তারকারাও বলছেন এখন সময় ঘরে থাকার

মুশফিকুর রহিম।
মুশফিকুর রহিম।

করোনা মহামারি ছড়িয়ে পড়া রোধ করতে কী করতে হবে, জানেন প্রায় সবাই। তবু সারা বিশ্বের বড় খেলোয়াড়েরা সচেতনতা আরও বাড়াতে এগিয়ে এসেছেন যাঁর যাঁর জায়গা থেকে। সংবাদমাধ্যম থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—যে যেখানে পারছেন ছড়িয়ে দিচ্ছেন সতর্কবার্তা। বসে নেই বাংলাদেশের খেলোয়াড়েরাও। মহামারির এই সময়ে নিজেরা কী করছেন, বাকি সবার কী করতে হবে, সেই বার্তা তাঁদের কণ্ঠে—

নিয়াজ মোরশেদ।
নিয়াজ মোরশেদ।


লকডাউনের বিকল্প নেই
আমি হোম কোয়ারেন্টিনে আছি। ভবিষ্যতে কী হবে, বুঝতে পারছি না। তাই খুব চিন্তায় আছি। এ অবস্থার মধ্যেও দেশে ভোট হচ্ছে! অন্যান্য দেশের মতো কেন আমাদের দেশ লকডাউন করা হচ্ছে না, বুঝতে পারছি না। এখনো আদালত, গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিসহ অন্যান্য অফিস কার্যক্রম চলছে। এখন সারা দেশে লকডাউনের বিকল্প কিছু নেই। অন্য দেশগুলো থেকে আমাদের শিক্ষা নেওয়া উচিত। প্রতিটি কমিউনিটিতে টেস্ট করা উচিত করোনাভাইরাসের।
নিয়াজ মোরশেদ, দাবাড়ু

মুমিনুল হক।
মুমিনুল হক।


বাসায় থাকলে লাভটা নিজেরই
আমি ঘর থেকে বের হচ্ছি না। সব ঠিক না হওয়া পর্যন্ত বের হব না। ক্রিকেটার হিসেবে কাজটা কঠিন। কিন্তু এখন পরিস্থিতির চাহিদাই সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা। তাই সবাইকে বাসায় থাকতে বলছি। কয়েক সপ্তাহেরই তো ব্যাপার। বাসায় থাকলে আপনার নিজেরই লাভ। বাসায় থেকে কিছুক্ষণ পর পর হাত পরিষ্কার করুন। অযথা মুখে হাত দেবেন না। যাঁরা আক্রান্ত আছেন, তাঁরা যেন আলাদা থাকেন।
মুমিনুল হক, বাংলাদেশ টেস্ট দলের অধিনায়ক

জামাল ভূঁইয়া।
জামাল ভূঁইয়া।


বাইরে যাওয়া বন্ধ করতে হবে
খুব জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে যাওয়া বন্ধ করা দিতে হবে আমাদের। আমরা সবাই ভয়াবহ এক সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। এখন সবার বাসায় থাকাটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। নিজেকে সতর্ক থাকতে হবে, পরিবারের অন্য সদস্যদেরও সতর্ক থাকার পরামর্শ দিতে হবে। খুব প্রয়োজনে কখনো বাইরে গেলে বাসায় ঢোকার আগে বা বাসায় ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে অবশ্যই সাবান দিয়ে ভালোভাবে হাত ধুয়ে নিতে হবে।
জামাল ভূঁইয়া, বাংলাদেশ ফুটবল দলের অধিনায়ক

আকবর আলী।
আকবর আলী।


নিজেরাই পারি নিজেদের সাহায্য করতে
আমরা সবাই জানি, এই খারাপ সময়ে কী করলে সুস্থ থাকা যাবে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে সব তথ্যই আমাদের হাতের কাছে। খেলা বন্ধ থাকায় আমি বেশির ভাগ সময় খবর দেখে কাটাচ্ছি। আমি ও আমার পরিবার সচেতনতা অবলম্বন করছি। আপনারাও সচেতন হন। আমরা নিজেরাই পারি নিজেদের সাহায্য করতে।
আকবর আলী, অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক

রোমান সানা।
রোমান সানা।


নিজেরা বাঁচব, অন্যদের বাঁচাব
আমরা যারা সচেতন নই, তাঁরা একটু সচেতন হলেই নিজেরা করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে পারব এবং অন্যদের বাঁচাতে পারব। কিছু করণীয় আছে যেগুলো সবাইকে কঠোরভাবে মানতে হবে। প্রথমত, বাইরে না যাওয়া এবং খুব প্রয়োজনে যেতে হলে এসেই হাত ধোয়া। বাইরে গেলে মুখে মাস্ক ও হাতে গ্লাভস ব্যবহার করতে হবে। বিশেষ কোনো প্রয়োজন না হলে পাবলিক যানবাহন ব্যবহার করব না। আমি কিন্তু কোয়ারেন্টিনে থেকেই অলিম্পিকের প্রস্তুতি নিচ্ছি।
রোমান সানা, তিরন্দাজ

সিদ্দিকুর রহমান।
সিদ্দিকুর রহমান।


যার যার বাসায় থাকুন
সচেতনতাই পারে আমাদের রক্ষা করতে। আমি ও আমার পরিবার গত তিন দিন যাবৎ বাসায় অবস্থান করছি। আমি অনুরোধ করছি, আপনারাও যার যার বাসায় থাকুন। প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাসা থেকে বের হবেন না। ঘন ঘন সাবান দিয়ে হাত পরিষ্কার করতে হবে। অপরিষ্কার হাতে নাক, মুখ ও চোখ স্পর্শ করা ঠিক হবে না। হাঁচি-কাশি হলে অবশ্যই টিস্যু ব্যবহার করতে হবে। জনসমাগম পরিহার করা সবচেয়ে জরুরি। সবাই সুস্থ ও নিরাপদে থাকবেন।
সিদ্দিকুর রহমান, গলফার

রুমানা আহমেদ।
রুমানা আহমেদ।


কদিন বাইরে না গেলে মারা যাব না
সবার কাছে একটাই অনুরোধ, সবাই সচেতন থাকুন। কিছুক্ষণ পর পর হাত ধোয়ার ওপর থাকতে হবে। বাইরে না যাওয়াই ভালো। খেলোয়াড়দের জন্য কাজটা কঠিন, কিন্তু কঠিন কাজটাই আমরা করছি। সবার বোঝা উচিত, আমি নিজের জন্য, আমার পরিবারের জন্য, দেশের সব মানুষের জন্য এটা করছি। কদিন ঘরের বাইরে না গেলে তো আমরা মারা যাব না।
রুমানা আহমেদ, বাংলাদেশ নারী ওয়ানডে দলের অধিনায়ক

মাবিয়া আক্তার।
মাবিয়া আক্তার।


দেশের বাইরে থেকে এলে দূরত্ব রাখুন
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের কিছু নির্দেশনা দিয়েছে, আমরা যদি সেগুলো মেনে চলি, যদি আমরা পরস্পর থেকে একটু দূরত্ব বজায় রেখে চলি, কারণ ছাড়া অকারণে বাড়ির বাইরে না যাই, একটু নিজেকে সচেতন রাখি, তাহলে করোনাভাইরাস থেকে মুক্ত থাকতে পারি। যাঁরা দেশের বাইরে থেকে আসছেন, তাঁদের থেকে একটু দূরত্ব রাখতে হবে। তাঁদের বোঝাতে হবে, যেন তাঁরাও নিয়মনীতিগুলো মেনে চলেন।
মাবিয়া আক্তার, ভারোত্তোলক

আবদুল্লাহ হেল বাকী।
আবদুল্লাহ হেল বাকী।


জনসমাগম এড়িয়ে চলুন
চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুসারে সবাইকে সাবধান ও সতর্ক থাকতে হবে। যাতে এটা আরও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে না পড়ে। পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো আমাদের জনসমাগমে যাওয়া একদমই ঠিক হবে না। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। একমাত্র সামাজিক সচেতনতাই পারে দেশকে এই করোনাভাইরাসের বিপদ থেকে রক্ষা করতে।
আবদুল্লাহ হেল বাকী, শুটার

মাহফুজা খাতুন।
মাহফুজা খাতুন।


সুরক্ষার দায়িত্ব নিজেকেই নিতে হবে
এটা এমনভাবে ছড়ায় অনেক সময় বোঝাই যায় না। অজান্তেই অনেকে আক্রান্ত হয়ে যেতে পারেন। সুতরাং নিজ উদ্যোগে সতর্ক থাকা গুরুত্বপূর্ণ। নিজে নিরাপদে থাকার ব্যবস্থা নিজেকেই করতে হবে। কোনো কাজে বের হলে নিজেকে সুরক্ষার দায়িত্ব নিজেকেই নিতে হবে। সরকার যে নির্দেশনা দিয়েছে, সেগুলো মেনে চলতে হবে। নির্দেশনা পালন করতে পারলেই আশা করি করোনাভাইরাস থেকে দূরে থাকা সম্ভব।
মাহফুজা খাতুন, সাঁতারু