মায়ার টানে ছুটছে সবাই

বার্সেলোনার জার্সিতে দেখা যাবে তাঁকে। ছবি: টুইটার
বার্সেলোনার জার্সিতে দেখা যাবে তাঁকে। ছবি: টুইটার

ভবিষ্যৎ তারকার খোঁজে সবাই এখন ছুটছেন ব্রাজিলে। এক রিয়াল মাদ্রিদই টানা তিন বছরে তিনজনকে টেনে নিয়ে গেছে বয়স আঠারো হওয়ার আগেই। বার্সেলোনাও সে পথ ধরেছে এবার। সাও পাওলো থেকে গুস্তাভো মায়াকে কেনার কাজটা অর্ধেক সেরে রেখেছে তারা। যদিও কাজটা তাদের জন্য কঠিন করে তুলেছিল অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ ও লিভারপুল।

পরবর্তী নেইমারকে পাওয়ার জন্য রিয়াল যে হন্যে হয়ে উঠেছে সেটা আর লুকানোর চেষ্টা করছে না তারা। এর মাঝেই ভিনিসিয়ুস জুনিয়র ও রদ্রিগো গোয়েসের অভিষেক হয়ে গেছে রিয়ালের জার্সিতে। রিয়ালের দ্বিতীয় দলের হয়ে ম্যাচ খেলা হয়ে গেছেন রেইনিয়ের জেসুসের। শুধু রিয়াল নয়, ইউরোপ জুড়েই ব্রাজিলিয়ান তরুণদের প্রতি আগ্রহ। আর্সেনালে এরই মাঝে থিয়েরি অরির কথা মনে করিয়ে দিচ্ছেন মার্টিনেল্লি। আয়াক্সে গত মৌসুমে সবাইকে চমকে দিয়েছেন নেরেসে। এভারটনের রিচার্লিসন, কিংবা ম্যানচেস্টার সিটির গ্যাব্রিয়েল জেসুস তো এরই মাঝে বড় তারকা হয়ে উঠেছেন।

ব্রাজিল তাই বড় দলগুলোর জন্য খনি হয়ে উঠেছে। ভবিষ্যৎ তারকাদের আগেই খুঁজে নেওয়ার দৌড়ে বার্সেলোনা পিছিয়ে থাকতে চায়নি। তাই এখনো পেশাদার ফুটবলে অভিষেকের আগেই তাঁকে কেনার জন্য লড়াই হয়েছে বার্সেলোনা, অ্যাটলেটিকো ও লিভারপুলের মাঝে। যেমনটা হয়েছিল ভিনিসিয়ুস ও রদ্রিগোর জন্য।

বয়স ভিত্তিক পর্যায়ে তাঁর খেলাই যথেষ্ট হয়েছে বার্সেলোনার মায়াবদ্ধ হতে। সাধারণত ইউরোপের বাইরে বার্সেলোনার হয়ে দূতিয়ালি করেন কেউ। কিন্তু মায়ার ক্ষেত্রে বার্সেলোনা কোনো ঝুঁকি নেয়নি। মায়ার এজেন্ট নিলসন মৌরা মার্কাকে জানিয়েছেন, ‘ওকে বার্সেলোনার স্কাউট দেখেছে। আমরা আলোচনা শুরু করেছি এবং ওরা ওকে দলে নিতে পারে। আন্দ্রে কারি (ব্রাজিলে বার্সেলোনার স্কাউট) এ আলোচনায় ছিল না। সরাসরি বার্সেলোনার সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।’

গত ২০ মার্চ সাও পাওলো জানিয়েছে বার্সেলোনা মায়াকে কেনার প্রথম সুযোগে ১ মিলিয়ন ইউরোতে কিনে নিয়েছে। ফলে আগামী ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে বার্সেলোনা যদি চায়, মায়াকে দলে টানতে পারবে। তবে সে ক্ষেত্রে আরও ৩.৫ মিলিয়ন ইউরো দিতে হবে। আর যদি বার্সেলোনা শেষ পর্যন্ত তাঁকে নাও নেয়, ১ মিলিয়ন ইউরো ফেরত পাবে না। রিয়াল যেখানে তিন ব্রাজিলিয়ান প্রতিভাকে নিতে ১২০ মিলিয়ন ইউরো ব্যয় করেছে, সে তুলনায় বার্সার অঙ্কটা বেশ কমই।

বার্সেলোনা অবশ্য এত দ্রুত মায়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে চায়নি। কিন্তু অন্য ক্লাবগুলোর আগ্রহ বিষয়টি ত্বরান্বিত করেছে, ‘ওরা কোপা সাও পাওলোতে ওকে দেখতে এসেছিল। সে তিন গোল করার পর আমরা আলোচনা শুরু করি। ওরা প্রথমে চুক্তি করতে চায়নি, কিন্তু অ্যাটলেটিকো ও লিভারপুলের মতো ক্লাব আগ্রহ দেখানোয় ওরা দ্রুত চুক্তি করতে বাধ্য হয়েছে।’

ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার, ডান পা তাঁর মূল অস্ত্র, আবার খেলবেন বার্সেলোনায়। স্বভাবতই মায়ার সঙ্গে রিয়ালের দুই উইঙ্গারের তুলনা এসে যাচ্ছে। মৌরা অবশ্য নিজের ক্লায়েন্টকে ভিন্ন ধরনের খেলোয়াড় বলে দাবি জানালেন, ‘সে ভিনিসিয়ুস বা রদ্রিগোর মতো না, ওর স্টাইল অন্য রকম। অন্য ক্লাব থেকে আরও লোভনীয় প্রস্তাব ছিল কিন্তু মায়া সব সময় বার্সেলোনাতেই খেলতে চেয়েছে। সে বেশ কয়েক বছর আগে এক সাক্ষাৎকারেই বলেছে এটা। আমাদেরও তাই মনে হয়েছে, কারণ ওর খেলা বার্সেলোনার স্টাইলের সঙ্গে যায়।’