প্রবাসী ভাইয়েরা গৃহবন্দী থাকুন, মাশরাফির অনুরোধ

মাশরাফির আহ্বান, করোনা দুর্যোগে ঘরে থাকুন। প্রথম আলো ফাইল ছবি
মাশরাফির আহ্বান, করোনা দুর্যোগে ঘরে থাকুন। প্রথম আলো ফাইল ছবি

করোনোভাইরাসের সংক্রমণে জ্যামিতিক হারে ছড়িয়ে পড়ছে কোভিড-১৯ রোগ। ভয়াল এই পরিস্থিতিতে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে ফেসবুকে নিজের অফিশিয়াল পেজে প্রায় পাঁচ মিনিটের এক ভিডিওবার্তা দিয়েছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল অধিনায়কের কথাগুলোর প্রায় পুরোটাই এখানে তুলে ধরা হলো—

‘আমরা সবাই এখন বিপর্যস্ত। সবাই করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত। আতঙ্কিত না হওয়ারও কারণ নেই। পৃথিবীর বড় বড় দেশগুলো এখন বিপর্যস্ত। কোনোভাবেই সামলাতে পারছে না। এখন আমাদের কী করণীয়। দেখছি বড় বড় দেশ কীভাবে ভেঙে পড়ছে। আমাদের দেশ এমনিতেই ছোট। মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি। আল্লাহ না করুক, আমাদের যদি এমন সংকট আসে, কী হতে পারে আমরা বুঝতে পারছি। এই মুহূর্তে করণীয় অনেক কিছু আছে। যেগুলো আমি মনে করি সবারই করা উচিত...।’

‘প্রবাসী ভাই-বোনেরা যাঁরা দেশে আসছেন বা দেশে থাকেন বেড়াতে গিয়েছিলেন, আসছেন—আপনাদের অনেক কিছু করার আছে। প্রথম হচ্ছে নিয়মকানুন অবশ্যই মেনে চলা। কোয়ারেন্টিন শব্দটা না ব্যবহার করে আমি বলব গৃহবন্দী থাকা। সেটা পরিবার নিয়ে নয়, আলাদা ১৪ দিন থাকা। ১৪ দিনে আপনি যদি অসুস্থ না হন পরিবারকে নিয়ে ঘরে থেকে—যতক্ষণ চিকিৎসক কিংবা সরকারের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা ঘোষণা না করছেন যে আমরা নিরাপদ, ততক্ষণ পর্যন্ত ঘরে থাকা...।’

‘সাবান দিয়ে নিয়মিত হাত ধোঁয়া, ঘর, চারপাশ পরিষ্কার পরিচ্ছিন্ন রাখার নিয়ম আমাদের মেনে চলতে হবে। এর চেয়ে কঠিন অবস্থা তৈরি হলে তখন আর কোনো সুযোগ আমরা পাব না। এখন থেকে উচিত এটি শক্ত হাতে প্রতিরোধ করা। এটা রাষ্ট্রীয় সংকট হয়ে যেতে পারে। আমরা কেউ জানি না আমাদের আশপাশে কার আছে (এই ভাইরাস)। আমরা বের হচ্ছি কার হাত ধরছি, কী করছি—কেউ জানি না। কে এই ভাইরাস বহন করছে কেউ জানি না। ভাইরাসটা বোঝার জন্য ১৪ দিন সময় নেবে। এটা তাই গভীরভাবে চিন্তা করার ব্যাপার। যেটাকে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি না সেটা যদি আকস্মিকভাবে আপনাকে, আপনার পরিবার কিংবা সামাজিকভাবে আঘাত করে, সেটা কিন্তু সামাল দেওয়া খুব কঠিন হবে। যেটা বলছি ইতালি, স্পেন, ইংল্যান্ড, চীনের মতো বড় বড় দেশ হিমশিম খেয়েছে, খাচ্ছে। আমরা সেখানে কতটুকু পারব সেটা ভাবার সময় এসেছে। আমাদের দেশটা অনেক ছোট, মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি। এখানে ভাবার অনেক কিছু আছে...।’

‘আপনার ঘরের অধিনায়ক এখন আপনি নিজে। আপনি যদি আপনার ঘরের অধিনায়কত্ব যদি ঠিকমতো করতে পারেন আমি নিশ্চিত ইনশা আল্লাহ কিছুটা হলেও এটি কমাতে পারব। না হলে দুর্যোগ হওয়ার আশঙ্কা বেশি। আপনার কাছে বিনীত অনুরোধ, প্লিজ, প্লিজ, প্লিজ ঘরে থাকুন। নিজে সুরক্ষিত থাকুন। আপনার পরিবারকে সুরক্ষিত রাখুন। সমাজকে সুরক্ষিত রাখুন। এটা আমার, আপনাদের সময়ের দায়িত্ব। অনেক সময় বলি, কাজের ব্যস্ততায় পরিবারকে সময় দিতে পারি না। আপনি এখন পরিবারকে সময় দেন। এখন আপনার কোনো কাজের ব্যস্ততা নেই। যতটুকু না করলেই নয়, দূরত্ব বজায় রেখে চলাফেরা করুন। তবুও বলব ঘরে থাকুন, আপনার সমাজকে আপনি রক্ষা করুন।’