ফুটবলবিহীন দিনগুলো ভয়ংকর দীর্ঘ

ফুটবল না দেখতে পেরে অস্থির হয়ে পড়েছেন ক্যাপেলো। ফাইল ছবি
ফুটবল না দেখতে পেরে অস্থির হয়ে পড়েছেন ক্যাপেলো। ফাইল ছবি

অদ্ভুত এক সময় কাটাচ্ছেন সবাই। ইউরোপজুড়ে শুধু বেলারুশ বাদে ফুটবলের দেখা মিলছে না। করোনাভাইরাসের কারণে সব লিগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মানুষ কাটাচ্ছেন ফুটবলবিহীন সবচেয়ে দীর্ঘ সময়। ফুটবলের জন্য সবাই এতটাই বুভুক্ষু হয়ে উঠেছেন যে গতকাল লা লিগার দলগুলো যখন অনলাইনে ফিফা খেলছিল, সেটা ফেসবুকের লাইভে তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করেছেন সবাই। সমর্থকদেরই যদি এ দশা হয়, তবে ফুটবলার বা কোচদের অবস্থা তাহলে কি!

কাগজে-কলমে ফ্যাবিও ক্যাপেলো এখন আর এঁদের কাতারে পড়েন না। ২০১৮ সালে চীনের ক্লাব জিয়াংসু সুনিং থেকে বরখাস্ত হওয়ার পর অবসর নিয়েছেন ৭৩ বছর বয়সী এই কোচ। তাই বলে ৩৬ বছরের অভ্যাস কি বদলায়? বিশ্বের অন্যান্য কোচরা তবু বিভিন্নভাবে ব্যস্ত থাকার সুযোগ পাচ্ছেন। অনাকাঙ্ক্ষিত বিরতির পর খেলোয়াড়দের ফিট করবেন কীভাবে, দলের নতুন কৌশল কী হবে, কিংবা প্রতি দুই দিনে খেলতে হলে কী করা দরকার—এ নিয়ে ভাবছেন। ক্যাপেলোর তো সেই সুযোগও নেই।

কিংবদন্তি কোচ কোনো রাখঢাক রাখেননি নিজের হতাশা প্রকাশে, ‘আমি জীবনে এমন কিছু দেখিনি। ফুটবল ছাড়া দিনগুলো অনেক, অনেক লম্বা।’

ইতালিয়ান এই কোচ রিয়াল মাদ্রিদ, এসি মিলান, রোমা ও জুভেন্টাসের হয়ে লিগ জেতার কীর্তি গড়েছেন। মিলানের হয়ে জিতেছেন চ্যাম্পিয়নস লিগও। ইতালিতে নয়, আপাতত সুইজারল্যান্ডে আছেন বলে করোনাভাইরাসের ভয়াবহতা এখনো সামনে থেকে দেখতে হচ্ছে না তাঁকে। কিন্তু বিপদটা বোঝেন ভালোভাবেই, ‘আমি লুগানোতে থাকি (সুইস শহর)। আমি ভালো আছি, শান্ত আছি। আমার স্ত্রীও ভালো আছে। কিন্তু কোনো খেলা দেখতে পাচ্ছি না।’

কোচ হিসেবে ইতালির বড় তিন ক্লাবেই দায়িত্ব পালন করা ক্যাপেলো খেলোয়াড় হিসেবেও তিন ক্লাবেরই জার্সি গায়ে চাপিয়েছেন। ফলে ফুটবল নিয়েই পার করেছেন জীবন। হঠাৎ করে সবচেয়ে প্রিয় বস্তুটি জীবন থেকে হারিয়ে ফেলে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন, ‘আমরা তো এতে অভ্যস্ত নই। দিনটা লম্বা, অনেক লম্বা। তবু আমি ভাগ্যকে ধন্যবাদ দিই। কারণ, আমার পরিবারের কেউ অসুস্থ হয়নি। সারা বিশ্বেই ব্যাপারটা ভয়ংকর হয়ে উঠছে। লম্বার্ডি, বার্গেমো এবং ব্রেসিয়াতে খুব ভয়ংকর সময় যাচ্ছে।’

ফুটবল দেখার জন্য অস্থির হয়ে পড়লেও ক্যাপেলো বাস্তবতা বোঝেন আর এ কারণেই ইউরো এক বছর পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তটিকে সঠিক মনে হয়েছে তাঁর, ‘এটা খুব ভালো সিদ্ধান্ত। আমরা জানি না কখন এটা শেষ হবে। আমাদের তাই সব পরিকল্পনা আগামী বছরের জন্য করা উচিত। সবকিছুই।’

শুধু ইউরো নয়, ঘরোয়া লিগগুলোও এ মৌসুমে চালু হওয়ার সম্ভাবনা কম দেখছেন ক্যাপেলো, ‘এটা এখনই বলা সম্ভব না হবে কি না। দেখা যাক। স্কোয়াড ক্ষতিগ্রস্ত হলে নিশ্চয় আপনি তাদের খেলাতে পারেন না। ভ্যালেন্সিয়া, এসপানিওল, আলাভেসের দিকের দেখুন,এটা কঠিন। আমি পঞ্চাশ দশকের শেষ দিকে খেলা শুরু করেছি, যুদ্ধের একটু পর। আমিও এমন কিছু দেখিনি।’