ দশেও নেই সোরগা।