বাংলাদেশের 'খলনায়ক' এখন করোনার লড়াইয়ে নায়ক

আলিম দারের মহানুভবতা মুগ্ধ করবে সবাইকে। ফাইল ছবি
আলিম দারের মহানুভবতা মুগ্ধ করবে সবাইকে। ফাইল ছবি
>বিতর্কিত একটা সিদ্ধান্ত দিয়েই বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমী মানুষের কাছে খলনায়ক বনে গিয়েছিলেন আলিম দার। করোনার বিপক্ষে লড়াইয়ে লাহোরে নিজের রেস্টুরেন্টে সেই দারই বিনা মূল্যে খাওয়াবেন দুস্থদের।

একটা নো বল! 

ম্যাচের ৪০তম ওভারে রুবেল হোসেন যে বলটা করেছিলেন রোহিত শর্মাকে, সেটি নো বল ছিল কি না, এ নিয়ে বিতর্ক সম্ভবত কখনো শেষ হবে না। রিপ্লেতে দেখাচ্ছিল, রোহিতের যখন ব্যাটে-বলে হচ্ছে, তখনো তাঁর কোমর উচ্চতায়ই ছিল বল। আস্তে আস্তে নিচে নামছিল। হয়তো স্টাম্পেই লাগত। কিন্তু আম্পায়ার আলিম দার নো বল ডেকে দেন। ক্যাচ দিয়েও বেঁচে যান রোহিত।

সে সময়ে ৯০ রানে ব্যাট করা রোহিত শেষ পর্যন্ত করেন ১৩৭ রান। ভারত করে ৩০২। ৪০তম ওভার থেকে শুরু করে ৪৭তম ওভারে রোহিত আউট হওয়ার আগে ৮ ওভারে ভারত তোলে ৭৯ রান। যদিও শেষ পর্যন্ত ম্যাচটা ১০৯ রানে হেরেছে বাংলাদেশ, তবে রোহিতের ওই আউট হওয়া-না হওয়া ম্যাচের মোমেন্টামই বদলে দিয়েছে!

কোন ম্যাচের কথা হচ্ছে, বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমী মাত্রই বুঝে ফেলার কথা। ২০১৫ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল। প্রথমবারের মতো কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার উদ্যম নিয়ে খেলতে থাকা বাংলাদেশের জন্য সে ম্যাচটা দুঃস্বপ্ন হয়ে থাকার পেছনে আলিম দারের ওই এক সিদ্ধান্তের ভূমিকাই দেখেন বাংলাদেশের অনেক মানুষ। যে কারণে সেদিনের পর থেকেই পাকিস্তানি এই আম্পায়ার তাঁদের চোখে খলনায়ক।

কিন্তু বিশ্বকে থমকে দেওয়া করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এবার সেই আলিম দারই করেছেন নায়ক বনে যাওয়ার মতো এক কাজ। লাহোরে হতদরিদ্র মানুষকে নিজের রেস্টুরেন্ট ‘দারস ডিলাইটো’তে বিনা মূল্যে খাওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছেন। বিশেষ করে করোনার কারণে চারদিকে লকডাউনে যাঁরা জীবিকা হারাচ্ছেন, তাঁদের।

এ পর্যন্ত রেকর্ড ৩৮৬টি আন্তর্জাতিক ম্যাচে আম্পায়ারিং করা আলিম দার আজ এক ভিডিওবার্তায় দিয়েছেন সেই খবর, ‘এই লকডাউনের সময়ে অনেক মানুষ চাকরি হারিয়েছেন। লাহোরের পিয়া রোডে দার’স ডিলাইটো নামে আমার একটা রেস্টুরেন্ট আছে। যাঁরা এই সময়ে চাকরি হারাচ্ছেন তাঁরা এই রেস্টুরেন্টে আসতে পারেন, এবং বিনা মূল্যে খেতে পারবেন।’

করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সবাইকে নিরাপদ থাকারও আহ্বান জানিয়েছেন দার, ‘করোনাভাইরাস সারা বিশ্বেই ছড়িয়ে গেছে। এটার প্রভাব পাকিস্তানেও দেখা যাচ্ছে। আপনাদের নিরাপত্তার জন্য পাকিস্তানের রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার কিছু নিয়মকানুন বেঁধে দিয়েছেন। কিন্তু আমরা সহায়তা না করলে সরকারের পক্ষে এটাকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না। সরকারের নির্দেশনা মেনে চলার জন্য আমি সবাইকে অনুরোধ করছি।’