'করোনাকে কেউ পাত্তা দিচ্ছে না'

বেলারুশের এই ক্লাব সেদিন জনমানবপূর্ণ স্টেডিয়ামে ম্যাচ খেলেছে। ছবি : এএফপি
বেলারুশের এই ক্লাব সেদিন জনমানবপূর্ণ স্টেডিয়ামে ম্যাচ খেলেছে। ছবি : এএফপি

সারা বিশ্ব করোনাভাইরাসের জন্য সব স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু বেলারুশ ভিন্ন। আলেক্সান্দর লুকাশেনকো শাসিত এই দেশে এখনো সবকিছু স্বাভাবিক চলছে। ৫১ জন করোনায় আক্রান্ত অবস্থাতেও ফুটবল লিগ শুরু করেছে দেশটি। ফলাফল, দুই দিনের মধ্যে দেশটিতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৩০ বেড়েছে। তবু দেশটি করোনা নিয়ে সচেতনতা বাড়ছে না।

আর্সেনাল ও বার্সেলোনার জার্সি গায়ে চাপানো তারকা আলেক্সান্দর হ্লেব এর পেছনে দেশটির শাসকদের অবদান দেখছেন। বেলারুশের এই সাবেক ফুটবলার দ্য সানকে বলেছেন, ‘আমাদের দেশকে ব্যাখ্যা করা কঠিন। সব লিগ বন্ধ হয়ে গেছে কিন্তু আমাদের এখানে একে সমস্যা বলেই মনে করছে না। কেন? আমি জানি না।’

ইউরোপে একমাত্র তুরস্কের লিগ চালু ছিল। তারাও গত বৃহস্পতিবার লিগ থামিয়ে দিয়েছে। ওদিকে বেলারুশ সেদিন নতুন মৌসুম শুরু করেছে আনুষ্ঠানিকভাবে। স্টেডিয়াম ভর্তি লোকের সামনে ম্যাচ খেলেছে বাতে বরিসোভ।

এ অবস্থায় কটাক্ষ করা ছাড়া হ্লেবের সামনে আর কোনো পথ খোলা নেই, ‘সারা বিশ্ব এখন বেলারুশের লিগ দেখছে। সবার উচিত টিভি খুলে আমাদের ম্যাচ দেখা। যখন এনএহএল বন্ধ হয়ে গেল, অনেক আইস হকি খেলোয়াড় রাশিয়াতে গিয়েছে। এভাবে লিওনেল মেসি আর ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোও আমাদের লিগে খেলতে পারে। কে জানে? ইউরোপে একমাত্র এখানেই ফুটবল হচ্ছে। তাহলে বেলারুশের লোকজন অন্তত খুশি থাকবে।’

তাঁর দেশে ফুটবল যে বন্ধ করা জরুরি সেটা বোঝানোর জন্য ইউরোপের ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রসঙ্গ টেনেছেন হ্লেব, ‘করোনাভাইরাস চ্যাম্পিয়নস লিগ ও ইউরোপা লিগ বন্ধ করে দিয়েছে। এটা ভালো, কারণ আপনাকে চেষ্টা করতে হবে। উয়েফা সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু বেলারুশে কেউ পাত্তাই দিচ্ছে না। এটা অবিশ্বাস্য। হয়তো এক বা দুই সপ্তাহ পরে আমরা থামব। হয়তো প্রেসিডেন্ট আরও দেখতে চাইছে এই ভাইরাস কী করতে পারে।’

করোনাকে হেলাফেলা করার ফল ভালো হবে না বলেই মনে করেন হ্লেব। কিন্তু প্রায় স্বৈরাচার শাসনের মধ্য দিয়ে যাওয়া এক দেশে থেকে কীই-বা করতে পারেন একজন ফুটবলার, ‘সবাই জানে ইতালি ও স্পেনে কী হয়েছে। ব্যাপারটা মোটেও সুখকর কিছু নয়। কিন্তু আমাদের দেশে কর্তৃপক্ষ মনে করছে খবরে যা বলছে অত গুরুতর কিছু নয়।’

করোনা আক্রান্ত পৃথিবীতে শুধু ফুটবল নয়, জীবনের প্রতিটি কার্যক্রমেই যে বাধা নিষেধ আনা দরকার সেটা জানিয়ে দিয়েছেন হ্লেব, ‘অনেক তরুণ ও শিক্ষার্থী ভাবছে ঘরে বাসায় বসে থাকব? যখন বাইরে যাচ্ছি সবাই তো রাস্তায় আছেই। তারা আসলে কেউ পাত্তা দিচ্ছে না। আমি নিজের পরিবার ও স্বাস্থ্যের গুরুত্ব বুঝি। আমি যত কম সম্ভব মানুষের সংস্পর্শে যাচ্ছি।’